হিল ভয়েস, ২৩ এপ্রিল ২০২১, রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলাধীন রাজস্থলী উপজেলার বাঙ্গালহালিয়ায় সেনাবাহিনী কর্তৃক স্থানীয় জুম্ম ও বাঙালি মুরুব্বিদের ডেকে সন্ত্রাসী সংগঠন ‘মগ লিবারেশন পার্টি’কে সহযোগিতা করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে গোপন সূত্রে খবর পাওয়া গেছে। সহযোগিতা না করলে অসুবিধা হবে বলেও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
উক্ত বৈঠকে অংশগ্রহণকারী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মুরুব্বির কাছে এই বৈঠকের খবর পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ এপ্রিল ২০২১ রাত আনুমানিক ৯:০০ টার দিকে সেনাবাহিনী কর্তৃক রাজস্থলীর স্থানীয় কিছু জুম্ম ও বাঙালি মুরুব্বিদের ডেকে বাঙ্গালহালিয়া সেনা ক্যাম্পে এক গোপন বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে মূল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কাপ্তাই সেনা জোনের টুআইসি মেজর মো: মাহমুদ।
বৈঠকে টুআইসি মেজর মো: মাহমুদ উপস্থিত স্থানীয় মুরুব্বিদেরকে সরাসরি বলেন যে, ‘মগ পার্টি আমাদের সংগঠন। আপনারা যেভাবে পারেন মগ পার্টিকে টিকিয়ে রাখতে হবে এবং তাদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যদি মগ পার্টিকে সাহায্য-সহযোগিতা না করেন তাহলে যেকোনো সময় অসুবিধা হতে পারে।’
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে রাজস্থলী উপজেলার গাইন্দ্যা ইউনিয়নের পোয়াইতু পাড়া এলাকায় মগ পার্টির সশস্ত্র ঘাটি থাকার কথা জানা গেছে। শুরু থেকে স্থানীয় সেনাবাহিনী ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ এই মগ পার্টিকে মদদ ও আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
গত ১৯ এপ্রিল ২০২১ রাত আনুমানিক ৩:৩০ টার দিকে রাজস্থলী থেকে বান্দরবানে যাওয়ার পথে বান্দরবানের কুহালং ইউনিয়নের ডলুপাড়া চেকপোস্টে সেনা ও পুলিশ সদস্যদের হাতে অস্ত্রসহ মগ লিবারেশন পার্টির দুই সদস্য যার মধ্যে একজন আওয়ামীলীগের ইউনিয়ন সভাপতি আটক হয়েছেন বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, গত ২৩ ডিসেম্বর ২০২০ সকালের দিকে সেনাবাহিনীর ২৩ বেঙ্গলের রাজস্থলী সদর সেনা সাব-জোনের মেজর মঞ্জুরের নেতৃত্বে স্থানীয় সেনা কর্তৃপক্ষের সাথে মগ পার্টির প্রতিনিধিদের এক জরুরি গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। বৈঠকে মগ পার্টির প্রতিনিধি হিসেবে সবুজ মারমা, ক্যথোয়াই মারমাসহ কয়েকজন অংশগ্রহণ করেন বলে জানা যায়।
ঐ বৈঠকে রাজস্থলী সদর সেনা সাব-জোনের কম্যান্ডার মেজর মঞ্জুর সন্ত্রাসী দল ‘মগপার্টি’র প্রতিনিধিদের বলেন, ‘আমরা লাশ চাই, আমাদেরকে লাশ দেখাও। তোমরা কোথা থেকে লাশ আনবে আমরা জানি না।’ বৈঠকে মেজর মঞ্জুর মগ পার্টির প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘তোমরা তো মাত্র ২৩ জন। তোমরা তো কিছু করতে পারছো না। তোমাদেরকে বারবার মেরে যাচ্ছে। তোমরা তো শুধু বসে বসে খাচ্ছ। চাঁদা তুলছ। জেএসএস’কে তো কিছু করতে পারছো না।’
মেজর মঞ্জুর আরও বলেন, ‘জেএসএস এর যারা সমর্থক, কাজ করে তাদেরকে না হয় মেরে ফেল। আমাদেরকে লাশ দেখাও। তোমরা কোথা থেকে লাশ আনবে আমরা জানি না।’