হিল ভয়েস, ২ এপ্রিল ২০২১, রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলাধীন বাঘাইছড়ি উপজেলার পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বাঘাইছড়ি থানায় আবারও মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত ৩১ মার্চ ২০২১ সেনামদদপুষ্ট সংস্কারপন্থী সন্ত্রাসী দলের কম্যান্ডার বিশ্বমিত্র চাকমা ওরফে যুদ্ধ চাকমা বাঘাইছড়ি পৌরসভার বাবুপাড়া এলাকায় তাদের আস্তানায় নিজের দেহরক্ষী সুজন চাকমার ব্রাশফায়ারে নিহত হন। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু উক্ত হত্যাকান্ডেরই জের ধরে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বাঘাইছড়ি উপজেলার জনসংহতি সমিতির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ১ এপ্রিল ২০২১ ষড়যন্ত্রমূলক এই মামলাটি দায়ের করেন নিহত যুদ্ধ চাকমার বড় ভাই অশোক কুমার চাকমা (৬০), পীং-মৃত জাগারাম চাকমা, গ্রাম-ডাঙ্গাছড়া। বাঘাইছড়ি থানায় দায়েরকৃত মামলা নং-০১, তারিখ: ০১/০৪/২০২১ খ্রি:, ধারা- ৩০২/৩৪ দন্ডবিধি।
মামলায় কথিত গুলিবর্ষণকারী ও নিহত যুদ্ধ চাকমার দেহরক্ষী সুজন চাকমাকে এক নম্বর আসামী করা হলেও অবশিষ্ট উল্লিখিত ৯ জন আসামীর সবাই জনসংহতি সমিতির নেতাকর্মী ও সমর্থক। মামলায় অভিযুক্ত ১০ জনের নাম উল্লেখ থাকলেও অজ্ঞাতনামা আরও ৮/১০ জন জুম্মকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
মামলায় মিথ্যাভাবে অভিযুক্ত জনসংহতি সমিতির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা হলেন- ১। বড়ঋষি চাকমা (৪১), পীং-মৃত হিরণ কুমার চাকমা, গ্রাম-তুলাবান; ২। দয়াসিন্ধু চাকমা (৪৩), পীং-মৃণাল কান্তি চাকমা, গ্রাম-মধ্যম বাঘাইছড়ি; ৩। পলক তালুকদার (৪৮), পীং-মৃত ললিত কুমার তালুকদার, গ্রাম-বাবুপাড়া; ৪। ত্রিদীব চাকমা দীপবাবু (৫৫), পীং-মৃত কামদেব চাকমা, গ্রাম-সিজকমুখ; ৫। খোকন চাকমা (৪৮), পীং-মৃত উৎপল কান্তি চাকমা, গ্রাম-কদমতলী; ৬। শান্তি বিজয় চাকমা মজাক্যা (৩০), পীং-মৃত চেবাচরণ চাকমা, গ্রাম-কদমতলী; ৭। জ্ঞান প্রকাশ চাকমা সুজেন বাবু (৫৫), পীং-রায়চন্দ্র চাকমা, গ্রাম-সার্বোয়াতলী; ৮। সুঅতীষ চাকমা টন্তুমনি (৪৩), পীং-মৃত আনন্দ বিলাস চাকমা, গ্রাম-নলবানিয়া; ৯। মনিময় চাকমা (৩০), পীং-সুমনজয় চাকমা, গ্রাম-চদগীছড়া।
জানা গেছে, উক্ত ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন যাবৎ বাঘাইছড়ি এলাকায় থাকেন না। সংস্কারপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ও কায়েমী স্বার্থবাদী প্রশাসনের ষড়যন্ত্রে তাদের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের করার কারণে তারা অনেক আগে নিরাপত্তার স্বার্থে বাঘাইছড়ি এলাকা ছেড়ে অন্যত্র বসবাস করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক মুরুব্বী বলেন, কোন সহিংস ঘটনা ঘটলেই একটি মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পূর্বের মিথ্যা মামলার তালিকা দেখে মনগড়াভাবে এসব জনসংহতি সমিতির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে থাকে। যা ভিত্তিহীন ও হাস্যকর।
উক্ত মুরুব্বী আরো বলেন, মূলত জনসংহতি সমিতিকে এবং পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই এইসব মিথ্যা মামলা দেয়া হয়ে থাকে।