হিল ভয়েস, ১২ মে ২০২১, রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলাধীন কাপ্তাই উপজেলার রাইখালীতে সেনাবাহিনী কর্তৃক পঞ্চাশোর্ধ এক নিরীহ জুম্ম আটক, বেদম মারধর ও মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা গেছে, সেনাবাহিনী ওই ব্যক্তিকে ক্যাম্পে আটক রেখে সারা রাত নির্যাতনের পর চন্দ্রঘোনা থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করে।
ভুক্তভোগী জুম্ম গ্রামবাসীর নাম মিথ্যাবান তঞ্চঙ্গ্যা (৫২), পীং-রায়মোহন তঞ্চঙ্গ্যা, গ্রাম-ভালুক্যা, রাইখালী ইউনিয়ন। পেশায় তিনি একজন চাষী বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ মে ২০২১ রাত আনুমানিক ৮:০০ টার দিকে নতুন স্থাপিত ভালুক্যা নারানগিরি ১নং সেনা ক্যাম্পের কম্যান্ডার সুবেদার নাজমুলের নেতৃত্বে ৮-১০ জনের একটি সেনাদল একটি জীপে গিয়ে মিথ্যাবান তঞ্চঙ্গ্যাকে নিজ বাড়ি থেকে চোখে কালো কাপড় বেঁধে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেনা সদস্যরা সারারাত মিথ্যাবান তঞ্চঙ্গ্যাকে ক্যাম্পে জিম্মি রেখে অমানবিকভাবে মারধর করে এবং মারধরের ফলে মিথ্যাবান তঞ্চঙ্গ্যার চোখ-মুখসহ সারা শরীরে জখমের চিহ্ন সৃষ্টি হয়।
পরদিন (১১ মে ২০২১) সকালে মিথ্যাবান তঞ্চঙ্গ্যার পরিবারের পক্ষ থেকে ভালুক্যা নারানগিরি ১নং সেনা ক্যাম্পে খোঁজ নিতে গেলে ক্যাম্প কর্তৃপক্ষ মিথ্যাবান তঞ্চঙ্গ্যাকে আটক করার ঘটনাটি অস্বীকার করে। এসময় সেনা সদস্যরা মিথ্যাবান তঞ্চঙ্গ্যাকে অন্যত্র খোঁজ নিতে বলে।
পরে মিথ্যাবান তঞ্চঙ্গ্যার পরিবারের লোকজন বাঙ্গালহালিয়া সেনা ক্যাম্প, কুকিমারা সেনা ক্যাম্প, স্থানীয় নেভী ক্যাম্পে খোঁজ নিলে সেখানেও ঘটনাটি অস্বীকার করা হয়।
এরপর ঐ দিনই সকাল আনুমানিক ১১:০০ টার দিকে চন্দ্রঘোনা থানা থেকে মিথ্যাবান তঞ্চঙ্গ্যার মুঠোফোন দিয়ে মিথ্যাবান তঞ্চঙ্গ্যার পরিবারের নিকট ফোন করা হয় এবং পরিবারের সদস্যদের চন্দ্রঘোনা থানায় যোগাযোগ করতে বলা হয়।
এরপর মিথ্যাবান তঞ্চঙ্গ্যার পরিবারের লোকজন চন্দ্রঘোনা থানায় গেলে জানতে পারেন যে, মিথ্যাবান তঞ্চঙ্গ্যাকে পুরনো এক হত্যা মামলায় মিথ্যাভাবে জড়িত করে মামলার আসামী করা হয়েছে।
জানা গেছে, সেনা সদস্যরা সারারাত মিথ্যাবান তঞ্চঙ্গ্যাকে ভালুক্যা নারানগিরি ১নং সেনা ক্যাম্পে জিম্মি রেখে অমানবিকভাবে মারধর করে এবং মারধরের ফলে মিথ্যাবান তঞ্চঙ্গ্যার চোখ-মুখসহ সারা শরীরে জখমের চিহ্ন সৃষ্টি হয়েছে।