নাইক্ষ্যংছড়িতে সেনা ও বিজিবি কর্তৃক নিরীহ ৬ চাক গ্রামবাসীকে মারধর ও ক্যাম্পে আটক

হিল ভয়েস, ২ সেপ্টেম্বর ২০২১, বান্দরবান: বান্দরবান পার্বত্য জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দৌছড়ি ইউনিয়নের কামিছড়া চাক পাড়ার কার্বারীসহ চাক জনগোষ্ঠীর নিরীহ ৬ জুম চাষীকে সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কর্তৃক অমানুষিক মারধরের পর ক্যাম্পে নিয়ে আটকে রেখেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে যে, গতকাল ১লা সেপ্টেম্বর ২০২১ বুধবার সকালে আলিকদম জোনের সেনা ও নাইক্ষ্যংছড়ি জোনের বিজিবি একদল সদস্য দৌছড়ি ইউনিয়নের কামিছড়া চাক পাড়ায় যৌথ অভিযান চালায়।

উক্ত অভিযানে কামিছড়া চাক পাড়ার কার্বারী মংলাফো চাক(৬০), কার্বারীর ছেলে চিংলামং চাক(৪৫) ও তার মেয়ের জামাই (নাম জানা যায়নি), চিংলাঅং চাক(৫০) ও তাঁর ছেলে (নাম জানা যায়নি), লাগ্যছু চাক(৫৫) প্রমুখ নিরপরাধ ৬ জন গ্রামবাসী সেনা ও বিজিবি সদস্যরা আটক করে।

আটক করার পরসেনা বিজিবি সদস্যরা মহিলাসহ উক্ত ৬ পাড়াবাসীদেরকে অমানুষিকভাবে মারধর করে।“জেএসএস সন্ত্রাসীরা কোথায় থাকে,তাদেরকে কতটাকা চাঁদা দাও ইত্যাদি জিজ্ঞাসাবাদ করে মারধর করে।

এরপর বিনাদোষে গ্রেপ্তারকৃত উক্ত ৬ জুমচাষীকে নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবি ক্যাম্পে নিয়ে আটক করে রেখেছে বলে জানা গেছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আজ অবধি তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়নি কিংবা পুলিশের নিকটও হস্তান্তর করা হয়নি।

এই ঘটনার কারণে পাড়াবাসীসহ সকলের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। বিনাদোষে পাড়াবাসীর উপর সেনা ও বিজিবি সদস্যদের এরূপ মারধর ও নির্যাতনের ফলে চাক পাড়াবাসীরা গ্রামে অবস্থান করতে ভয় পাচ্ছে। ফলে উক্ত গ্রাম থেকে চাক গ্রামবাসী উচ্ছেদ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

উল্লেখ্য যে, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অনুপ্রবেশ, সশস্ত্র দুর্বৃত্ত কর্তৃক ডাকাতি, রাবার বাগান কোম্পানী কর্তৃক হয়রানি ও ভূমি বেদখল, নিরাপত্তাহীনতা, চাক নারীর উপর সহিংসতা ইত্যাদি কারণে ইতিপূর্বে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার লংগডু চাক পাড়া, বাদুঝিড়ি চাক পাড়া, সাতঘয্যা চাকপাড়া উচ্ছেদ হয়ে পড়েছে।

গতকালকের সেনাবাহিনী ও বিজিবি কর্তৃক এহেন গ্রেপ্তার, মারধর, হুমকি, ক্যাম্পে আটকে রাখা ইত্যাদি নিপীড়ন-নির্যাতনের ফলে কামিছড়া চাকপাড়া, ক্রোক্ষ্যং চাক পাড়া ও ছাবোক্ষ্যং চাক পাড়া অচিরেই উচ্ছেদ হয়ে যাবে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চাক জনগোষ্ঠীর প্রবীন ব্যক্তিরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

More From Author