হিল ভয়েস, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১, বিশেষ প্রতিবেদক: পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমাধানের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালে স্বাক্ষরিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি অনুযায়ী পার্বত্যচট্টগ্রাম থেকে সকল অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার না করে, বাংলাদেশ সরকার উল্টো নতুন সেনা ক্যাম্প স্থাপন এবং প্রত্যাহৃত ক্যাম্পেরজায়গায় পুনরায় ক্যাম্প স্থাপন করে চলেছে। ২০১৯ সালে ২০২১ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত তিন পার্বত্য জেলায় ১৯টি নতুন সেনা ক্যাম্পস্থাপন করা হয়েছে কিংবা স্থাপনের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
সেনা ক্যাম্প স্থাপনের তার সাথে বেড়ে চলেছে সামরিকায়ন, জনজীবনের সকল ক্ষেত্রে সামরিক কর্তৃত্ব এবং জনসংহতি সমিতিরনেতাকর্মী ও চুক্তির সমর্থক জুম্মদেরকে বিচার-বহির্ভুত হত্যা, অবৈধ গ্রেপ্তার, আটক, নির্যাতন, দমন-পীড়ন, গ্রামে গ্রামে সামরিকঅভিযান, জনগণকে মারধর, হয়রানি, হুমকি, বাড়িতে তল্লাশী ইত্যাদি মানবাধিকার লংঘন।
উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালে স্বাক্ষরিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি অনুযায়ী চুক্তি স্বাক্ষরের পর সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিডিআর/বিজিবি) ও স্থায়ীসেনানিবাস (তিন জেলা সদরে তিনটি এবং আলিকদম, রুমা ও দীঘিনালা) ব্যতীত সামরিক বাহিনী, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীরসকল অস্থায়ী ক্যাম্প পার্বত্য চট্টগ্রাম হতে পর্যায়ক্রমে স্থায়ী নিবাসে ফেরত নেওয়ার শর্ত থাকলেও সরকার ও সেনাবাহিনী তা লংঘন করেচলেছে।
পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরের পর সরকার ১৯৯৭-১৯৯৯ সালে দুই দফায় মাত্র ৬৬টি অস্থায়ী ক্যাম্প এবং ২০০৯-২০১৩ সালের মেয়াদকালে৩৫টি অস্থায়ী ক্যাম্প প্রত্যাহার হয়েছে বলে জানা গেছে। এখনো পূর্বের ৪ শতাধিক অস্থায়ী ক্যাম্প পার্বত্য চট্টগ্রামে বলবৎ রয়েছে।অধিকন্তু চুক্তিকে লঙ্ঘন করে ২০০১ সালে শেখ হাসিনা সরকার ‘অপারেশন উত্তরণ’ নামক একপ্রকার সেনাশাসন জারি করে।
পার্বত্য চুক্তি মোতাবেক পার্বত্য চট্টগ্রামের বিশেষ শাসনব্যবস্থার অধীনে প্রতিষ্ঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলাপরিষদের নিকট সাধারণ প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা, পুলিশ, ভূমি ও ভূমি ব্যবস্থাপনা, বন ও পরিবেশ, উন্নয়ন ইত্যাদিসহ স্বশাসনেরএখতিয়ার হস্তান্তরের পরিবর্তে ২০০১ সালে জারিকৃত ‘অপারেশন উত্তরণ-এর মাধ্যমে এ সকল ক্ষমতা ও কার্যাবলী পার্বদ্য চট্টগ্রামেনিয়োজিত সেনা ও গোয়েন্দা বাহিনীর হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।
২০০৯ সাল থেকে বিগত ১২ বছর ধরে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন চুক্তি স্বাক্ষরকারী সরকার একনাগাড়ে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকলেওসরকার একদিকে চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণরূপে যেমন বন্ধ রেখেছে, অপরদিকে এই সময়ে নতুন করে বহু সেনা ক্যাম্প স্থাপনকরছে বা স্থাপনের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে পার্বত্য সমস্যার রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ সমাধানেরপরিবর্তে সরকার এখন কার্যত সামরিক উপায়ে দমন-পীড়নের মাধ্যমে পার্বত্য সমস্যার সমাধানের পথ গ্রহণ করেছে।
কেবল ২০১৯ হতে ২০২০ দুই বছরে তিন পার্বত্য জেলায় ১৭টি নতুন সেনা ক্যাম্প স্থাপন, পুনস্থাপন ও স্থাপনের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেঅভিযোগ পাওয়া যায়। অপরদিকে কেবল ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে সেনাবাহিনী কর্তৃক জুরাছড়িতে স্থানীয় জুম্ম গ্রামবাসীদেরকেবিনা পারিশ্রমিকে খাটিয়ে দুইটি সেনা ক্যাম্প পুনস্থাপন এবং নানিয়াচরের বুড়িঘাট ইউনিয়নে এক জুম্ম গ্রামবাসীর কাছ থেকে ৭ একরজায়গা বার্ষিক মাত্র ৭,০০০ টাকায় জোরপূর্বক লিজ নিয়ে নতুন সেনা ক্যাম্প স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এছাড়া চুক্তি স্বাক্ষরের অব্যাবহিত পর প্রত্যাহৃত ১০০টি ক্যাম্পের মধ্যে অধিকাংশ জায়গায় ‘এই স্থানটি নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃকপরিত্যক্ত ক্যাম্প, এই স্থানে যেকোন প্রকার স্থায়ী/অস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ’ বলে সেনাবাহিনী সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিয়েছে।
বলাবাহুল্য, নতুন করে সামরিকায়ন জোরদারকরণ এবং নতুন নতুন সেনা ক্যাম্প স্থাপন বা স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার ফলেএলাকার জুম্ম জনজীবনের ক্ষেত্রে তা গভীর নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করে চলেছে। এতে জুম্মদের স্বাভাবিক জীবন, জীবিকায় একধরনেরহুমকি সৃষ্টি করছে এবং জুম্মদের মধ্যে ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করে চলেছে।
এর ফলে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি মহল ও বাঙালি সেটেলারদের কর্তৃক জুম্মদের ভূমি বেদখলের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। নিরাপত্তাবাহিনীসহ বহিরাগত মুসলিম বাঙালি কর্তৃক জুম্ম নারীর উপর সহিংসতা, নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক বিনা পারিশ্রমিকে জুম্মদের কাজে বাধ্যকরা, বেআইনীভাবে জুম্মদের নির্যাতন করার মাত্রা জোরদার হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির ২০২০ সালে বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদন অনুসারে ২০২০ সালে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশকর্তৃক ১৩৯টি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা সংঘটিত করেছে। এসব ঘটনায় ৩ জনকে বিচার-বিহির্ভুত হত্যা, ৫০ জনকে অবৈধগ্রেফতার ও ৪৯ জনকে সাময়িক আটক, ৫৪ জনকে মারধর ও হয়রানি এবং তার মধ্যে ৭ জনকে গুরুতর আহত, ১০৪টি বাড়ি তল্লাসী ও২০টি অস্থায়ী দোকানসহ ২৫টি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিতে জুম্ম জনগণসহ স্থায়ী অধিবাসীদের স্বশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য যে বিধান করা হয়েছে তা বাস্তবায়নের পরিবর্তে আজজুম্মদের ক্রমাগত ক্ষমতাহীন ও অধিকারহীনে পরিণত করার বাস্তবতা সৃষ্টি করা হয়েছে।
২০১৯–জানুয়ারি২০২১ সালে নতুন স্থাপিত বা স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া সেনা ক্যাম্পের তালিকা:
১। বাঘাইছড়ি উপজেলার সার্বোয়াতলি ইউনিয়নে শিজকমুখ সেনা ক্যাম্প: এই ক্যাম্পটি শিজকমুখ সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহারের জায়গাজবরদখল করে ২৫ এপ্রিল ২০১৯ উক্ত ক্যাম্প স্থাপন শুরু হয়।
২। জুরাছড়ি উপজেলার জুরাছড়ি ইউনিয়নে লুলংছড়ি ক্যাম্প: ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চুক্তির পর এটি প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু ১৪ জুন২০১৯ সেখানে আবার এই ক্যাম্প স্থাপন শুরু করা হয়। গত ১১ জানুয়ারি ২০২১ জনৈক ক্যাপ্টেনের নেতৃত্বে জুরাছড়ি সদরের যক্ষ্মাবাজারসেনা ক্যাম্পের একদল সেনা সদস্য অবস্থান গ্রহণ করে। ঐদিনই সেনাদলটি আশেপাশের ৭ জুম্ম গ্রামের কার্বারীদের ডেকে একটি সভাকরে। সভায় সেনাদলটির কম্যান্ডার ক্যাম্প স্থাপনের জন্য প্রত্যেক গ্রাম থেকে ৫ জন করে লোক পাঠাতে কার্বারীদের নির্দেশ দেয়। সেইনির্দেশ অনুযায়ী সেনাদলটি ১৩-১৪ জানুয়ারি দুই দিনব্যাপী উক্ত গ্রামবাসীদের ঐ পরিত্যক্ত ক্যাম্পের জায়গায় জঙ্গল পরিষ্কার করতেবাধ্য করে। ঐ গ্রামবাসীদের কোন বেতন দেয়া হয়নি।
৩। জুরাছড়ি উপজেলার মৈদুং ইউনিয়নে জামেশছড়ি সেনা ক্যাম্প: ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চুক্তির পর এটি প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু ২০১৯সালের জুন মাসে সেখানে আবার এই ক্যাম্প স্থাপন শুরু করা হয়।
৪। বাঘাইছড়ি উপজেলার বঙ্গলতুলী ইউনিয়নে ডাঙ্গাছড়া ক্যাম্প: ডাঙ্গাছড়া গ্রামে ১২ বীর জোনের অধীনে নতুন সেনা স্থাপন করা হয় ৭আগস্ট ২০১৯।
৫। বাঘাইছড়ি উপজেলার মারিশ্যা ইউনিয়নে ফকিরা টিলা ক্যাম্প: ফকিরা টিলার (মুসলিম ব্লক ও তুলাবানে) এলাকায় ১২ বীরবাঘাইহাট জোনের অধীনে একটি নতুন ক্যাম্প স্থাপন করা হয় গত ২১ অক্টোবর ২০১৯।
৬। বিলাইছড়ি উপজেলার কেংড়াছড়ি ইউনিয়নে মেরাংছড়া সেনা ক্যাম্প: এটিও চুক্তির পর প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু ২৮ এপ্রিল ২০২০বিলাইছড়ি সেনা জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর আবদুল্লাহের নেতৃত্বে ৪২ জনের একদল সেনা পরিদর্শন করে ক্যাম্প স্থাপনের ঘোষণাদেয়া হয়।
৭। রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার মগবান ইউনিয়নে বড়াদম-ধেপ্পোছড়ি সেনা ক্যাম্প: এটিও চুক্তির পরে প্রত্যাহার করা হয়। তবে ৩১ মে২০২০ তারিখ হতে একদল সেনাবাহিনী তল্পিতল্পা নিয়ে প্রতাপ দেওয়ানের মালিকানাধীন উক্ত স্থানে অবস্থান নিয়ে জঙ্গল পরিষ্কার শুরুকরে। টাবু টাঙিয়ে সেনা সদস্য অবস্থান করছে।
৮। বরকল উপজেলার আইমাছড়া ইউনিয়নে মদনপাড়া সেনা ক্যাম্প: এটিও চুক্তির পর প্রত্যাহৃত। তবে ২৯ এপ্রিল ২০২০ হতে সেখানেক্যাম্পটি পুনস্থাপনের পাঁয়তারা শুরু হয়।
৯। বিলাইছড়ি উপজেলার কেংড়াছড়ি ইউনিয়নে মেরাংছড়া মারমা পাড়া সেনা ক্যাম্প: ৫ মে ২০২০ হতে সেখানে এই ক্যাম্প স্থাপন করাহয়েছে বলে জানা গেছে।
১০। গুইমারা উপজেলার হাফছড়ি ইউনিয়নের পক্ষীমুড়ো এলাকায় হাতিমুড়ো সেনা ক্যাম্প: গত ২৮-৩০ জুন ২০২০ তিনদিন পর্যন্তমহালছড়ি সেনা জোনের একদল সেনা সদস্য সেই জায়গায় অবস্থান গ্রহণ করে ক্যাম্প স্থাপনের কার্যক্রম শুরু করে। এসময় সেনাসদস্যরা পার্শ্ববর্তী গ্রামের কয়েকজন কার্বারীকে ডেকে নিয়ে জনগণকে সেখানে না যাওয়ার নির্দেশ দেয়। উল্লেখ্য, সেখানে অনেক আগেথেকেই স্থানীয় অধিবাসীরা একটি বৌদ্ধ বিহার নির্মাণের উদ্যোগ নেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনী বৌদ্ধ বিহার নির্মাণ বন্ধ করে দিয়েসেনা ক্যাম্প স্থাপন করছেন।
১১। বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নে সাজেকের ৯নং পাড়া সেনা ক্যাম্প: ২০১৯ সালের শেষান্তে রূপায়ন চাকমার ভোগদখলীয়৫.০ একর পরিমাণ জায়গা দখলের পর তাকে উচ্ছেদ করে সেখানে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্যাটেলিয়নের (ইসিবি) একটিক্যাম্প স্থাপন করা হয়।
১২। বিলাইছড়ি উপজেলার বিলাইছড়ি সদর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডে বিলাইছড়ি সেনা জোন সম্প্রসারণ: বিলাইছড়ি সেনা জোন কর্তৃকক্যাম্প সম্প্রসারণ ও রাস্তা নির্মাণের লক্ষে জায়গা ছেড়ে দিতে ও বিক্রয় করতে পার্শ্ববর্তী প্রায় ৯ জুম্ম পরিবারের উপর নানাভাবে চাপপ্রয়োগ করা হচ্ছে বলে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে।
১৩। কাপ্তাই উপজেলার চিৎমরম ইউনিয়নে চিৎমরম অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প: চিৎমরং ইউনিয়নে তিন ব্যক্তির ৫.০ একর জায়গা দখল করে‘চিৎমরং অস্থায়ী ক্যাম্প’ নামে একটি নতুন ক্যাম্প স্থাপন করা হয়।
১৪। কাপ্তাই উপজেলার মিতিঙ্গাছড়ি পাড়া সেনা ক্যাম্প: কাপ্তাই উপজেলার ২৩ই বেঙ্গল রেজিমেন্টের কাপ্তাই সেনা জোনের অধীনমিতিঙ্গ্যাছড়ি পাড়ায় নতুন সেনা ক্যাম্প স্থাপনের অভিযোগ পাওয়া যায়।
১৫। রুমা উপজেলার রেমাক্রী প্রাংসা ইউনিয়নে কিস্ত পাড়া (ত্রিপুরা পাড়া) সেনা ক্যাম্প: ১০ অক্টোবর থেকে ১৪ অক্টোবর ২০২০ পর্যন্ত ৫দিন ব্যাপী রুমা গ্যারিসনের সেনাবাহিনীর উদ্যোগে বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলার ৪নং রেমাক্রী প্রাংসা ইউনিয়নের ৯টি গ্রামেসামরিক অভিযান চালানো হয়। অভিযান শেষ করে সেনা সদস্যরা ১৫ অক্টোবর ব্যারাকে ফিরে গেলেও কিস্ত পাড়ার লরেন্স ত্রিপুরারজায়গায় একটি নতুন ক্যাম্প স্থাপনের উদ্যোগ নেয় বলে জানা যায়।
১৬। কাউখালী উপজেলার ফটিকছড়ি ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের দোবাকাবা-নভাঙা সেনা ক্যাম্প: ২২ নভেম্বর ২০২০ থেকে সেনবাহিনীরএকটি দল ১৫/১৬ জন বাঙালি সেটেলার নিয়ে জোরপূর্বক নিতেন চাকমার বাগানের গাছ কাটার মধ্য দিয়ে সেনা ক্যাম্প স্থাপনের কাজশুরু করে। এরপর একইভাবে ২৩ নভেম্বর সকাল থেকে নভাঙ্গা গ্রামের সুনির্মল চাকমার বাঁশ ও সেগুন বাগানটিও কাটা শুরু করে।
১৭। রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার বালুখালি ইউনিয়নে কাইন্দা পাড়া সেনা ক্যাম্প: উক্ত জায়গায় পূর্বে স্থাপিত সেনা ক্যাম্পটি চুক্তির পূর্বে১৯৯৬ সালে গুটিয়ে নেয়া হয়। কিন্তু গত ৫ নভেম্বর ২০২০ জুরাছড়ি সেনা জোনের নিয়ন্ত্রনাধীন বালুখালির মরিচ্যাবিল সেনাক্যাম্প হতে১২ জনের একটি সেনাদল রহিম কান্তি তঞ্চঙ্গ্যার মালিকানাধীন উক্ত জায়গায় এসে একটি গাছে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয়। সাইনবোর্ডে‘এই স্থানটি নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক পরিত্যক্ত ক্যাম্প, এই স্থানে যেকোন প্রকার স্থায়ী/অস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ’ বলেঘোষণা করে।
১৮। জুরাছড়ি উপজেলার জুরাছড়ি ইউনিয়নে কাঠালতুলি সেনা ক্যাম্প: ১৪ জানুয়ারি ২০২১ বনযোগীছড়া সেনা জোনের অধীনশিলছড়ি সেনা ক্যাম্পের ওয়ারেন্ট অফিসার নুরুল আলম এর নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি দল ক্যাম্প স্থাপনের উদ্দেশ্যে জুরাছড়িইউনিয়নের কাঠালতুলি নামক গ্রামে অপর এক পরিত্যক্ত সেনা ক্যাম্পের জায়গায়ও অবস্থান নিয়েছে বলে জানা গেছে।
১৯। নান্যাচর উপজেলার বুড়িঘাট ইউনিয়নে অং জাল্যা পাড়া ক্যাম্প: ২০ জানুয়ারি ২০২১ জায়গাটির মালিক জ্যোতিলাল চাকমারঅমতে সম্পূর্ণভাবে জোর করে দখল করে নান্যাচর সেনা জোন ও বুড়িঘাট সেনা জোন থেকে একদল সেনা সদস্য সেনা ক্যাম্পটি স্থাপনেরকাজ শুরু করে। এরপর গত ২২ জানুয়ারি ২০২১ সেনা ক্যাম্পের নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বর্তমানে সেখানে প্রায় ৩০-৩৫ জনসেনা সদস্য অবস্থান করছে বলে জানা গেছে।