হিল ভয়েস, ১৯ মে ২০২১, বিশেষ প্রতিবেদক: বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে গতকাল ১৭ মে ২০২১ সচিবালয়ে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিবের একান্ত সহকারীর কক্ষে প্রায় ৬ ঘন্টা আটকে রেখে হেনস্তা, হয়রানি মূলক মামলা দায়ের এবং জেলহাজতে প্রেরণের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এই ঘটনা গণতন্ত্র, গণমাধ্যম ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর নগ্ন হস্তক্ষেপ বলেও দাবি করেছেন এই আদিবাসী নেতা।
সঞ্জীব দ্রং আরো বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে করোনার অতিমারীর মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নানা দুর্নীতি ও অনিময় নিয়ে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের ধারাবাহিক প্রতিবেদন জনগণের সামনে উন্মোচিত হওয়ায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাঁকে এই হয়রানির শিকার করা হচ্ছে। ফলে দুর্নীতিবাজ ও অসাধু কর্মকর্তা এবং তৎসংশ্লিষ্ট কতিপয় ব্যক্তিরা আরো উৎসাহিত হবে এবং এই ঘটনা রোজিনা ইসলামের মত জনবান্ধব অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের সৎসাহস ও মনোবলকে আঘাত করবে।
অবাধ তথ্য প্রবাহের যুগে তথ্য পাওয়ার অধিকার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের উপর যে নগ্ন হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে তা সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আমলা কর্তৃত্বের প্রভাবকে নতুনভাবে মনে করিয়ে দেয়া হচ্ছে কী না এবং তার মাধ্যমে সমাজকে ভুল বার্তা দেওয়ার প্রয়াস চালানো হচ্ছে বলেও মনে করেন এই আদিবাসী নেতা।
রাষ্ট্র পরিচালনায় সরকারের অন্যতম সহযোগী হিসাবে এবং সমাজের নানা অসঙ্গতিগুলোকে জনসম্মুখে প্রকাশের মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণের যে কাজটি রোজিনা ইসলামের মত সাংবাদিকরা করে যাচ্ছেন তা এই ঘটনার মধ্য দিয়ে হোঁচট খাবে বলেও উল্লেখ করেন আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক। কাজেই সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা, হয়রানিমূলক মামলা ও জেল হাজতে প্রেরণ কেবলমাত্র রোজিনা ইসলামের উপর আঘাত নয়, এটা মুক্ত গণমাধ্যম, গণতন্ত্র ও সুশাসনের পথেও অন্তরায় হবে বলে মনে করেন তিনি।
আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং অনতিবিলম্বে এবং নি:শর্তে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে জামিন দিয়ে মুক্ত করার এবং হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান জানান। অন্যদিকে সাংবাদিক হেনস্তার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত এবং এই হেনস্তা ও হয়রানির পেছনে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কোনো দুরভিসন্ধি আছে কী না তা সরকারকে খতিয়ে দেখারও আহ্বান জানান তিনি।