হিল ভয়েস, ২১ অক্টোবর ২০২১, বিশেষ প্রতিবেদক: অবশেষে পুলিশ কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ রাখা ব্যক্তিকে শনাক্ত করেছে। তাঁর নাম ইকবাল হোসেন (৩৫) ও বাবার নাম নূর আহমেদ আলম বলে জানা গেছে।তার বাড়ি কুমিল্লা নগরের সুজানগর এলাকায়।
পুলিশের সূত্রে জানা গেছে যে, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ইকবাল হোসেনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। কুমিল্লার পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ উক্ত ব্যক্তিকে চিহ্নিত করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশের একাধিক সংস্থার তদন্তে এই নাটকীয় অগ্রগতি হয়েছে বলে জানা গেছে। ওই ব্যক্তি বর্তমানে পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনার আগের দিন রাত ২টা ১০ মিনিটে কুমিল্লার দারোগাবাড়ির মসজিদ থেকে কিছু একটা হাতে নিয়ে বের হন এক যুবক। এর ঘণ্টাখানেক পর নানুয়াদীঘি অস্থায়ী মণ্ডপের উত্তর-পূর্বদিকের রাস্তায় ঘোরাফেরা করতে দেখা যায় ওই একই ব্যক্তিকে। এ সময় তার কাঁধে ছিল হনুমানের হাতে থাকা গদা।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে সেই যুবককে শনাক্ত করা হয়েছে বলে পুলিশের দায়িত্বশীল সূত্রটি জানিয়েছে। পুলিশ ও পূজামণ্ডপ সংশ্লিষ্টদের ধারণা, রাত ২টার পর থেকে থেকে ভোর সাড়ে ৬টার মধ্যে সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড সম্পন্ন করেন ওই ব্যক্তি।
উল্লেখ্য, শারদীয় দুর্গাপূজার মহাঅষ্টমীর দিন ১৩ অক্টোবর বুধবার ভোরে কুমিল্লা শহরের নানুয়া দীঘির উত্তর পাড়ে দর্পণ সংঘের উদ্যোগে আয়োজিত অস্থায়ী পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন দেখা যায়। এরপর কোরআন শরিফ অবমাননার অভিযোগ তুলে ওই মণ্ডপসহ কুমিল্লা শহরের বিভিন্ন পুজামনণ্ডবে হামলা চালায় মুসল্লীরা।
এরপর তিন দিন ধরে কুমিল্লাসহ বান্দরবান, হবিগঞ্জ, খুলনা, চাঁদপুর, কক্সবাজার, লক্ষ্মীপুর, গাজীপুর, কুড়িগ্রাম, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, রাজশাহী, সিলেট, রংপুর প্রভৃতি জেলায় পূজা মন্ডপে হামলা ও প্রতিমা ভাংচুর, হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এসব হামলায় ৩ জন হিন্দুসহ ৬ জন লোক নিহত হয়।