হিল ভয়েস, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১, খাগড়াছড়ি: গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ খাগড়াছড়ি জেলাধীন মাটিরাঙ্গা উপজেলার তবলছড়ি ইউনিয়নের লাইফুপাড়া এলাকায় সেটেলার যুবক মনসুর আলী (২৮) কর্তৃক স্কুলগামী এক ত্রিপুরা ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। থানায় বিচার চাইতে গিয়ে উল্টো ভুক্তভোগীকে পুলিশের হয়রানির শিকার হতে হয় বলেও অভিযোগ ওঠে।
স্থানীয় কার্বারী কলেন্দ্র ত্রিপুরা জানান, ভুক্তভোগী ছাত্রী তাইন্দং উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ দুপুর ২:০০টার দিকে সে ছাগল বাঁধতে বাড়ির নীচে চলে যায়। এসময় আগে থেকে ওৎপেতে থাকা ২নং তবলছড়ি ইউনিয়নের ৩নং গ্রামের বাসিন্দা মো: মনসুর আলী (২৮), পিতা-মো: সিদ্দিকুর রহমান স্কুলগামী জুম্ম ছাত্রীকে পিছন থেকে ঝাপটে ধরে। এরপর মুখে কাপড় বেঁধে গ্রামের পাশে জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। ধর্ষণ থেকে বাঁচতে জুম্ম ছাত্রীটি আপ্রাণ চিৎকার করে। ওই ছাত্রীর চিৎকার শুনে কাজ শেষ করে জঙ্গলের ভেতর দিয়ে যাওয়া গ্রামবাসীরা এগিয়ে আসলে ধর্ষণের চেষ্টাকারী যুবক দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। এরপর গ্রামবাসীরা সবাই মিলে ১০/১৫ মিনিট তল্লাশি অভিযান চালিয়ে ধর্ষণের চেষ্টাকারী মনসুর আলীকে আটক করে। ধর্ষণের চেষ্টাকারী মনসুর আলী পেশায় মোটর সাইকেল চালক।
আটকের পর স্থানীয় লোকজন আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ধর্ষণের চেষ্টাকারী মনসুর আলীকে স্থানীয় মেম্বার মো: তাজু ইসলামের হাতে তুলে দেয়। কিন্তু মেম্বার তাজু ইসলাম কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় স্থানীয় লোকজন ও অভিভাবক মিলে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ভুক্তভোগী ছাত্রীকে নিয়ে মাটিরাঙ্গা থানায় মামলা করতে যান। কিন্তু সারাদিন থানায় বসিয়ে রেখে পরে আসতে বলে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।
আজ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ সকালের দিকে আবারও ভুক্তভোগী স্কুল ছাত্রীকে নিয়ে অভিভাবক ও স্থানীয় মুরুব্বিরা মামলা করতে মাটিরাঙ্গা থানায় যান। এ সময় পুলিশ ভুক্তভোগী ছাত্রী ও তার পিতাকে থানার একটি কক্ষে নিয়ে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ ধরে হয়রানিমূলক নানা ধরনের জিজ্ঞাসাবাদ করেন বলে জানা যায়। পরে তাদের আটকে রেখে পুলিশের পক্ষ থেকে ঘটনা তদন্তে তবলছড়ি সাব-থানার একটি টিমকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। তারা ঘটনাস্থলে গ্রামবাসী ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে ঘটনার প্রকৃত সত্যতা পান। পরে পুলিশ অবশ্যই ধর্ষণের চেষ্টাকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে গ্রামবাসীদের জানিয়ে আসেন।
ভুক্তভোগী ছাত্রী, তার অভিভাবক ও স্থানীয় মুরুব্বিরা মাটিরাঙ্গায় থানায় অবস্থান করায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মামলা নেয়া বা দেয়া হয়েছে কিনা জানা যায়নি।