হিল ভয়েস, ১৪ জানুয়ারি ২০২১, রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটি জেলাধীন জুরাছড়ি উপজেলার জুরাছড়ি ইউনিয়নে সেনাবাহিনী দুটি পরিত্যক্ত সেনা ক্যাম্পের জায়গায় অবস্থান নিয়ে স্থানীয় জুম্মদের দিয়ে বিনা পারিশ্রমিকে জঙ্গল পরিষ্কার করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এনিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।
স্থানীয় জুম্ম গ্রামবাসীদের অভিযোগ, সেনাবাহিনী নতুন করে ঐ পরিত্যক্ত সেনা ক্যাম্পের জায়গায় নতুন সেনা ক্যাম্প স্থাপনের পাঁয়তারা শুরু করেছে। অপরদিকে তারা আশেপাশে বিভিন্ন গ্রামের জুম্মদের ডেকে বিনা পারিশ্রমিকে সেখানে জঙ্গল পরিষ্কার করতে বাধ্য করছে, যা মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লংঘন।
উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর চুক্তির শর্ত অনুযায়ী উক্ত দুই সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার করা হয় এবং জায়গাসমূহ মালিকদের হস্তান্তর করা হয় বলে জানা যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ জানুয়ারি ২০২১ জুরাছড়ি ইউনিয়নের লুলংছড়ি গ্রামে পরিত্যক্ত সেনা ক্যাম্পের জায়গায় জনৈক ক্যাপ্টেনের নেতৃত্বে জুরাছড়ি সদরের যক্ষ্মাবাজার সেনা ক্যাম্পের একদল সেনা সদস্য অবস্থান গ্রহণ করে। এরপর ঐদিনই সেনাদলটি আশেপাশের ৭ জুম্ম গ্রামের কার্বারিদের ডেকে একটি সভা করে। সভায় সেনাদলটির কম্যান্ডার প্রত্যেক গ্রাম থেকে ৫ জন করে লোক পাঠাতে কার্বারিদের নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশ অনুযায়ী, সেনাদলটি গতকাল ১৩ জানুয়ারি ও আজ ১৪ জানুয়ারি দুই দিনব্যাপী উক্ত গ্রামবাসীদের ঐ পরিত্যক্ত ক্যাম্পের জায়গায় জঙ্গল পরিষ্কার করতে বাধ্য করে। ঐ গ্রামবাসীদের কোন বেতন দেয়া হয়নি। শুধু এক প্যাকেট করে বিস্কুট দেয়া হয়।
জুম্ম গ্রামসমূহের ভুক্তভোগী কার্বারিরা হলেন- ১. জয় বিজয় চাকমা, ১৩৩ জুরাছড়ি মৌজা; ২. নলনী কুমার চাকমা, ১৪৭ নং লুলাংছড়ি মৌজা; ৩.অমলেন্দু চাকমা, ১৪৭ নং লুলাংছড়ি মৌজা; ৪. জ্ঞান রঞ্জন চাকমা, ১৪৩ নং কুসুম ছড়ি মৌজা; ৫. জ্ঞানশ্বর চাকমা, ১৪৭ নং লুলাংছড়ি মৌজা; ৬. কিরণ চাকমা, ১৪৩ নং কুসুম ছড়ি মৌজা; ৭. পাথর মুনি চাকমা, ১৪৭ নং লুলাংছড়ি মৌজা।
জানা গেছে, এই পরিত্যক্ত ক্যাম্পের জায়গার মালিক হচ্ছেন চিকন মরত চাকমা (মদে), পিতা-কালী চরণ চাকমা। জায়গার পরিমাণ আনুমানিক ৪ একর।
অপরদিকে, আজ ১৪ জানুয়ারি ২০২১ জুরাছড়ি উপজেলার বনযোগীছড়া সেনা জোনের অধীন শিলছড়ি সেনা ক্যাম্পের ওয়ারেন্ট অফিসার নুরুল আলম এর নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি দল জুরাছড়ি ইউনিয়নের কাঠালতুলি নামক গ্রামে অপর এক পরিত্যক্ত সেনা ক্যাম্পের জায়গায়ও অবস্থান নিয়েছে বলে জানা গেছে।