হিল ভয়েস, ৭ জুন ২০২১, রাঙ্গামাটি: বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলাধীন বাঘাইছড়ি উপজেলার সার্বোয়াতলী ইউনিয়নে এক জুম্মর ভূমিতে স্থাপিত বৌদ্ধ ভাবনা কুটিরে নির্মাণকাজ ও চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি সেনাবাহিনী সেখানে বিজিবি সদস্যদের দিয়ে ‘সংরক্ষিত এলাকা, প্রত্যাহারকৃত আর্মি ক্যাম্প’ উল্লেখ করে এবং উক্ত নিষেধাজ্ঞা জারী করে একটি বিজ্ঞপ্তি টাঙিয়ে দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সার্বোয়াতলী ইউনিয়নের ৩৮৪নং সার্বোয়াতলী মৌজাধীন নোয়াপাড়া এলাকার রেগাছড়া গ্রামে অবস্থিত ঐ ভূমিতে ‘মহাসাতি পট্ঠান ভাবনা কুটির’ নামে এলাকাবাসীদের একটি বৌদ্ধ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রয়েছে। গত ৫ জুন ২০২১ বাঘাইছড়ির ২৭ বিজিবি মারিশ্যা জোনের অধীন নিউ ফরেস্ট (চিন্তারামছড়া) বিজিবি ক্যাম্পের একদল বিজিবি সদস্য সেখানে গিয়ে ‘ভাবনা কুটির’ এলাকার প্রবেশ মুখে উক্ত বিজ্ঞপ্তিটি টাঙিয়ে দিয়ে যায়। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘কোনো প্রকার স্থাপনা নির্মাণ, মাটিকাটা, মাপযোগ করা সহ চলাফেরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ’ (এখানে লক্ষণীয় যে, ‘মাপযোগ’ বানানটি ভুল)। যাওয়ার সময় বিজিবি সদস্যরা ভাবনা কুটির পরিচালনা কমিটির সদস্যদের ডেকে ‘ঐ এলাকায় কোন নির্মাণকাজ করলে অথবা কোনো গাছ লাগালে ব্যবস্থা নেয়া হবে’ বলে হুমকি দিয়ে যায়।
জানা গেছে, দীর্ঘ বছর ধরে ঐ জায়গাটি ভোগদখল করে আসছিলেন মতিলাল চাকমা নামে এক জুম্ম গ্রামবাসী। মতিলাল চাকমার মৃত্যুর পর তার স্ত্রী ও পরিবার জায়গাটি ভোগদখল করে আসছিলেন। বর্তমানে সেখানে কাঠালসহ বিভিন্ন ফলের বাগান রয়েছে।
আরও জানা গেছে, মতিলালের ঐ এলাকায় পার্বত্য চুক্তির পূর্বে একটি সেনাক্যাম্প ছিল। পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরের পরপরই চুক্তি মোতাবেক ঐ সেনাক্যাম্পটি সেখান থেকে প্রত্যাহার করা হয়।
২০০৮ সালের দিকে এলাকাবাসীর উদ্যোগে মতিলালের ঐ এলাকায় ‘মহাসাতি পট্ঠান ভাবনা কুটির’ নামে একটি বৌদ্ধ মন্দিরটি স্থাপন করা হয়। সেখানে একজন বৌদ্ধ ভিক্ষুও রয়েছেন। ভাবনা কুটিরের বিভিন্ন নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।
সেনাবাহিনী ও বিজিবি’র এরূপ পদক্ষেপে এলাকাবাসী ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এলাকাবাসীর আশঙ্কা, সেনাবাহিনী আবার জায়গাটি বেদখল করে সেখানে নতুন একটি সেনাক্যাম্প স্থাপনের ষড়যন্ত্র করছে।