হিল ভয়েস, ১৯ নভেম্বর ২০২১, রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলার বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়নের বাঙ্গালহালিয়া যৌথ খামার এলাকা থেকে দুইজন জুম্ম গ্রামবাসীকে আটক করে পুলিশের নিকট সোপর্দ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত বুধবার (১৭ নভেম্বর) রাত ২:০০ ঘটিকার সময় বাঙ্গালহালীয়া সেনা ক্যাম্পের ওয়ারেন্ট অফিসার হাফিজ ফয়সালের নেতৃত্বে একদল সেনা কর্তৃক উক্ত দুই জুম্মকে তাদের বাড়ি থেকে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। পরে অস্ত্র গুঁজে দিয়ে ও মিথ্যা মামলায় জড়িত করে সেনাবাহিনী চন্দ্রঘোনা থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করে।
আটককৃত জুম্ম গ্রামবাসীরা হলেন- মংক্য মারমা (মংচিউ) (২৫), পিতা- মংশে থোয়াই মারমা এবং উসাইং মারমা (৩০), পিতা- চিংসাউ মারমা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে, আটককৃত উক্ত ব্যক্তিরা একসময় সেনা-সমর্থিত মগ পার্টির সাথে জড়িত ছিল। সেসময় তারা সেনাবাহিনী ছত্রছায়ায় এলাকায় গ্রামবাসীদের উপর চাঁদাবাজি, অপহরণ, নানা হয়রানি চালায়।
পরে মগ পার্টি থেকে সরে আসলেও তারা এলাকায় নানা উচ্ছৃঙ্খল কার্যকলাপ চালাতো। নেশাদ্রব্য পান ও পাড়াবাসীদের থেকে মোরগসহ বিভিন্ন রকমে চুরি করতো। তারা সমাজের কারোর কথায় তোয়াক্কা না করতো না।
৮/৯ মাস পূর্বে বাঙ্গালহালিয়া বাজারে মদ পান করে মাতলামি করায় চন্দ্রঘোনা থানা অধীন বাঙ্গালহালীয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই উক্ত ব্যক্তিদের আটক করে রাঙ্গামাটি কোর্টে চালান দেন। তিন মাস জেল হাজতে থাকার পর তারা জামিনে ছাড়া পায়।
জামিনে ছাড়া পাওয়ার পরও উক্ত ব্যক্তিরা তাদের অপকর্ম থামায়নি। ফলে কার্বারী (পাড়ার প্রধান) মংসুইউ মারমাসহ কয়েকজন মিলে উক্ত সেনা ক্যাম্পে গিয়ে অভিযোগের ভিত্তিতে আসামীদের আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
আটককৃত ব্যক্তিরা জনসংহতি সমিতির কোন কাজে জড়িত না থাকলেও রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য সেনাবাহিনী ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতৃত্ব প্রচার করে, আটককৃত ব্যক্তিরা জনসংহতি সমিতির ‘সন্ত্রাসী’।
আটককৃত ব্যক্তিদের কাছ থেকে একটি দেশীয় তৈরি অস্ত্র শটগান ও এ্যামোনিশন উদ্ধার করা হয় বলে সেনাবাহিনী প্রচার করে। অথচ তাদের কাছ থেকে কোন ধরনের অস্ত্র ও গোলাবারূদ উদ্ধার করা হয়নি বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
সন্ত্রাসী কাজের সাথে জনসংহতি সমিতিকে সম্পৃক্ত দেখাতে আটককৃতদের কাছ থেকে অস্ত্র উদ্ধার করেছে মর্মে সেনাবাহিনী মিথ্যা প্রচার করেছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক গ্রামবাসী উল্লেখ করেন।
এর আগে গত সোমবার (১৫ নভেম্বর) রাতে রাজস্থলী উপজেলার গাইন্দ্যা ইউনিয়নের তাইতংপাড়ায় রাজস্থলী সরকারি কলেজ সংলগ্ন এলাকায় বসবাসকারী নিউরো সার্জন ডা. রেনিন সোয়ে’কে (৫৩) কে বা কারা গুলি করে।
এ ঘটনায় ডা. রেনিন সোয়ে কাউকে দায়ী না করলেও ডা. রেনিন সোয়ে’কে বরাত দিয়ে সেনাবাহিনী তরফ থেকে প্রচার করা হয় যে, জেএসএস সন্ত্রাসীরা এই ঘটনা ঘটাতে পারে। অথচ ডা. রেনিন সোয়ে এ বিষয়ে কারো কাছে বক্তব্য দেননি বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক প্রতিবেশীর সূত্রে জানা যায়।