হিল ভয়েস, ৮ এপ্রিল ২০২১, বান্দরবান: বান্দরবান পার্বত্য জেলাধীন আলীকদম উপজেলার ১নং সদর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ১০ কিলো নামক এলাকায় থানচি সড়ক সংলগ্ন ম্যান কার্বারি পাড়ার ফুলঝিরি নামক ঝিরি থেকে অবৈধভাবে অবাধে পরিবেশ বিধ্বংসী পাথর উত্তোলন চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় অবৈধ পাথর ব্যবসায়ীরা এই পাথর উত্তোলনের কাজ চালালেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে আজ অবধি কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি বলে জানা গেছে।
গতকাল ৭ এপ্রিল ২০২১ ঐ এলাকায় সরেজমিন পরিদর্শন করে তার সত্যতা পাওয়া গেছে। ঝিরিতে বেশ কয়েকজন বহিরাগত বাঙালি শ্রমিক ছাড়াও কয়েকজন পাহাড়ি জুম্মকেও পাথর উত্তোলন করতে দেখা গেছে। সেখানে ঝিরির বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি পাথরের স্তুপ দেখা গেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পাথর খেকো এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে তাদের এই কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। পাথর খেকো এই চক্রটির প্রধান হলেন- আলীকদম পান বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সাবেক সভাপতি মোঃ ওমর ফারুক (৫১), মোটর বাইক মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ আবছার (৫০) এবং ব্যবসায়ী নজরুল (৫৮)। আর তাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করছে স্বয়ং ম্যান কার্বারী পাড়ার প্রধান ম্যান তঞ্চঁঙ্গ্যা (কার্বারী) এবং অজিরা তঞ্চঙ্গ্যা নামের আরও একজন স্থানীয় গ্রামবাসী।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন তঞ্চঙ্গ্যা ও ম্রো সম্প্রদায়ের গ্রামবাসী জানিয়েছেন, এই পাথর খেকো চক্র মাস তিনেক আগে ফুল ঝিরি নামক ঝিরি থেকে যখন প্রথম পাথর উত্তোলন করতে যায়, তখন স্থানীয় জনগণ প্রতিবাদ জানায়। এরপর পাথরখেকো চক্র তাদের কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত রাখে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, অবৈধ পাথর ব্যবসায়ীরা ইতোমধ্যে টাকার বিনিময়ে কয়েকজন স্থানীয়কে হাতে নিয়ে সম্প্রতি তাদের কার্যক্রম পুরোদমে পুনরায় চালু করেছে। পাথর উত্তোলনকারীরা এখন মহা-সমারোহে সেখানে পাথর উত্তোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এমন কি সেখানে এই চক্র পাথর ভাঙ্গানোর জন্য মেশিন স্থাপন করে প্রতিনিয়ত পাথর উত্তোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিমত, এমতাবস্থায় যদি প্রশাসন ও সচেতন মহল শীঘ্রই পাথরখেকো চক্রের এমন ঘৃণ্যকর্মের বিরুদ্ধে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, তাহলে ফুলঝিরিটি মৃত ঝিরিতে রূপ নিতে আর বেশিদিন সময় লাগবে না। এতে শুধু ঝিরিটি মরে যাবে না, ঝিরির মাছ, কাঁকড়া মরে যাবে এবং এলাকার লোকজন, পশুপাখি ও পরিবেশের উপর দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।