মিঠুল চাকমা বিশাল
বাংলাদেশ দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের ভিন্নভাষা-ভাষি ১৪টি জাতিগোষ্ঠীর আবাসস্থল পার্বত্য চট্টগ্রাম। যুগ যুগ ধরে ঐতিহাসিকভাবে নিজেদের স্বাতন্ত্র্য ও স্বকীয়তাকে রক্ষা করে পাহাড়ের মানুষ নিজেদের প্রথাগত ও ঐতিহ্যগত যে ভূমি অধিকার, সাংস্কৃতিক অধিকার ও রাজনৈতিক অধিকার, সেগুলো তারা ভোগ করে আসছিল। ঐতিহাসিকভাবে বিশেষ জনগোষ্ঠী অধ্যূষিত অঞ্চল হওয়ায় পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য বিশেষ শাসনব্যবস্থা প্রণয়ন অতি জরুরী ছিল, তার জন্য ১৯০০ সালে একটি রেগুলেশন প্রণয়ন করা হয়। যেটি পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন বা পার্বত্যচট্টগ্রাম শাসনবিধি নামে অতি পরিচিত। এই আইন বলে পাহাড়ে বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ, পাহাড়ীদের বন ও বনজ সম্পদের উপর অধিকার, পাহাড়ে বসবাসকারী প্রতিটি জাতিগোষ্ঠীর প্রথাগত ভূমি অধিকার, জুমচাষের অধিকার, কার্বারী, হেডম্যান ও রাজাদের সমন্বয়ে ঐতিহ্যগত ও প্রথাগত শাসনব্যবস্থা ইত্যাদিকে স্বীকার করে নেয়া হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে শাসকগোষ্ঠী এই আইনের বিভিন্ন ধারাকে সংশোধন করে, ফলে এই আইনের কার্যকারিতা পাহাড়ীদের অনুকূলে না হয়ে প্রতিকূলেই হয়ে গেছে।
১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর দীর্ঘ সশস্ত্র সংগ্রামের অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সাথে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যেটি পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি নামেই পরিচিত। স্বাধীন বাংলাদেশে বাঙালী হিসেবে নয়, একটি স্বতন্ত্র সত্তা হিসেবে, নিজেদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি নিয়ে বেঁচে থাকার তাগিদে আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার রক্ষার হেতু সেই সূদীর্ঘ দুই দশকের অধিক সশস্ত্র সংগ্রাম। আর ঐতিহাসিক সেই পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিতেই রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সরকার স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম একটি বিশেষ অঞ্চল। সুতরাং এই বিশেষ অঞ্চলের রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বিশেষ শাসনব্যবস্থার প্রয়োজন। সেইহেতু তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ ও আঞ্চলিক পরিষদের সমন্বয়ে এক বিশেষ শাসনব্যবস্থার প্রবর্তনের বিধান করা হয়েছে পার্বত্যচুক্তির মাধ্যমে।
পার্বত্য অঞ্চলের এই বিশেষ শাসনকাঠামো থাকা সত্ত্বেও দূর্ভাগ্যবশত রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্বকারী সরকার ও সরকারের মন্ত্রী-আমলারা প্রতি পদেপদে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিকে লংঘন করেই চলেছেন। বিশেষ এই শাসনকাঠামোকে পাশ কাটিয়েই তারা দেশের অপরাপর জেলাসমূহের ন্যায় হুৎ করেই বিভিন্ন আইন ও বিধি প্রণয়ন করেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীদের নিয়ে বৈঠক করেন, পার্বত্য অঞ্চলের শান্তি-শৃঙ্খলা নিয়ে উচ্চবাচ্য করেন। অথচ বিশেষ শাসনব্যবস্থার অন্যতম যে স্তম্ভ পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, সেই পরিষদকে পাশ কাটিয়েই তারা এসব করেন। যা রাষ্ট্রের পক্ষ থেকেই পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বৈধতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। এবং তারা এই ভুলটি প্রতি পদেপদে করে বেড়াচ্ছেন।
উল্লেখ্য যে, গত ২৪ ডিসেম্বর ২০২০ বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী খাগড়াছড়িতে আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক এক সভা করেন। সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন ভারত প্রত্যাগত শরণার্থী ও আভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু পুনর্বাসন সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান ও সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, সাংসদ বাসন্তী চাকমা, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আইয়ুব চৌধুরী, সুরক্ষা ও সেবা বিভাগের সচিব মো. শহিদুজ্জামান এবং গুইমারা রিজিয়ন কমান্ডার মো. শাহরিয়ার জামান। কিন্তু দূর্ভাগ্য হলেও এটিই সত্য এবং বাস্তব যে, উক্ত সভায় পার্বত্য চট্টগ্রামের বিশেষ শাসনব্যবস্থার মূল প্রতিষ্ঠান আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান কিংবা কোন প্রতিনিধিকে রাখা হয়নি, যা অত্যন্ত অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত।
উল্লেখ্য যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি মোতাবেক তিন পার্বত্য জেলার আইন-শৃঙ্খলা, সাধারণ প্রশাসন ও জেলা পরিষদের অন্যান্য কার্যাবলির তত্ত্ববধান ও সমন্বয় সাধন করার দায়িত্ব আঞ্চলিক পরিষদের। অন্যদিকে আঞ্চলিক পরিষদের সাথে কোন প্রকার আলোচনা ও পরামর্শ ব্যতিরেকে সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম সংক্রান্ত কোন আইন, বিধি, প্রবিধান প্রণয়ন বা সংশোধন করতে পারে না। অথচ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বারেবারেই পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদকে বাদ দিয়েই দেশের অন্যান্য জেলার ন্যায় পার্বত্য চট্টগ্রামের আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ে মতবিনিময় সভা করে যাচ্ছে, যা রাষ্ট্রপক্ষ হতে সরাসরি চুক্তির লঙ্ঘন ছাড়া আর কিছুই নয়।
অন্যদিকে এইসব সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চুক্তিবিরোধী ও উস্কানিমূলক নানা বক্তব্য প্রদান করে চলেছেন। সর্বশেষ গত ২৪ ডিসেম্বরের সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, “সমতলের মতো পাহাড়ের আইন-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা হবে। তিনি আরও বলেন, ‘শান্তিচুক্তি মোতাবেক যে স্থানগুলো থেকে সেনাক্যাম্প প্রত্যাহার করা হয়েছে, নিরাপত্তার স্বার্থে প্রয়োজনে সেই পরিত্যক্ত সেনা ক্যাম্পগুলোতে চাঁদাবাজি বন্ধ রাখতে পুলিশ, আনসার, বিজিবি, এমনকি র্যাব মোতায়েন করা হবে”(সুত্র: প্রথমআলো, ২৪ ডিসেম্বর ২০২০)।
পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বর্তমান সময়ে এমন এক সংকটময় মুহুর্ত অতিক্রান্ত হয়ে চলেছে যে, যেকোন মুহুর্তে অনেক কিছুই ঘটে যেতে পারে। কিন্তু এমনই সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কে রাষ্ট্র পরিচালনার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা একজন মন্ত্রীর এহেন চুক্তিবিরোধী ও দমনমূলক মানসিকতার বক্তব্য পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করতে যথেষ্ট। স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে, দেশের অপরাপর জেলায় যে পরিমাণ চাঁদাবাজি হয় সেগুলোর বিষয়ে রাষ্ট্রের পদক্ষেপ কি?
বিশ্বে এমন কোন রাষ্ট্র নেই, যেখানে চাঁদাবাজি হয় না। রাষ্ট্রের ক্ষমতায় থাকা দলগুলোর নেতা-কর্মী, প্রশাসনের দায়িত্বে থাকা কমকর্তারাই এর সাথে বেশি জড়িত। কক্সবাজারে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার স্বর্ণ ও ইয়াবা চোরাচালান হচ্ছে, দিনাজপুর, যশোরসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম জেলাসমূহে প্রতিদিনই সীমান্ত হত্যা, চোরাচালান, চাঁদাবাজি হচ্ছে (বিজিবির পেইজ ভিসিট করলে বুঝতে পারবেন)।
সমগ্র দেশ ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ অন্যান্য সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। সরকারী ও বেসরকারি আমলাদের নজিরবিহীন চাঁদাবাজিতে দেশ ভরে গেছে। অথচ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সে বিষয় কিঞ্চিৎ পরিমাণ মাথাব্যাথা নেই। ওনাদের মাথাব্যাথা কেবল আদিবাসী জুম্ম অধ্যুষিত পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়েই। এই থেকেই প্রমাণিত হয়, অবাঙালি অধ্যুষিত অঞ্চল বলেই পার্বত্য চট্টগ্রামকে নিয়ে শাসকগোষ্ঠী বর্ণবাদী দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে এবং রাষ্ট্র এখনো পাহাড়ের আদিবাসী মানুষদের আপন করে নিতে পারেনি। দীর্ঘ দুই দশকের সশস্ত্র সংগ্রাম, তার ফলে ঐতিহাসিক পার্বত্যচুক্তি এবং চুক্তির আজ ২৩টি বছর পেরিয়েও আমাদের বলতে হয়, “এই রাষ্ট্র আমার নয়।”
প্রসঙ্গত, গত ১৬-১৭ অক্টোবর ২০১৯ রাঙামটিতে পার্বত্য মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত এক সভা আয়োজন করা হয়। উক্ত সভায় পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরকারী পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, হানাহানি, চাঁদাবাজি ও অস্ত্রবাজির একতরফা অভিযোগ এনে পার্বত্য চট্টগ্রামে “সামনে ভয়ঙ্কর দিন” আসছে বলে হুমকি ও উস্কানীমূলক বক্তব্য প্রদান করা হয়।
উক্ত সভায় জিওসি, র্যাবের মহাপরিচালক, পুলিশের মহাপরিদর্শক ও স্বরাষ্ট্র সচিব প্রমুখ ব্যাক্তিরাও একতরফাভাবে সন্ত্রাস, হানাহানি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে ধরে জনসংহতি সমিতি তথা জুম্ম জনগণের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক ও হুমকিমূলক বক্তব্য প্রদান করেন। “মাটির তিনফুটের নিচে লুকিয়ে থাকলেও সন্ত্রাসীদের বের করে আনা হবে, দুই কোটি লোক বসবাসকারী ঢাকায় সন্ত্রাসীদের অনায়াসে খুঁজে বের করা হয়, সেখানে ১৫/১৬লক্ষ বসবাসকারী পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করা কোন ব্যাপারই না” বলে হুমকি প্রদান করা হয়।
গত ১০ মার্চ ২০২০ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হেলিকপ্টার যোগে রাঙামাটির সাজেকে যান, সেখানে তিনি সেনাবাহিনী ও বিজিবির বিভিন্ন ক্যাম্প পরিদর্শন করে বরকলের ঠেগামুখ স্থলবন্দর পরিদর্শন করেন। সেখানেও পার্বত্য চট্টগ্রামের বিশেষ শাসনকাঠামোর কোন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিকেই রাখা হয়নি।এভাবে একতরফাভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার সফর করে চলেছেন। অন্যদিকে গত ১৫ অক্টোবর ২০২০ দুইদিনের সফরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বান্দরবানের থানচি সফর করেন। সেই সময়েও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ এবং আঞ্চলিক পরিষদের কোন প্রতিনিধিকেই তিনি অবহিত করেননি।
গত ২৪ ডিসেম্বরের সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, “আলোচনার মাধ্যমে পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে আনা হবে।” বিষয়টি আমার কাছে আর কিছু নাহোক, হাস্যকরই ঠেকেছে। দীর্ঘ দুই দশক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই ঐতিহাসিক পার্বত্যচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল৷ সেই আলোকেই পার্বত্য চট্টগ্রামের বিশেষ অঞ্চলের মর্যাদাকে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। এখন উনি আবার নতুন করে কিসের আলোচনার কথা বলতে চান, তা আমার বোধগম্যতার বাইরে। উনি বোধ হয় ভুলে গেছেন, পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যেই পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি হয়েছে, তদনুসারে আইন হয়েছে, বিধি হয়েছে। সেই আইনে স্পষ্ট করে পার্বত্য চট্টগ্রামকে জুম্ম(উপজাতি) অধ্যূষিত অঞ্চল হিসেবে স্বীকার করা হয়েছে, চুক্তির সাথে সামঞ্জস্য রেখে অন্যান্য আইনগুলো সংশোধন করার কথা বলা হয়েছে, চুক্তিকে সংসদীয় আইন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে, স্থানীয় অধিবাসীদের নিয়ে ভোটার তালিকা প্রণয়নের কথা বলা হয়েছে, পাহাড়ীদের ভূমি অধিকারের কথা বলা হয়েছে, জুম্ম শরনার্থী ও আভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তুদের যথাযথভাবে পুনর্বাসনের কথা বলা হয়েছে, তিন জেলা সদরে ৩টি এবং রুমা, আলিকদম ও দীঘিনালার তিনটি সেনানিবাস বাদে এবং বিজিবি ক্যাম্প বাদে সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনীর সমস্ত ক্যাম্প সরিয়ে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তাহলে সরকারের পক্ষ থেকে এই আইন এবং পালনীয় দায়িত্বগুলো পালন করলেই তো পাহাড়ে শান্তি ফিরে আসে। তবে কি রাষ্ট্র চায় না,পাহাড়ে শান্তি আসুক!
রাষ্ট্র কি চায়? সরকার কি চায় পাহাড়ে আগ্নেয়গিরির জ্বলন্ত লাভা সবসময়ই জ্বলতে থাকুক?
বস্তুতপক্ষে রাষ্ট্রের অভিযোগে একতরফাভাবে কেবল পাহাড়ীদেরকেই দোষারোপ করা হয়, যা আমাদেরকে হতবাক না করে পারে না। পাহাড় থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার হোক, সেটি সকলেরই কাম্য। কিন্তু সেগুলো কার হাতে রয়েছে? কারা তাদের সৃষ্টি করেছে? এর পেছনে কি প্রেক্ষাপট রয়েছে? এই প্রশ্নগুলোর মীমাংসা করা জরুরী। রাষ্ট্রের পরিচলনায় দায়িত্বে থাকা সরকার যদি মনে করে যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে পার্বত্য সমস্যার সমাধান না করে দমন-পীড়ন তথা ফ্যাসীবাদী কায়দায় সমাধান করা যাবে, যদি মনে করে যে পাহাড়ে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের নামে জনসংহতি সমিতি ও সাধারণ জুম্ম জনগণকে হয়রানি করে পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে আনা দরকার, যদি মনে করে যে সভা-সেমিনারে উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান করে পাহাড়ের সমস্যার সমাধান হবে, যদি মনে করা হয় যে পাহাড়ে আবারো সেনাক্যাম্প সম্প্রসারণ করলেই পাহাড়ে শান্তি ফিরে আসবে, তবে এই ভূ-রাজনীতির দোলাচলে রাষ্ট্র এবং সরকার আবারও ভুলের পথে পা বাড়াবে। যার মাশুল রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রের জনগণ সকলেই দিতে হবে।