হিল ভয়েস, ১৮ জানুয়ারি ২০২১, বান্দরবান: বান্দরবান জেলার রোয়াংছড়ি উপজেলায় সেনাবাহিনী কর্তৃক দুই জুম্মর বাড়িতে ব্যাপক তল্লাশী ও ৭ নিরীহ জুম্মকে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ১৬ জানুয়ারি ও ১৭ জানুয়ারি পরপর এই ঘটনা দুটি ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ জানুয়ারি ২০২১ রাত আনুমানিক ১০:০০ টায় জনৈক লেফটেন্যান্টের নেতৃত্বে রোয়াংছড়ি সেনা ক্যাম্পের একদল সেনা সদস্য নতুন পাড়া গ্রামের অভিযান চালায়। অভিযানে নতুন পাড়ার বাসিন্দা অংশৈথুই মারমার (৫০) বাড়ির দরজা ভেঙে বাড়িতে ঢুকে। এ সময় বিনা অনুমতিতে ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা অংশৈথুই মারমা এবং তার স্ত্রী ডনুপ্রু মারমার শয়ন কক্ষে প্রবেশ করে কাপড়-চোপড় এলোমেলো করে দিয়ে ব্যাপক তল্লাশী চালায়। তল্লাশীর এক পর্যায়ে সেনা সদস্যরা অংশৈথুই মারমা এবং তার ছেলে ওয়াংনাইসে (১৬)-কে অস্ত্রের মুখে বাড়ির বাইরে নিয়ে যায় এবং গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
এছাড়া সেনা সদস্যরা মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে জিজ্ঞেস করে, ‘সন্ত্রাসী দেখেছে কিনা? কতজনকে ভাত রান্না করে দিয়েছ?’ এরপর সেনা সদস্যরা তাদেরকে সত্য কথা না বললে বাবা-ছেলে দুইজনকে গুলি করে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয়।
সেনা সদস্যরা তল্লাশীর সময় অবৈধ কোন কিছু না পেয়ে এবং বাবা-ছেলের কাছ থেকে কোন তথ্য না পেয়ে বাবা-ছেলে দুজনকে মাটিতে শুইয়ে মারধর করে। এছাড়া তারা একই গ্রামের আরও ৫ জন নিরীহ জুম্মকে মারধর করে। মারধরের শিকার জুম্মরা হলেন- (১) উহ্লাজ্ঞোয়াই মারমা (৩৬), (২) গরামং মারমা (৩২), (৩) কোয়াইনু মারমা (৪৫) ও (৪) খেজাবুং মারমা (৪০)।
ঘটনার পরের দিন ১৭ জানুয়ারি সেনাবাহিনীর আরেকটি দল একই গ্রামের রেহ্লা অং মারমা (৫০) এর বাসায় ঢুকে তল্লাশী চালায়। এসময় সেনা সদস্যরা বাড়ির লোকদের ‘সন্ত্রাসী আছে কিনা, বাড়ি নির্মাণ কিভাবে করেছেন, এত টাকা কিভাবে কোথায় পেলেন’ ইত্যাদি অবান্তর প্রশ্ন করেন।
সেদিনই মংসাইনু মারমা (৪৫) নামে এক জুমিয়া জুমে যাওয়ার পথে হাতে তিন জোড়া জুতা দেখে সেনা সদস্যরা ‘এত জুতা কেন, এগুলো কি সন্ত্রাসীর জুতা নাকি, আপনি একা মানুষ এত জুতা কেন? বলে প্রশ্ন করে। তিনি তিন জোড়া জুতো তার, স্ত্রীর ও সন্তানের জন্য বলে উত্তর দেন।