হিল ভয়েস, ১৩ আগস্ট ২০২১, বিশেষ প্রতিবেদক: সম্প্রতি সুনামগঞ্জ জেলাধীন শাল্লা উপজেলায় গ্রামবাসীদের উত্তেজিত করে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা ও লুটতরাজের ঘটনা দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেন তারা।
দেশের শোবিজ অঙ্গন ও সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া কিছু বিষয়ে গতকাল ১২ আগস্ট ২০২১ দেশের ১৭ বিশিষ্ট নাগরিক এক যৌথ বিবৃতি প্রদান করেন। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের নির্বাহী কমিটির সদস্য হানিফ খান স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, চলচ্চিত্র জগতের এক অভিনেত্রীকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের নব্য-ধনিক সমাজের যে চেহারা ফুটে উঠেছে তা আমাদের গভীরভাবে চিন্তিত, উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, সুনামগঞ্জের শাল্লায় গ্রামবাসীকে উত্তেজিত করে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা ও লুটতরাজের ঘটনাও দুঃখজনক। এর চেয়ে দুঃখবহ, এই হামলার মাধ্যমে বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক সামাজিক আবহ বিনষ্টকারী চিহ্নিত গোষ্ঠীর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিচার তো হলোই না, বরং বিনা বিচারে কারাবাসে রয়েছেন মৌলবাদী গোষ্ঠীর সমালোচনাকারী সংখ্যালঘু যুবক। এরই ধারাবাহিকতায় খুলনার রূপসা উপজেলায় ন্যক্কারজনকভাবে ভাংচুর করা হয়েছে উপাসনালয় ও প্রতিমা। নিজ ধর্মবিশ্বাসে আস্থাবান মানুষ অপরের ধর্মপালনকে সম্মান করে চলবে, এটা সবারই কাম্য। এর অন্যথা ঘটিয়ে যারা সামাজিক অপরাধ সংঘটিত করবে তাদের কঠোর হাতে দমনের দাবি জানাই আমরা।
বিবৃতিদাতারা হলেন- আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী, হাসান আজিজুল হক, সৈয়দ হাসান ইমাম, অনুপম সেন, রামেন্দু মজুমদার, সেলিনা হোসেন, আবেদ খান, ফেরদৌসী মজুমদার, সারোয়ার আলী, মফিদুল হক, মামুনুর রশীদ, আবদুস সেলিম, নাসির উদ্দিন ইউসুফ, শাহরিয়ার কবীর, মুনতাসীর মামুন, গোলাম কুদ্দুছ, হাসান আরিফ।
উল্লেখ্য, হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হককে নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তির অভিযোগে গত ১৭ মার্চ ২০২১ সকালে মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক একটি গোষ্ঠী শাল্লা উপজেলার কাশিপুর, দিরাই উপজেলার নাসনি, সন্তোষপুর ও চণ্ডীপুর গ্রামের মানুষদেও উত্তেজিত করে কয়েক হাজার মানুষ লাঠিসোঁটা নিয়ে নোয়াগাঁও গ্রামের পাশের ধারাইন নদের তীরে গিয়ে অবস্থান নেন। পরে সেখান থেকে শতাধিক লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে নোয়াগাঁও হিন্দুদের উপর হামলা চালায়।
জানা গেছে, ঘটনার আগে গ্রামের মসজিদে কিছুক্ষণ পর পর মাইকিং করে সেখানে আক্রমণের জন্য লোকজন জড়ো করা হয়। ফলে হাজারো মানুষের আক্রমণের মুখে গ্রাম ছেড়ে পলায়ন করেন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। এই সুযোগে হেফাজত নেতার অনুসারীরা গ্রামে প্রবেশ করে বাড়িঘর তছনছ করে ও লুটপাট চালায় এবং এ ঘটনায় প্রায় ৮০ টি বাড়ি এবং ৮টি মন্দির ভাংচুর করা হয়।
সূত্রঃ দৈনিক সমকাল