হিল ভয়েস, ১০ ডিসেম্বর ২০২০, রাঙ্গামাটি: সম্প্রতি রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়িতে সংস্কারপন্থী সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্য রতনপ্রিয় চাকমা ওরফে বীমান চাকমাকে হত্যার ঘটনায় বাঘাইছড়ি উপজেলার পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) এর সদস্য ও সমর্থকসহ ২০ জুম্মর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জনকেও এই মামলার আসামী করা হয়েছে।
গতকাল ৯ ডিসেম্বর ২০২০ বীমান চাকমার স্ত্রী গন্ধা দেবী চাকমা বাঘাইছড়ি থানায় গিয়ে এই মামলা দায়ের করেন বলে জানা গেছে। বাঘাইছড়ি থানার মামলা নং-০২, ধারা ১৪৮/১৪৯/৪৪৮/৩০২/৩৪ দন্ডবিধি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক গ্রামবাসীর সূত্রে জানা গেছে, একটি বিশেষ মহলের চাপে এবং তাদের সরবরাহকৃত তালিকা অনুসারেই পিসিজেএসএস সদস্যদের হয়রানি করতে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মিথ্যা মামলার শিকার আসামীরা হলেন- ১. বড়ঋষি চাকমা (সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান), ২. সুঅতীশ চাকমা (তন্টুমনি), ৩. সুভাষবসু চাকমা, ৪. পলক তালুকদার ৫. দয়াসিন্দু চাকমা ৬. ত্রিদীপ চাকমা (দিপবাবু) ৭. প্রভাত কুমার চাকমা (কাকলীবাবু), ৮. আবিস্কার চাকমা, ৯. বরুন চাকমা, ১০. মনিময় চাকমা, ১১. সুরেশ চাকমা, ১২. জ্ঞান প্রকাশ চাকমা (সুজেন), ১৩. মেকিও চাকমা, ১৪. শান্তি মোহন চাকমা, ১৫. জুপিটার চাকমা (বাপ্পি), ১৬. বুদ্ধাংকুর চাকমা, ১৭. সোহেল চাকমা (সাবেক পিসিপি বাঘাইছড়ি থানা শাখার সভাপতি), ১৮. খোকন চাকমা, ১৯. সুব্রত চাকমা, ২০. সোহাগ চাকমা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে তারা ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচন ও ২০১৯ সালের উপজেলা নির্বাচনের পর সংস্কারপন্থী ও স্থানীয় প্রশাসনের যোগসাজসে মিথ্যা মামলা খেয়ে দীর্ঘ দেড় বছর যাবত পলাতক জীবনযাপন করছেন। পরিবারের সাথেও তারা যোগাযোগ করতে পারছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার কয়েকজন মুরুব্বি জানান, জনসংহতি সমিতির নেতৃবৃন্দের নামে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করার জন্য সংস্কারপন্থীদের অন্ত:কোন্দলে বীমান চাকমা বলির পাঠা হতে পারে। কারণ পাকুইজ্জাছড়ি এলাকাসহ পুরো বাঘাইছড়ি এলাকায় সেনামদদপুষ্ট সংস্কারপন্থী সন্ত্রাসীরাই এখন সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও লুটপাতের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে। অপরদিকে জনসংহতি সমিতির শত শত সদস্য এলাকা ছাড়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৬ ডিসেম্বর ২০২০ রাতে বাঘাইছড়ি উপজেলার রূপকারী ইউনিয়নের পাকুজ্যাছড়ি এলাকায় নিজের বাড়ির পাশে এক দোকানে ঘুমন্ত অবস্থা থেকে ধিমান চাকমাকে তুলে কে বা কারা গুলি করে হত্যা করে। নিহত ধীমান চাকমা নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রগতি চাকমার দেহরক্ষী হিসেবে কাজ করছিল বলে জানা গেছে। ঐদিন সন্ধ্যায় সে ছুটিতে বাড়িতে আসে।