হিল ভয়েস, ৪ মে ২০২১, রাঙ্গামাটি: বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলাধীন রাজস্থলী উপজেলার গাইন্দ্যা ইউনিয়নে এক জুম্ম যুবকের বাড়িতে প্রবেশ করে অস্ত্র গুঁজিয়ে দিয়ে ওই যুবককে আটক করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে সেনাবাহিনী ওই যুবককে মিথ্যাভাবে জনসংহতি সমিতির সদস্য ও কালেক্টর সাজিয়ে রাজস্থলী থানায় সোপর্দ করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
আটককৃত যুবকের নাম উথোয়াইচিং মারমা (২১), পিতা-প্রুসাথোয়াই মারমা, গ্রাম-লংগদু পাড়া, ৮নং ওয়ার্ড, গাইন্দা ইউনিয়ন। উথোয়াইচিং মারমা পেশায় একজন ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল চালক বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ৩ মে ২০২১ রাত আনুমানিক ১১:৩০ টার দিকে কাপ্তাই সেনা জোন ডেয়ারিং টাইগার্স এর অধীন বাঙ্গালহালিয়া সাব জোন এর সেনাবাহিনীর একটি টহল দল দুটি পিক-আপ (গাড়ি) যোগে লংগদু পাড়া গ্রামে যায়। এর পরপরই সেনা সদস্যরা সরাসরি উথোয়াইচিং মারমার বাড়িতে প্রবেশ করে ষড়যন্ত্রমূলক একটি দেশীয় বন্দুক ও গুলি গুঁজিয়ে দিয়ে উথোয়াইচিং মারমাকে আটক করে। এসময় বাড়িতে থাকা উথোয়াইচিং মারমার পরিবারের লোকজন সেনাবাহিনীর এই ষড়যন্ত্রমূলক আটকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে চাইলে সেনা সদস্যরা তাদের মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
এরপর সেনা সদস্যরা উথোয়াইচিং মারমাকে গাড়িতে করে বাঙ্গালহালিয়া সেনা ক্যাম্পে নিয়ে যায়। পরে সেনাবাহিনী মিথ্যাভাবে উথোয়াইচিং মারমাকে জনসংহতি সমিতির সদস্য ও কালেক্টর সাজিয়ে রাজস্থলী থানায় সোপর্দ করে।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজস্থলী উপজেলার জনসংহতি সমিতির এক নেতার কাছে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, উথোয়াইচিং মারমা জনসংহতি সমিতির কোন কমিটির সদস্য নয়। তিনি বলেন, আমি যতদূর জানি, উথোয়াইচিং মারমা মোটর সাইকেল দিয়ে ভাড়ায় যাত্রী আনা-নেওয়া করে থাকে।
তিনি বলেন, মূলত সেনাবাহিনী দীর্ঘদিন ধরে রাজস্থলীতে জনসংহতি সমিতির কর্মী ও সমর্থকদের দমন-পীড়ন চালিয়ে আসছে, মিথ্যা মামলায় জড়িত করে আসছে এবং মগ পার্টি সন্ত্রাসীদের দিয়ে একের পর হত্যাকান্ড ও চাঁদাবাজি চালিয়ে আসছে।
উল্লেখ্য, রাজস্থলীতে দীর্ঘদিন ধরে সেনাবাহিনী কর্তৃক মগ লিবারেশন পার্টিকে (মগ পার্টি) আশ্রয়-প্রশ্রয় ও মদদ দেওয়ার এবং পার্বত্য চুক্তির পক্ষের জনসংহতি সমিতির কর্মী ও জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে। ইতোমধ্যে সেনাবাহিনী একাধিকবার মগ পার্টির সাথে গোপন বৈঠক করার এবং বৈঠকে মগ পার্টিকে জনসংহতি সমিতি ও সমর্থকদের হত্যা করার উস্কানি দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।