শক্তিপদ ত্রিপুরা
বাংলাদেশ একটি বহু জাতি, বহু ধর্ম ও বহু সংস্কৃতির দেশ। এদেশে মূল জনগোষ্ঠী বাঙালি ছাড়াও সাঁওতাল, গারো, চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, হাজং, খাসি, মণিপুরী, মুন্ডা ইত্যাদি আদিবাসী জাতি স্মরণাতীত কাল থেকে বসবাস করে আসছে। এসব জাতিরা কেউ বুদ্ধিস্ট, কেউ সনাতন, কেউ খ্রিস্টান, কেউ মুসলমান ইত্যাদি। বাংলাদেশ মুসলমান বাঙালি প্রধান দেশ। জনসংখ্যার দিক থেকে মুসলমান বাঙালিদের পরে হিন্দু বাঙালিদের অবস্থান। এরপর বিভিন্ন আদিবাসী জাতির অবস্থান। বাংলাদেশে ৫০টির অধিক আদিবাসী জাতি বাস করে। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, বাংলাদেশে বসবাসরত আদিবাসী জাতিরাই এই বদ্বীপ অঞ্চলের ভূমিপুত্র। কোচ, বর্মণ, গারো, খাসি, ত্রিপুরা, চাকমা, মারমা, কোল, ভিল, মুন্ডা সবাই এই বদ্বীপ অঞ্চলের আদি-বাসিন্দা। আর্য জনগোষ্ঠীর মানুষেরা এই বদ্বীপ অঞ্চলে আগমনের আগে এই অঞ্চলে আদিবাসীদেরই বসবাস ছিল।
অপরদিকে বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনেও আমাদের মাতৃভূমি এই বাংলার মাটিকে আদিবাসীরাই প্রথমে রক্তে ভিজিয়েছিল। সেদিক থেকে আদিবাসী রক্তের সাথে বাংলার মাটির একটা নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠনের পর থেকে রাষ্ট্র এই বাংলার মাটির সাথে আদিবাসীদের নাড়ীর সম্পর্ককে বিচ্ছিন্ন করার প্রক্রিয়ার সূত্রপাত ঘটায়। পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী পাকিস্তানকে একটি মুসলিম রাষ্ট্র ও মুসলিম জনগোষ্ঠীর ভূখন্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করে। জনমিতি পরিবর্তনের লক্ষ্যে অমুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় মুসলিম জনগোষ্ঠীকে পুনর্বাসন করা হয়, আদিবাসীদের ভূমি জবরদখল করা হয়, আদিবাসীসহ ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের নারী ধর্ষণসহ নানা নিপীড়ন নির্যাতন অব্যাহত রেখে দেশান্তরে বাধ্য করা হয় এবং তাদের নানা অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়।
বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরও এধারা অব্যাহত থাকে, অথচ পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীর সাম্প্রদায়িক আচরণ থেকে মুক্তি লাভের লক্ষে পূর্ব পাকিস্তানের আদিবাসীসহ জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুর মানুষেরা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল। এই মুক্তিযুদ্ধে আদিবাসীসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুর হাজার হাজার মানুষ প্রাণ দিয়েছিলো। কিন্তু দু:খজনক হলেও সত্য যে, ১৯৭২ সালে যখন সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান রচনা করা হল তখন বাংলাদেশের আদিবাসীদের বাঙালি বানানো হল। সংবিধানে লেখা হল- বাংলাদেশের জনগণ জাতি হিসেবে বাঙালি। সংবিধানের এ বাক্যের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের বাঙালি-অবাঙালি-আদিবাসী সকল জাতিকে বাঙালি জাতিতে পরিণত করা হল।
স্বাধীনতার পরও বাংলাদেশে পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীর ন্যায় বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠীও আদিবাসী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন, নির্যাতন ও বঞ্চনা শুরু করে দিল। আদিবাসীদের হাজার হাজার একর ভূমি কেড়ে নেয়া হল। জিয়াউর রহমানের আমলে লক্ষ লক্ষ মুসলমান পার্বত্য চট্টগ্রামে বসতি প্রদান করা হল। এর অন্যতম লক্ষ্য ছিল পার্বত্য চট্টগ্রামকে একটি মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলে পরিণত করা। এইসব সেটেলারদের রক্ষা করার জন্য এবং আদিবাসীদের ওপর দমন পীড়ন অব্যাহত রাখার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামে সামরিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা হল। আদিবাসীদেরকে দেশান্তরী করার লক্ষে পরিকল্পিতভাবে গণহত্যা সংঘটিত করা হল। সবকিছু মিলে রাষ্ট্র কর্তৃক বাংলার মাটি থেকে আদিবাসীদেরকে মানসিক ও ভৌগলিক দিক থেকে বিচ্ছিন্নতার দিকে ঠেলে দেয়া হল। জাতিগত নির্মূলীকরণের কার্যক্রম শুরু হল। অথচ বাঙালি জনগোষ্ঠীর মানুষেরা এই বদ্বীপ অঞ্চলে বসতি করার আগে আদিবাসীরা এই অঞ্চলের হিংস্র প্রাণি ও প্রকৃতির নানা প্রতিকূল প্রতিবেশের সাথে সংগ্রাম করে বাংলার মাটিকে চাষযোগ্য ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলেছিল।
সুতরাং ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, এই বদ্বীপ অঞ্চলের ভূমিপুত্র হলো বিভিন্ন আদিবাসী জাতির মানুষেরা যাদেরকে ইতিহাসের পাতায় অনার্য হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছিল। এই বদ্বীপ অঞ্চলের বিভিন্ন জাতির মানুষেরা এই ভূমিপুত্রদের আদিবাসী হিসেবে জানে ও চিনে। এপ্রসঙ্গে বিশিষ্ট গবেষক ও ইতিহাসবিদ মেসবাহ কামালের বক্তব্য প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেছিলেন- “রাজশাহী অঞ্চলের বাঙালিরা সে অঞ্চলের আদিবাসীদেরকে ‘আদিবাসী’ হিসেবে জানে, চেনে।” একই কথা প্রতিধ্বণিত হয়েছিল বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ রাশেদ খান মেনন ও ফজলে হোসেন বাদশার বক্তব্যে। কিন্তু ২০১০ সালে শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক বলা হল- বাংলাদেশে কোন আদিবাসী নেই, আছে উপজাতি ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী। কিন্তু বাংলাদেশের নৃতত্ত্ববিদরা বলছেন- নৃবিজ্ঞান বা সমাজ বিজ্ঞানে উপজাতি শব্দটি এখন পরিত্যাজ্য। কারণ এই শব্দটি দিয়ে আদিম, অসভ্য ইত্যাদি বুঝানো হয়ে থাকে।
অপরদিকে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কোন জাতির নাম হতে পারে না। উপরন্তু ‘ক্ষুদ্র’, ‘উপ’ – এসব শব্দ অপমানসুলভ শব্দ। বাংলাদেশের নৃতত্ত্ববিদগণ এই অভিমত প্রদান করেছিলেন। বাংলাদেশের নৃতত্ত্ববিদ ও আদিবাসী জনগণের অভিমতকে উপেক্ষা করে শেখ হাসিনা সরকার ২০১০ সালে ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইন’ প্রণয়ন করেছিলো। এরপর শেখ হাসিনা সরকার এই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, উপজাতি ইত্যাদি প্রত্যয়সমূহ সংবিধানেও সন্নিবেশ করে। এরপর শেখ হাসিনা সরকার ‘আদিবাসী’ শব্দ ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে ও তাঁর সরকার এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র, নির্বাচনী ইশতেহারের অঙ্গীকারকে লংঘন করে এবং এটি মুক্তিযুদ্ধ চেতনারও পরিপন্থী। কারণ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র (দেখুন- গঠনতন্ত্রে অঙ্গীকার অংশের ১৯ নং ধারা) ও নির্বাচনী ইশতেহারে (দেখুন- আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার) এদেশের আদিবাসীদের ‘আদিবাসী’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া দেশের বিভিন্ন আইনে (১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি, ১৯৫০ সালের জমিদারী উচ্ছেদ ও প্রজাসত্ত্ব আইন, ১৯৯৫ সালের অর্থ আইন, জাতীয় পলিসি, যেমন- জাতীয় শিক্ষানীতি ২০০৯, পিআরএসপি, জাতীয় বাজেট- ২০০৯, আদালতের রায় ইত্যাদিতে) ‘আদিবাসী’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে। ২০১০ সালে প্রণীত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইনেও আদিবাসী শব্দের স্বীকৃতি রয়েছে। সুতরাং বাংলাদেশের আদিবাসীরা দেশের আইনে ইতোমধ্যে ‘আদিবাসী’ হিসেবে স্বীকৃত হয়ে আছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই তাঁর বাণীতে (২০০০ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম কর্তৃক প্রকাশিত ‘সংহতি’ ম্যাগাজিনে প্রদত্ত বাণী) এদেশের আদিবাসীদের ‘আদিবাসী’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তাই এদেশের আদিবাসীদের ‘আদিবাসী’ না বলার কোন যৌক্তিকতা থাকতে পারে না এবং এদেশের আদিবাসীরা ‘আদিবাসী’ হিসেবে দেশের আইনে স্বীকৃত নয়- এ কথা বলারও অবকাশ থাকে না।
অনেকে মনে করেন, এদেশের আদিবাসীদের ‘আদিবাসী’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হলে রাষ্ট্র ও ভূখন্ডের ক্ষতি হবে। তাই যদি হয়ে থাকে তাহলে যেসব দেশ আদিবাসীদের ‘আদিবাসী’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেছে সেসব রাষ্ট্র ও ভূখন্ডের তো কোন ক্ষতি হয়নি? আমেরিকা, অষ্ট্রেলিয়া, ইউরোপ ছাড়াও আমাদের এশিয়া মহাদেশে ফিলিপাইন, জাপান, মালয়েশিয়া প্রভৃতি দেশে আদিবাসীরা তাদের দেশের সংবিধানে ‘আদিবাসী’ হিসেবে স্বীকৃত। কই সেসব দেশের রাষ্ট্র কিংবা ভূখন্ডের তো ক্ষতি হচ্ছে না? বরং, কোন জাতি বা নাগরিককে তাদের ন্যায্য অধিকার প্রদান করা না হলে, সেক্ষেত্রে দেশে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আছে।
আদিবাসী কারা এবং আদিবাসী কাদেরকে বলা হবে- এই বিষয়ে অনেকের ধারণা পরিষ্কার নয়। অনেকে আদিবাসী আর আদি-বাসিন্দা দু’টি শব্দকে গুলিয়ে ফেলেন। কোন জনগোষ্ঠী কোন অঞ্চলের আদি-বাসিন্দা হলে সে জনগোষ্ঠী আদিবাসী হবে এমন কোন কথা নয়। কোন আদি-বাসিন্দা জনগোষ্ঠীকে আদিবাসী হতে হলে আদিবাসী সংক্রান্ত যেসব বৈশিষ্ট্য জাতিসংঘ বা আইএলও কর্তৃক নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে সেসব বৈশিষ্ট্য তাদের থাকতে হবে। নচেৎ সেই আদি-বাসিন্দা জনগোষ্ঠীকে আদিবাসী হিসেবে আখ্যায়িত করা যাবে না।
কারা ‘আদিবাসী’ তা নির্ধারণে কতকগুলি বৈশিষ্ট্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত (জাতিসংঘ ও আইএলও), সেগুলি হলো- ১. বর্তমানের রাষ্ট্রশাসন প্রক্রিয়ায় যাদের ভূমিকা একেবারেই প্রান্তিক, ২. আধুনিক রাষ্ট্র গঠন প্রক্রিয়ার সাথে যাদের অসম্পৃক্ততা বা প্রান্তিক সম্পৃক্ততা, ৩. যারা রাষ্ট্রীয় আইনের চাইতে প্রথাগত আইনের মাধ্যমে আভ্যন্তরীণ সামাজিক বিরোধ নিষ্পত্তি করে থাকে, ৪. প্রথাগত আইন কার্যকর করার জন্য যাদের ঐতিহ্যগত প্রতিষ্ঠান রয়েছে, ৫.ভূমির সাথে যাদের আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রয়েছে, ৬. যারা স্মরণাতীত কাল থেকে বিশেষত: উপনিবেশ স্থাপনকালে স্ব স্ব অঞ্চলে বসবাসরত ছিলো- এসব বৈশিষ্ট্য যাদের রয়েছে তাদেরকেই ‘আদিবাসী’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এসব বৈশিষ্ট্য বাংলাদেশের আদিবাসীদের বৈশিষ্ট্যের সাথে হুবহু মিল রয়েছে। তাই বাংলাদেশের আদিবাসীরা আদি-বাসিন্দা কিংবা আন্তর্জাতিকভাবে নির্ধারিত বৈশিষ্ট্য- এই দু’য়ের ভিত্তিতেও আদিবাসী হিসেবে বিবেচিত হবার অধিকার রাখে।
তাছাড়া কোন জাতি বা জাতিসমূহের নাম কী হবে সেটি তাদের ব্যাপার। কোন জাতির সাথে পরামর্শ ব্যতীত সে জাতির নাম পরিবর্তন করে দিলে তা সে জাতিকে অপমান ও হেয় প্রতিপন্ন করার সামিল। সুতরাং কোন জাতির নাম পরিবর্তন করা রাষ্ট্র কিংবা ভিন্ন কোন জাতি অধিকার রাখে না। আত্ম-পরিচয়ের অধিকার সেটি মানবাধিকারেরই একটি স্বীকৃত অধিকার। উল্লেখ্য যে, শাসকগোষ্ঠীর একটি মহল বাংলাদেশের আদিবাসীদের ‘আদিবাসী’ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে না চাইলেও বাংলাদেশের জনগণ, বাঙালি জনগণ, বাঙালি বুদ্ধিজীবী, দেশের গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল নাগরিক সমাজ এদেশের আদিবাসীদের ‘আদিবাসী’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে আসছে। বাংলাদেশের বহু আইনেও এদেশের আদিবাসীদের ‘আদিবাসী’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া আছে। বাংলাদেশের সংবিধানও পরোক্ষভাবে স্বীকৃতি দেয় (সংবিধানে উল্লেখিত প্রচলিত আইন হিসেবে ১৯০০ রেগুলেশন স্বীকৃত এবং ১৯৫০ সালের প্রজাসত্ত্ব আইন সংবিধানে সন্নিবেশিত রয়েছে)। সুতরাং বাংলাদেশের সংসদীয় ও সাংবিধানিক আইনে বাংলাদেশের আদিবাসীরা ‘আদিবাসী’ হিসেবে স্বীকৃত নয়, তা পুরোপুরি সত্য নয়।
পৃথিবীর বিভিন্ন রাষ্ট্রের রাষ্ট্র্রপ্রধান কিংবা সরকার প্রধান তাঁদের অতীত কৃতকর্মের জন্য আদিবাসীদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকারও তাদের পূর্বমত পরিবর্তন করে এই বদ্বীপ অঞ্চলে আদিবাসীদের অবদানকে স্বীকার করে নিয়ে এবং বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে আদিবাসীদের অবদানকে স্মরণ করে দেশের আদিবাসীদেরকে সংবিধানে ‘আদিবাসী’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে তাঁদের ভূমি ও ভূখন্ডের অধিকারসহ তাদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসবেন- এটি দেশের বুদ্ধিজীবী, গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীলমনা নাগরিক সমাজ ও আদিবাসী জনগণ প্রত্যাশা করে।
শেখ হাসিনা সরকার যদি এসব উদ্যোগ গ্রহণ করে এবং সার্থকভাবে বাস্তবায়ন করে; বাংলাদেশ, জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত এবারের প্রতিপাদ্য বিষয়- কাউকে পেছনে ফেলে নয়: আদিবাসী অধিকার প্রতিষ্ঠায় নতুন সামাজিক অঙ্গীকারের আহ্বান’- এই প্রতিবাদ্য বিষয়ের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হবে। শেখ হাসিনা সরকার নতুন সামাজিক অঙ্গীকার হিসেবে এবং এ অঙ্গীকার বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের সংবিধানে ‘আদিবাসী’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে আদিবাসীদের স্বশাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে পারে। এতে বাংলাদেশ, রাষ্ট্র ও আদিবাসীসহ দেশের জনগণ- সকলেই উপকৃত হবে।
শক্তিপদ ত্রিপুরা: সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম।