জাতীয় বাজেট ও আদিবাসী

সঞ্জীব দ্রং

১.
আমরা সকলেই জানি, মানব জাতি এক কঠিন সময় পার করছে। তাই এখন অভিযোগ-অনুযোগ-মান-অভিমানের বদলে মানুষের পাশে মানুষের ভালোবেসে সমব্যথী হয়ে দু’হাত বাড়িয়ে দাঁড়াবার সময়। এখন সকলের যুক্ত ও ঐক্যবদ্ধ থাকার সময়। সহনশীলতা, ধৈর্য্য, পরমতসহিষ্ণুতা, ক্ষমাশীল, নির্ভয়, বিনয়ী ও শান্ত ছন্দময় থাকার সময়। প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে মানব সভ্যতা অসহায়ের মতো দেখছে নিষ্ঠুর করোনা ৩২ লক্ষাধিক প্রাণ কেড়ে নিয়েছে (৬ মে পর্যন্ত)। ধনী রাষ্ট্র, উন্নয়নশীল রাষ্ট্র, বিশেষ উন্নত সমাজ কেউ করোনার আক্রমণ থেকে মুক্তি পাচ্ছে না। প্রতিদিন মানুষের এই মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘতর হচ্ছে। বৈশ্বিক অর্থনীতি অনিশ্চতায় ঢেকে গেছে। এক বছরের বেশি সময় ধরে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় বন্ধ। রাষ্ট্র নায়কেরা চেষ্টা করে চলেছেন মানুষকে বাঁচাতে, অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে। এখন করোনা টিকা মানবজীবনে নতুন আশার সঞ্চার করছে। এই দুঃসময়ে মানুষে মানুষে বন্ধন ও ভালোবাসা, পারস্পরিক সহভাগিতা, সমমর্মিতার বড় প্রয়োজন। মানব সমাজ একটি কঠিন পরীক্ষার সময়ে স্বার্থপরের মতো এককভাবে বাঁচতে পারে না। এখন সকলকে নিয়ে বাঁচার লড়াই করাটাই মানবজাতির জন্য মর্যাদাকর, কল্যাণকর। এসডিজির শ্লোগান ‘লীভ নো ওয়ান বিহাইন্ড’ বা কাউকে পেছনে ফেরে রেখে নয় – জাতিসংঘের এই কথাটির যথার্থ প্রতিফলন আমরা দেখতে চাই। এখন আত্ম-অনুসন্ধানী ও অনুতপ্ত হয়ে আমাদের খুঁজতে হবে কেন জাতিসংঘ তথ্যমতে ৪৭ কোটি আদিবাসীসহ বিশ্বের প্রান্তিক মানুষেরা বর্তমান এই উন্নয়ন ধারায় সমানভাবে তাল মেলাতে পারলোনা, কেন তারা পেছনে পড়ে রইল।

পোপ জন পল, মহাত্মা গান্ধী থেকে শুরু করে অনেক মণীষী একই ধরনের বার্তা দিয়ে এভাবে বলেছেন, “A society will be judged on the basis of how it treats its weakest members.”

অর্থাৎ, একটি সমাজ বা রাষ্ট্র কতখানি উন্নত ও সভ্য তার বিচার্য বিষয় হবে সেই সমাজে সবচেয়ে অনগ্রসর, প্রান্তিক ও দূর্বল মানুষেরা কেমন আছে, তার উপর। অর্থাৎ আমাদের রাষ্ট্রকে তখনি আমরা সঠিক পথে আছে বলতে পারবো যখন দেশে জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু নাগরিক, আদিবাসী, গরিব প্রান্তিক মানুষ, চা বাগান, দলিত,হাওর-চরাঞ্চল-পাহাড়ের মানুষ নিরাপদে, কল্যাণে ভালো থাকবে।

আমরা একটি গণতান্ত্রিক, মানবিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজের দিকে ধাবিত হচ্ছি। এই ধাবমান প্রক্রিয়ায় সকলের অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।

২.
আমাদের সংবিধানেও মৌলিক অধিকার অনুচ্ছেদ সমাজের পিছিয়ে পড়া অনগ্রসর অংশের জন্য রাষ্ট্রকে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণের তাগিদ দিয়েছে (অনুচ্ছেদ ২৮.৪)। অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, জুলাই ২০২০ থেকে জুন ২০২৫, ‘প্রমোটিং প্রসপারিটি এন্ড ফস্টারিং ইনক্লুশিভনেস’, চ্যাপ্টার ১৪, স্যোশাল সিকিউরিটি, স্যোশাল ওয়েলফেয়ার এন্ড স্যোশাল ইনক্লুশন – এথনিক কম্যুনিটি এবং স্ট্রাটেজি ফর এথনিক পপুলেশন অধ্যায়ে বলা হয়েছে, সাধারণত এই নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী অতি দারিদ্রতা, প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও অন্যান্য বহির্মুখী চাপে ও প্রভাবে অধিকতর প্রান্তিকতার শিকার হয়। অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় ২০১১ সালের জনশুমারী উল্লেখ করে বলা হয়েছে দেশে আদিবাসী জনসংখ্যা ১৬ লাখ এবং এই দলিলে তাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক বঞ্চনার উল্লেখ ও স্বীকৃতি রয়েছে (পৃষ্ঠা ৭৬৫ ও ৭৫১)। স্ট্রাটেজি ফর এথনিক পপুলেশন অধ্যায়ে বলা হয়েছে, “The government is committed to ensuring socio-economic and political rights, fundamental human rights, and social security, while enabling ethnic people to retain their social, cultural, and traditional identities.”

এখন এই অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এবং আদিবাসী সমাজকেও উন্নয়নের সমান ধারায় যথাযথভাবে এগিয়ে নিতে রিসোর্স বরাদ্দ, তার প্রয়োগ এবং বাজেটে তার প্রতিফলন থাকা অতি জরুরি। আমরা সবাই জানি, কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারীর ফলে সমাজের দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষেরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইনফরমাল কাজের সঙ্গে এরা বেশি যুক্ত, যেমন, ড্রাইভার, গৃহকর্মী, বিউটি পার্লার, সিকিউরিটি গার্ড, সেলস্ কর্মী, গার্মেন্টসে অদক্ষ কর্মী ইত্যাদি। এই ধরনের কাজে যেহেতু কোনো নিয়োগপত্র বা নীতিমালা নেই বা অকার্যকর, তাই এদের বড় অংশ এই মহামারিতে চাকুরি হারিয়েছে। অথবা অনেকের চাকুরি আছে কিন্তু বেতন নেই বা বেতন কমে গেছে। অনেকে করোনার শুরুতে এক বছর আগে গ্রামে চলে গেছে, এখনো ফেরেনি। এই ধরনের অনেক গল্প আমরা জানি। নতুন বাজেটে এই প্রান্তিক মানুষদের পরিবারের কথা ভেবে বিশেষ আর্থিক প্রণোদনা রাখা প্রয়োজন।

৩.
গত অর্থবছরে জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছিল ১১ জুন ২০২০। মোট পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করা হয়েছিল। বিগত বাজেটগুলোতে (উল্লেখ্য ২০১০ থেকে ২০১৩) জাতীয় বাজেট বক্তৃতায় আদিবাসী / ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী জনগণের জন্য ছোট্ট পৃথক অনুচ্ছেদ বা প্যারাগ্রাফ থাকলেও গত কয়েকটি বাজেট বক্তৃতায় আদিবাসীদের স্থান হয়নি। গত কয়েক বছর ধরে এটি আর দেখা যায় না। আমরা এবার আশা করবো অতীতের ন্যায় বাজেট বক্তৃতায় আদিবাসী মানুষের পরিচয়, অধিকার, সংস্কৃতি, নিজস্ব জীবনধারা, তাদের উন্নয়ন এসব বিষয়ে কিছু উল্লেখ থাকবে। বাজেট মানে তো শুধু টাকা পয়সা না, এখানে আদিবাসী প্রান্তিক মানুষ সম্পর্কে রাষ্ট্রের ভাবনা-চিন্তা, সমর্থন ও দৃষ্টিভঙ্গিরও প্রকাশ ঘটে।

গত জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থ বছরের জন্য যে বাজেট পেশ করা হয়েছিল, সেখানে বরাবরের মতো দেশের ৪০ লক্ষাধিক আদিবাসী জনগণ উপেক্ষিতই হয়েছে। সমতলের আদিবাসীদের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে প্রতিবছর “বিশেষ এলাকার জন্য উন্নয়ন সহায়তা” নামে যে থোক বরাদ্দ দেয়া হয়, সেখানে বরাদ্দ আগের তুলনায় প্রতিবছর কিছু বাড়ছে। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৫০ কোটি টাকা, গত বছর ২০২০-২১ অর্থ বছরের জন্য তা বেড়ে হয়েছে ৮০ কোটি টাকা। এই বাজেটের একটি বড় অংশ সরাসরি সমতল অঞ্চলের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের জন্য এককালীন বৃত্তি দেয়া হয়। এই বৃত্তির পরিমাণও ভালো। এতে আদিবাসী ছাত্ররা বেশ উপকৃত হয়। এই বৃত্তির টাকায় তারা ৪ থেকে ৬ মাস অবস্থাভেদে চলতে পারে। আবার গত কয়েক বছর ধরে মৎস ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতায় সমতল ভূমিতে বসবাসরত অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক ও জীবন মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সমন্বিত প্রাণী সম্পদ উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছিল ৪৬ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা। এই টাকা দিয়ে সমতলের আদিবাসীদের জন্য গবাদি পশু ও বাসস্থান তৈরির সরঞ্জাম (ইট) দেয়া হয়। এটিও ভালো উদ্যোগ। এই ধরনের স্বতন্ত্র, সুনির্দিষ্ট ও সরাসরি বাজেট বরাদ্দ রাখা খুব উপকারী প্রান্তিক আদিবাসীদের জন্য। যেহেতু আদিবাসীরা অতীতে নানাকারণে শোষণ, বৈষম্য ও মানবসৃষ্ট দারিদ্র ও বঞ্চনার শিকার হয়েছে, তাই বরাদ্দ তাদের জনসংখ্যার অনুপাতে আরো বেশি হওয়া উচিত।

৪.
আমি অর্থনীতিবিদ নই বা বাজেট বিষয়ে জ্ঞানী কেউ নই। বাজেট ও আদিবাসী বিষয়ে কথা বলবার যে টুকু অধিকার আমার আছে, তার ভিত্তি হলো; আমি নিজে এ সমাজের একজন মানুষ এবং এই জীবনে আমার সামান্য দুঃখ-ভারাক্রান্ত অভিজ্ঞতা। বলতে পারেন জীবন-অভিজ্ঞতা, যা সুখকর নয়। মাননীয় অর্থমন্ত্রী দয়া পরবশ হয়ে সমতলের প্রায় ৩০ লক্ষাধিক আদিবাসী মানুষের জন্য গত বছর ৮০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ রেখেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অধীনে। এবার হয়তো এই পরিমাণ আরো একটু বাড়বে, আশা করছি। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, কিভাবে এই বাজেট বাস্তবায়নে স্থানীয় পর্যায়ে আদিবাসী প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করতে পারে, সেটি নিশ্চিত করা এবং এই জন্য একটি ইনক্লুসিভ ম্যাকানিজম থাকা জরুরি। আদিবাসীদের সত্যিই উন্নয়নের ধারায় আনতে হলে, এসডিজি’র লক্ষ্য পূরণ করতে হলে, লীভ নো ওয়ান বিহাইন্ড বাস্তবায়ন করতে হলে অবশ্যই জাতীয় বাজেটে পৃথকভাবে যথেষ্ট বরাদ্দ প্রয়োজন। আদিবাসী বিষয়ক সংসদীয় ককাস একবার এই থোক বরাদ্দ ৫ হাজার কোটি টাকা দাবি করেছিলেন।

“সবার জন্য সমান অধিকার” – এই কথাটি শুনতে সুন্দর। আমরা সবাই মানুষ, ‘সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই’, কথাটিও সত্য। প্রকৃত সত্য হলো, বিদ্যমান ব্যবস্থায় মানুষে মানুষে, জাতিতে জাতিতে, রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে বৈষম্য আছে। এমনি বৈষম্য-ভেদাভেদপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থা আমরা চালু রেখেছি। ‘একটি অন্যরকম পৃথিবী সম্ভব’ (Another world is possible) বলে ওয়ার্ল্ড স্যোশাল ফোরাম আন্দোলন করছে। তাই এই বাস্তবতায় সবার জন্য সমান অধিকার ও সুযোগ নিশ্চিত না করে “আমরা সবাই সমান” এই ধরনের কথা বললে, আদিবাসী ও অন্যান্য প্রান্তিক মানুষের উপর ঐতিহাসিক যে নিপীড়ন, বৈষম্য ও শোষণ চলেছে, তাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়া হয়। এতে আদিবাসী জীবনে শোষণ ও বঞ্চনা নিয়তির মতো লেগে থাকে। বহুকাল ধরে আদিবাসী জীবনে জাতীয় বাজেট বরাদ্দ বা ব্যাপক উন্নয়নের অর্থপূর্ণ প্রতিফলন নেই। শুধু আমাদের দেশে নয়, বিশ্বের অনেক দেশে।

আজকেও তাই আদিবাসী ও বাজেট ভাবনা নিয়ে কিছু বলতে গিয়ে সব সময়ের মতো প্রখ্যাত লেখক, ম্যাগসেসে পুরষ্কারপ্রাপ্ত, পদ্মভিভূষণ উপাধিতে ভূষিত, বিখ্যাত সব উপন্যাস হাজার চুরাশির মা, অরণ্যের অধিকার ও রুদালির রচয়িতা মহাশ্বেতা দেবীর দ্বারস্থ হলাম। বিখ্যাত এই মানুষটি তার গঙ্গা-যমুনা-ডুলং-চাকা প্রবন্ধে লিখেছেন, “আমি মনে করি ভারতবর্ষে শাসনব্যবস্থা মূলস্রোত-চিন্তা দ্বারা প্রভাবিত ও নিয়ন্ত্রিত। সরকার আদি-তফসিলীদের জন্য এত রকম কাগুজে ব্যবস্থা এই জন্য করেছেন যে, সরকার জানেন ওদেরকে পশ্চাৎপদ করেই রাখা হয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জীবিকা, জমির হক, বনজ সম্পদে অধিকার, জীবনের সব ক্ষেত্রেই ওরা বঞ্চিত। এই জন্য এত আইন ও স্কীম। কেন্দ্র ও রাজ্য – সব মিলিয়েই আমি “সরকার” শব্দটি ব্যবহার করলাম। আদিবাসী সংস্কৃতি, ভাষা, সমাজ সংগঠন, সবকিছুর অস্তিত্বই বিপন্ন এবং এটাই ভারতের আদিবাসীর ইতিহাস, যে ইতিহাস মানবসৃষ্ট। ওরা মূলস্রোত থেকে দূরে আছেন। মূলস্রোত ওদেরকে ভারতবর্ষ শব্দটির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ বলে কোনদিন ভেবেছে কিনা আত্মজিজ্ঞাসা করতে অনুরোধ করি। একটি প্রশ্ন বহুকাল ধরে করে আসছি। আইটিডিপি এলাকায় এবং আদিবাসীদের জন্য সমুদ্রসমান টাকা আসছে, খরচ হচ্ছে। আইটিডিপি এলাকা, আদিবাসী জীবন, মূলত আদিবাসী প্রধান এলাকা (সিংভূম, সাঁওতাল পরগনা, রাঁচি, পালামৌ, হাজারিবাগ); এসব জায়গায় ও আদিবাসী জীবনে ওই বিপুল অর্থ ব্যয়ের প্রতিফলন নেই কেন? কেন তারা ভূমিহীন, দেশান্তরী মজুর, শিক্ষায় এত পিছনে, তৃষ্ণার জলে, সেচের জলে বঞ্চিত? ধনী বা উচ্চ মধ্যবিত্ত আদিবাসী কতজন আছেন? এসব টাকা কোথায় যাচ্ছে? সরকারি নিয়ম মতে, যে সব বিশেষ ব্যবস্থার কথা বলেছি তার বাইরে সেচ-পূর্ত-কৃষি-শিক্ষা, এমন প্রতি দপ্তরের জন্য ৪% টাকা আদিবাসী উন্নয়নে খরচ হওয়ার কথা। বাস্তবে কী হচ্ছে? গরুকে খাওয়ান, সে স্বাস্থ্যপুষ্ট হবে। ঘর সাফ করুন, ঘর পরিস্কার হবে। বই পড়ুন অনেক, জ্ঞান বাড়বে। গাছ লাগিয়ে যান ও যত্ন করুন, সে ফুল-ফল-পাতা দেবে। অর্থাৎ যত্ন, অর্থ ব্যয়ের প্রতিফলন একটা ছোট-বড় মাপের ক্ষেত্রেই ইতিবাচক হতে বাধ্য। ভারতবর্ষের সমগ্র আদিবাসী জীবনে, আদিবাসীর জন্য যে ব্যয় হচ্ছে তার প্রতিফলন নেই। তার কারণও সহজবোধ্য (বুঝতে চাইলে), এগুলির যথার্থ রূপায়ণ নেই, তার চেষ্টাও করা হয়নি।” ভারতের অনেক রাজ্যে আদিবাসী জনগণ আত্ম-নিয়ন্ত্রণ অধিকার ভোগ করছে, স্ব-শাসন ব্যবস্থা সেখানে আছে। এত সবের পরও অনেক রাজ্যে ‘বৃহত্তর স্ব-শাসনের জন্য’ তারা কাজ করছে। তারপরও মহাশ্বেতা দেবী এই কথাগুলো বলেছেন। আমাদের দেশের আদিবাসীদের দশা আরোও করুণ। এর কারণ জাতিসংঘ বলেছে, ঐতিহাসিকভাবেই (Historically) বিশ্বের আদিবাসী জনগণ নানা শোষণ ও বঞ্চনার শিকার।

তবে আমি প্রশংসা করবো, গত কয়েক বছর ধরে সরকার সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী, ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন, হিজরা জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন, দলিত, হরিজন, চা শ্রমিক, ভবঘুরে ও বেদে জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কার্যক্রম ইত্যাদি হাতে নিয়েছেন। আবার পৃথকভাবে বেদে জনগোষ্ঠীর জন্য, হিজরাদের জন্য, চা শ্রমিকদের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তাছাড়া প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা বাজেট রাখা হয়েছে। পরিমাণও বেশি। পথশিশু, ভিক্ষুকদের জন্য বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। কিন্তু তুলনামূলক বিচারে আদিবাসীরা বরাবরের মতো উপেক্ষিত।

আমরা দেখেছি, দেশের মানুষের মাথাপিছু আয়ের হিসাব এখন বলছে ২,০৬৪ ডলার। এই মাথাপিছু আয় বেড়েই চলেছে। কিন্তু আমরা বিভিন্ন গবেষণায় দেখতে পাই, আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে দারিদ্রের হার বেড়ে প্রায় ৬০ শতাংশের ওপরে। রাঙ্গামাটি আর বান্দরবানে এই দারিদ্রের হার যথাক্রমে ৬৪ শতাংশ এবং ৬৩ শতাংশ। সমতল অঞ্চলের আদিবাসী অধ্যুষিত জেলা দিনাজপুরে এই হার ৬৪.৩ শতাংশ। আদিবাসীদের মাথাপিছু আয় জাতীয় গড় থেকেও অনেক কম। পাহাড়ের আদিবাসীদের ক্ষেত্রে ২৬ শতাংশ কম, সমতলের আদিবাসীদের ক্ষেত্রে ৪১ শতাংশ কম। সমতলের দুই-তৃতীয়াংশ আদিবাসী কার্যত ভূমিহীন (আদিবাসী নেভিগেটর, আইএলও এবং কাপেং ফাউন্ডেশন ২০১৯)।

৫.
বাজেট ও আদিবাসী জনসংখ্যা
বাজেটে আদিবাসীদের জন্য বরাদ্দ কী পরিমাণ হবে, এ ক্ষেত্রে একটি সমস্যা হলো, আদিবাসীদের সঠিক সংখ্যা নিরূপণ না হওয়া এবং প্রকৃত আদিবাসী জনসংখ্যা কত, তা না জানা। সরকারের কাছে যে তথ্য আছে তা হলো ২০১১ সালের লোকগণনা অনুযায়ী ২৭টি নৃগোষ্ঠী (প্রকৃতপক্ষে ২৪টি) বা আদিবাসী তালিকার ১৬ লাখ জনসংখ্যা। অথচ ২০১৯ সালে মার্চ মাসে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় গেজেট প্রকাশ করেছে ৫০টি আদিবাসী বা নৃগোষ্ঠী তালিকা। এতে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, ২০১১ সালের লোকগণনায় অর্ধেকের বেশি জাতি বাদ পড়েছে এবং সেই সংখ্যায় অনেক ভুলভ্রান্তি রয়েছে।

আদিবাসী জনগণ বাংলাদেশের সবচেয়ে বঞ্চিত, দরিদ্র ও অনগ্রসর অংশের মধ্যে অন্যতম। বাজেট সাধারণত বরাদ্দ হয় মন্ত্রণালয়ভিত্তিক। যেহেতু সমতলের আদিবাসীদের জন্য কোনো মন্ত্রণালয় নেই, তাই বাজেট বরাদ্দও আলাদাভাবে নেই। আদিবাসীদের জন্য উন্নয়নমূলক বরাদ্দ মূলত সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন একটি কর্মসূচির মাধ্যমে দেওয়া হয়।

২০১৯-২০ অর্থ বছরে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বাজেট বরাদ্দ রাখা হয়েছিল ১,১৯৪ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ১,৩০৯ কোটি টাকা। গত বছর ২০২০-২১ অর্থ বছরের জন্য পার্বত্য মন্ত্রণালয়ে বাজেট ছিল ১,২৩৫ কোটি টাকা (যার মধ্যে উন্নয়ন ব্যয় ৮৬৪ কোটি টাকা এবং পরিচালন ব্যয় ৩৭১ কোটি টাকা)। এই বরাদ্দ পার্বত্য মন্ত্রণালয়সহ পাহাড়ের সকলের জন্য প্রযোজ্য। পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি পার্বত্য শান্তি চুক্তির মাধ্যমে একটি আঞ্চলিক পরিষদ গঠিত হয়েছিল। অথচ এই আঞ্চলিক পরিষদকে তাদের বরাদ্দের জন্য মুখ চেয়ে থাকতে হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দিকে।

৬.
সামাজিক সুরক্ষা বেষ্টনী
সামাজিক সুরক্ষা বেষ্টনির জন্য দিন দিন বাজেট আকার বাড়ছে, যা প্রশংসাযোগ্য। গত অর্থ-বছরে (২০২০-২১) সামাজিক সুরক্ষায় বাজেট ছিল ৯৫ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা, যা বাজেটের ১৬.৮৩ শতাংশ এবং জিডিপির ৩.০১ শতাংশ। কিন্তু দুঃখজনক হলো, সামাজিক সুরক্ষার এই বাজেটে আদিবাসীদের উল্লেখ করে বা অগ্রাধিকার দিয়ে কোন নির্দেশনা নেই। তবে স্থানীয় পর্যায়ে আদিবাসী যোগ্য নাগরিকেরাও এই সামাজিক বেষ্টনির সুফল পেয়ে থাকে। আমাদের দাবি হলো, এই খাতে বরাদ্দ প্রদানের সময় আদিবাসীদের উল্লেখ করে একটি সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা বা নীতিমালা থাকা জরুরি। এই নীতিমালা না থাকা এবং আদিবাসীদের উল্লেখ না থাকার কারণে আমরা বিগত বছরগুলোতে দেখেছি, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচী: ভিজিএফ, ভিজিডি, এফএফই, কাবিখা, কাবিটা ইত্যাদি খাতগুলোতে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তি বা অভিগম্যতা খুব কম। টিআইবি-এর একটি গবেষণায় ওঠে এসেছে, একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড পেতে নিয়মবহির্ভূতভাবে ৫০০-৫,০০০ টাকা, প্রতিবন্ধী ভাতা পেতে ১,০০০-৫,০০০ টাকা, বিধবা ভাতা পেতে ৫০০-২,০০০ টাকা, মাতৃত্বকালীন ভাতা পেতে ৫০০-৪,০০০ টাকা, ভিজিএফ/ভিজিডি ১,০০০-২,০০০ টাকা, গৃহ নির্মাণে ৬,০০০-২০,০০০ টাকা আদিবাসীদের কাছ থেকে নেওয়া হয়। আদিবাসীরা অধিকাংশই প্রান্তিক ও গরীব। এমনও আদিবাসী জনগণ রয়েছে যে অভাবে বা খাদ্য সংকটে পড়ে, না খেয়ে মারা যাবে কিন্তু অন্যের কাছে হাত পাততে যাবে না। এই করোনা মহামারি সময়েও আমরা এর নজির দেখছি (সূত্রঃ সোহেল হাজং)।

৭. ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগণ ও সংখ্যালঘু কমিশন
সরকার (আওয়ামী লীগ) ২০১৮ নির্বাচনী ইশতেহারে অঙ্গীকার করেছে একটি সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের। কথটা ভালো। তবে প্রায় আড়াই বছর চলে গেল, এই সংখ্যালঘু কমিশন নিয়ে নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে কোনো কথা বলতে শুনিনি। কোনো আলোচনা হয়েছে বলে জানি না। রানা দা, কাজল দা, নির্মল দা জানেন কিনা জানি না। উনারা হয়তো বলতে পারবেন। গত দুই বারের বাজেটে এই বিষয়ে কোনো বাজেট বরাদ্দ নেই। কোনো ভাবনা আছে বলে কোনো লক্ষণ দেখছি না। এবার বাজেটে সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের জন্য বরাদ্দ রাখা হোক। একটি স্টাডি কমিশন করা হোক, যারা দেখবেন ভারতের সংখ্যালঘু কমিশনসহ অন্যত্র কিভাবে চলছে এই ধরনের কমিশন। কাজটি দ্রুত হওয়া আবশ্যক। জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতি অবহেলা ও উপেক্ষা যে কত ভয়াবহ, এবং হৃদয়বিদারক পর্যায়ে চলে গেছে স্বাধীনতার ৫০ বছরে, তা এই টেবিল দেখলে প্রমাণিত হয়। সুবর্ণ জয়ন্তী সবার জন্য সুবর্ণ নয়, আনন্দময় সুখস্মৃতিময় নয়, যা অতি দুঃখজনক। একজন সংখ্যালঘু মানুষের চোখ দিয়ে তার জীবনকে দেখতে চেষ্টা না করলে মানুষের, নাগরিকের এই অস্ফুট নীরব বেদনা অনুভব করা সম্ভব না।

নীচে কিছু তথ্য দিচ্ছি।
হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রীস্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ (২০১৮-১৯, ২০১৯-২০ ও ২০২০-২১)
১ হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট ০-(২০১৮-২০১৯), ০-(২০১৯-২০২০), ১৭,৭০,৯৪,৫১৮ টাকা(২০২০-২০২১)
২ বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা (২০১৮-২০১৯), ০-(২০১৯-২০২০), ০-(২০২০-২০২১)
৩ খ্রীষ্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট ৫৪ লক্ষ ৫০ হাজার(২০১৮-২০১৯), ০-(২০১৯-২০২০), ০-(২০২০-২০২১)
তথ্য সূত্র: হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রীষ্টানধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট ওয়েবসাইট।(অনিবার্য কারণে ছকটির ফরম্যাট ইষৎ পরিবর্তন করা হয়েছে)

এই বাজেট অনেক বৃদ্ধি করা বাঞ্ছনীয়।

শেষের কিছু কথা
আমি আদিবাসীদের বিষয়ে মূলত আলোচনা করেছি। অন্যরা নিশ্চয় ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের কথা বলবেন। নানা কারণে আদিবাসী জনগণ উন্নয়নের সুফল সবার মতো সমানভাবে পাচ্ছে না। তাই কিছু সময়ের জন্য (নিশ্চয় অনন্তকাল ধরে নয়) আদিবাসীদের এগিয়ে নিতে নতুন ভাবনায় জাতীয় বাজেটে পৃথক ও বিশেষ বরাদ্দ রাখা প্রয়োজন। একটি ঝঢ়বপরধষ সবধংঁৎবং নেয়া দরকার। আমি এ লেখায় আমাদের পাশের দেশের উদাহরণ তুলে ধরেছি। আদিবাসী তরুণদের কর্মসংস্থান ও দক্ষতা বাড়ানোর জন্য প্রশিক্ষণ ও কর্মমুখী শিক্ষা এবং চাকুরির নিশ্চয়তাসহ আত্মকর্ম সংস্থান যাতে তারা করতে পারে, সে জন্য বাজেটে ব্যবস্থা রাখা প্রয়োজন। এতে শহরে মাইগ্রেশনও কমে যাবে। আদিবাসী তরুণদের কর্মসংস্থানের জন্য আলাদা বরাদ্দ রাখতে হবে। এই করোনার সময়ে বিশেষ প্রণোদনার দাবি জানাচ্ছি।

এখানে আপনাদের আলোচনার জন্য কয়েকটি দাবি উত্থাপন করছিঃ

১. এবার করোনার কারণে আদিবাসী মানুষ এবং অন্যান্য প্রান্তিক মানুষ সাংঘাতিক অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সম্মুখিন হয়েছেন। করোনার মারত্মক প্রভাব পড়েছে এদের জীবনে। তাই আগামী বাজেটে এদের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক প্রণোদনা সুপারিশ করছি।
২. এবার জাতীয় বাজেটে অতীতের মতো পৃথক অনুচ্ছেদ যুক্ত করে আদিবাসী জনগণের উন্নয়নের জন্য অর্থ বরাদ্দ রাখতে হবে। বাজেট বক্তৃতায় ছোট হলেও একটি প্যারাগ্রাফ আদিবাসী বিষয়ে বিবরণী থাকতে হবে।
৩. বাজেট বরাদ্দ সাধারণত হয় মন্ত্রণালয়ভিত্তিক। সমতলের আদিবাসীদের জন্য একটি স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি দীর্ঘদিনের। এখন পর্যন্ত বিষয়টি দেখার জন্য যেহেতু কোনো মন্ত্রণালয় বা বিভাগ নেই, সে জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এই থোক বরাদ্দ পরিচালনার জন্য সমতলের আদিবাসীদের সমন্বয়ে একটি উপদেষ্টা কমিটি বা বোর্ড গঠন করা যেতে পারে। এতে দুর্নীতি রোধসহ এই তহবিলের অপচয় রোধ হবে।
৪. পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়, আঞ্চলিক পরিষদ ও জেলা পরিষদসমূহের বাজেট বৃদ্ধি করা।
৫. সকল মন্ত্রণালয়ের/বিভাগের বাজেটে আদিবাসীদের উল্লেখ করে সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ রাখা এবং বরাদ্দের সুষ্ঠু বাস্তবায়নে আদিবাসীদের কীভাবে সম্পৃত্ত করা যায়, সে বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ন করা।
৬. আদিবাসী বা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক একাডেমীগুলোতে গবেষণাসহ আদিবাসী সংস্কৃতি উন্নয়নে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা।
৭. সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী ও সামাজিক ক্ষমতায়নের বাজেট খাতে আদিবাসী উপকারভোগী যাতে নিশ্চিত হয়, তার জন্য এ বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান।
৮. উচ্চ শিক্ষা ও কারিগরী শিক্ষায় বৃত্তিসহ আদিবাসী নারী ও তরুণদের আত্ম-কর্ম সংস্থানের জন্য বাজেট বরাদ্দ রাখা।
৯. এসডিজি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় আদিবাসী জনগণ ও সংগঠনসমূহকে সম্পৃত্ত করা এবং এজন্য একটি ম্যাকানিজম তৈরি করা।
১০. অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় আদিবাসী বা নৃ-গোষ্ঠী জনগণের জন্য অঙ্গীকার বাস্তবায়নে আদিবাসীদের সমন্বয়ে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন, যাতে সুষ্ঠুভাবে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয় এবং আদিবাসীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হতে পারে। এই খাতে প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ রাখা।
১১. হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট, খ্রীস্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের বাজেট বৃদ্ধিসহ সংখ্যালঘুদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ রাখা।

সঞ্জীব দ্রং: লেখক ও সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম। ‘জাতীয় বাজেট ও আদিবাসী’ শীর্ষক এই লেখাটি তিনি আজ (৮ মে ২০২১) বাংলাদেশের আদিবাসী ও সংখ্যালঘু বিষয়ক সংসদীয় ককাস কর্তৃক আয়োজিত এক ভার্চুয়াল আলোচনায় লিখিত প্রবন্ধ হিসেবে পাঠ করেন। লেখাটি সুধী পাঠকের জন্য হুবহু প্রকাশ করা হল।

More From Author