হিল ভয়েস, ২৮ জুলাই ২০২১, বিশেষ প্রতিবেদক: পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) তার এক শোকবার্তায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির আন্তর্জাতিক মুখপাত্র ড. রামেন্দু শেখর দেওয়ানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে এবং সেই সাথে তাঁর আত্মীয়বর্গের প্রতি জানিয়েছে গভীর সমবেদনা ও সহমর্মিতা।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা স্বাক্ষরিত এই শোকবার্তায় বলা হয়েছে, তাঁর নিরলস প্রচারাভিযানের ফলে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপে জুম্ম জনগণের অধিকারের পক্ষে আন্তর্জাতিক জনমত গড়ে উঠে এবং তা ক্রমাগত শক্তিশালী হয়ে আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার আন্দোলনের অন্যতম সহায়ক শক্তিতে পরিণত হয়েছিল। তাঁর প্রয়াণে যে শুন্যতা সৃষ্টি হয়েছে তা অপূরণীয়।
শোকবার্তায় আরও বলা হয়, জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার আন্দোলনে ড. আর এস দেওয়ানের মহান অবদান ও তাঁর আত্মত্যাগ জনসংহতি সমিতি তথা জুম্ম জনগণ চিরদিন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে এবং মুক্তিকামী মানুষ আন্দোলন-সংগ্রামে অনুপ্রাণিত হবে।
এতে আরও বলা হয়, তিনি ছিলেন একজন নিখাদ দেশপ্রেমিক, মানবাধিকার সুরক্ষা কর্মী ও দৃঢ়চেতা সংগ্রামী। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির আন্তর্জাতিক মুখপাত্র হিসেবে জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার আন্দোলনের পক্ষে তিনি ছিলেন অটুট মনোবলের অধিকারী একজন অতুলনীয় প্রচার সৈনিক।
শোকবার্তায় উল্লেখ করা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির আন্তর্জাতিক মুখপাত্র ড. রামেন্দু শেখর দেওয়ান গত ২৯ মার্চ ২০২১ যুক্তরাজ্যের ম্যানচেষ্টারে নিজ এপার্টমেন্টে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুতে জুম্ম জাতি হারালো এক বিপ্লবী সন্তানকে আর পার্টি হারালো এক আদর্শবান ও নি:স্বার্থ বন্ধুকে।
ড. আর এস দেওয়ান ১৭ জানুয়ারি ১৯৩২ সালে বর্তমান খাগড়াছড়ি জেলা সদরে খবংপয্যা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেমিষ্ট্রিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করার পর উচ্চতর পড়াশুনার জন্য ১৯৬৭ সালে ৩রা নভেম্বর যুক্তরাজ্যে পাড়ি দেন। এরপর লন্ডনস্থ কুইন্স এলিজাবেথ কলেজ থেকে এমফিল এবং ১৯৮০ সালে সালফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি সম্পন্ন করেন। অধ্যয়নের পাশাপাশি তিনি ১৯৭০ দশক থেকে জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার আন্দোলনের স্বপক্ষে প্রচার কার্যে আত্মনিয়োগ করেন যা ক্লান্তিহীনভাবে আমরণ চালিয়ে যান।