হিল ভয়েস, ৬ ডিসেম্বর ২০২০, বান্দরবান: আজ ৬ ডিসেম্বর ২০২০ থানচি উপজেলার সচেতন ছাত্র সমাজ ও নাগরিকবৃন্দের উদ্যোগে থানচি উপজেলা সদরে চিম্বুক পাহাড়ে ম্রোদের ভোগদখলীয় ভূমিতে পাঁচ তারকা হোটেল ও পর্যটন স্থাপনা নির্মাণ বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
‘পাঁচ তারকা হোটল নয়, পাহাড়ে শিক্ষা ব্যবস্থার টেকসই উন্নয়ন চাই’ এই শ্লোগান নিয়ে মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয় আজ সকাল ১০:৩০ টায় থানচি প্রেস ক্লাবের সামনে। মানববন্ধনে আলোচনায় সঞ্চালনা করেন বান্দরবান সরকারি কলেজের ছাত্র মংমে মার্মা ও সিনিয়া ম্রো এবং স্বাগত বক্তব্য দেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ছাত্র রিংতুই ম্রো। এছাড়া সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন থানচি উপজেলা পিসিপি’র সভাপতি থুই মং প্রু মার্মা, সুরেশ ত্রিপুরা, মানয়া ম্রো, বান্দরবান সরকারি কলেজের ছাত্র ফিলিপ খেয়াং, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ঙুই ক্রুম ম্রো, গণ বিশ্ববিদ্যালেয়র ছাত্র পংরাও ম্রো।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘পাহাড় আজ অন্ধকারে রুপ নিয়েছে। শাসকগোষ্ঠী একের পর এক আগ্রাসন আমাদের উপর চালিয়ে যাচ্ছে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করতে না পারলে আমাদের জীবন ও অস্তিত্ব রক্ষা করা দূরূহ হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে একতা না থাকলে, অস্তিত্বকে পেন্ট—শার্টের পকেটে নিয়ে ঘুরতে হবে।’
বক্তারা আরও বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে ঔপনিবেশিক কায়দায় শোষণের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াঁনোর সময় হয়েছে। শাসক এখন রক্ষক থেকে ভক্ষকে পরিণত হয়েছে। পার্বত্য চুক্তি এখন প্রতারণার চুক্তিতে পরিণত হয়েছে। শাসকগোষ্ঠী চুক্তি বাস্তবায়নের কথা বললে মামলা ঠুকে দিচ্ছে। যখন—তখন, যাকে—তাকে সন্ত্রাসী তকমা দিয়ে গ্রেফতার করছে। দমন—পীড়ন চালাচ্ছে। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময়কালে পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসীদের জনসংখ্যা ছিল ৯৭%, বর্তমানে ৪৯%। ৫০ বা ১০০ বছর পর কোথায় হারিয়ে যাবে আমাদের ভাবনার বাইরে।
বক্তারা আরও বলেন, ‘চিম্বুক পাহাড়ে ম্রো আদিবাসীরা যুগ যুগ ধরে বংশ পরম্পরায় জুম চাষ, এতে তাদের শ্মশান, ম্রোদের সংস্কৃতি মিশে আছে।’
বক্তারা চিম্বুক পাহাড়ে পাঁচ তারকা হোটেলের পরিবর্তে সেখানে আশার আলোর মতো আবাসিক হোস্টেল করাও যৌক্তিক মনে করেন।
বক্তারা বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ম্রোদের সাথে প্রতারণা করেছেন বলে উল্লেখ করেন এবং এর প্রতিবাদ জানান। তারা অবিলম্বে ফাইভ স্টার হোটেল ও পর্যটন স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগ বাতিল করার দাবি জানান।
মানববন্ধনে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে প্রায় দুই শতাধিক ছাত্র—অভিভাবক অংশগ্রহণ করেন।