হিল ভয়েস, ১১ জুলাই ২০২১, রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলাধীন রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার কুদুকছড়ি ইউনিয়নের কুদুকছড়ি উপর পাড়া (আবাসিক) জনবল বৌদ্ধ বিহারের স্থানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নানিয়ারচর সেনা জোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ‘সতর্কীকরণ’ সাইনবোর্ড টাঙানো হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উক্ত সাইনবোর্ডে বলা হয়, “সেনা পরিত্যক্ত কর্মস্থানে কোন প্রকার চাষাবাদ, স্থাপনা নির্মাণ বা বসতি স্থাপন করা নিষেধ। এই স্থানে কোন কিছু করার পূর্বে অবশ্যই নানিয়াচর জোনের অনুমতি গ্রহণ করতে হবে। আদেশক্রমে- নানিয়ারচর জোন”।
জানা গেছে, গত ৮ জুলাই ২০২১, সকাল ৯:০০টার সময় নানিয়ারচর সেনা জোনের অধীন কুদুকছড়ি সেনা ক্যাম্পের একদল সেনা সদস্য উক্ত সর্তকীকরণ সাইনবোর্ডটি টাঙিয়ে দিয়ে যান। এছাড়া মৌনতলার কিজিং নামক স্থানেও একটি টিলায় একই ধরনের বিজ্ঞপ্তি টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে এমন বিজ্ঞপ্তি টাঙানো ধর্ম অবমাননার সামিল। এটা ধর্ম পালনে বাধা সৃষ্টি করার অপকৌশল ছাড়া আর কিছু নয়। এলাকার জনগণ যাতে সুষ্ঠুভাবে ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে সেজন্য বিহারের স্থান থেকে অবিলম্বে উক্ত সাইনবোর্ডটি সরিয়ে নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গ্রামবাসী হিল ভয়েসকে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি মোতাবেক পরিত্যক্ত সেনা ক্যাম্পের জায়গা জমির প্রকৃত মালিকদের কাছে ফেরত দেওয়ার বিধান আছে। সুতরাং সেনাবাহিনী নতুন করে আর জায়গার মালিক দাবি করতে পারেন না।
উল্লেখ্য, বেশ কয়েক বছর আগে স্থানীয় এলাকাবাসী উক্ত জনবল বৌদ্ধ বিহারটি স্থাপন করেন। বিহারটিতে বর্তমানে বৌদ্ধ ভিক্ষুও অবস্থান করছেন।
উল্লেখ্য, এর পূর্বে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সার্বোয়াতলী ইউনিয়নে এক জুম্মর ভূমিতে স্থাপিত বৌদ্ধ ভাবনা কুটিরেও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্মাণকাজ ও চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেনাবাহিনী সেখানে বিজিবি সদস্যদের দিয়ে ‘সংরক্ষিত এলাকা, প্রত্যাহারকৃত আর্মি ক্যাম্প’ উল্লেখ করে এবং উক্ত নিষেধাজ্ঞা জারী করে একটি বিজ্ঞপ্তি টাঙিয়ে দিয়েছে।
গত ৫ জুন ২০২১ বাঘাইছড়ির ২৭ বিজিবি মারিশ্যা জোনের অধীন নিউ ফরেস্ট (চিন্তারামছড়া) বিজিবি ক্যাম্পের একদল বিজিবি সদস্য সেখানে গিয়ে ‘ভাবনা কুটির’ এলাকার প্রবেশ মুখে উক্ত বিজ্ঞপ্তিটি টাঙিয়ে দিয়ে যায়। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘কোনো প্রকার স্থাপনা নির্মাণ, মাটিকাটা, মাপযোগ (মাপজোক) করা সহ চলাফেরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ’। যাওয়ার সময় বিজিবি সদস্যরা ভাবনা কুটির পরিচালনা কমিটির সদস্যদের ডেকে ‘ঐ এলাকায় কোন নির্মাণকাজ করলে অথবা কোনো গাছ লাগালে ব্যবস্থা নেয়া হবে’ বলে হুমকি দিয়ে যায়।