হিল ভয়েস, ২৯ নভেম্বর ২০২০, মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার একটি খাসিয়া পরিবারের দখলকৃত জমি তাদেরকে ফিরিয়ে দিতে স্থানীয় প্রশাসনকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন একদল নাগরিক প্রতিনিধি।
গতকাল ২৮ নভেম্বর ২০২০ আদিবাসীদের মানবাধিকার সংগঠন কাপেং ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপক ও বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাংস্কৃতিক সম্পাদক হিরণ মিত্র চাকমার নেতৃত্বে নয় সদস্যের একটি নাগরিক প্রতিনিধি দল মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার ইসাছড়া পুঞ্জিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। পরিদর্শন শেষে প্রতিনিধিবৃন্দ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নিকট ভুক্তভোগী খাসিয়া পরিবারকে তার জমি ফেরত দেওয়ার দাবি জানান।
পরিদর্শনের সময় প্রতিনিধিবৃন্দ পুঞ্জিবাসীদের আতঙ্ক কাটাতে ও এই বিরোধের একটি স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে পুঞ্জিবাসীদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন।
এসময় পুঞ্জিবাসী খাসিয়া নেতৃবৃন্দ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বংশ পরম্পরায় তারা সেখানে বসবাস করে আসছেন। এখন স্থানীয় রফিক মিয়া ও তার সহযোগীরা জোর করে তাদের ভোগদখলকৃত ভূমি থেকে উচ্ছেদ করে দিতে চাইছে।
পরিদর্শন শেষে প্রতিনিধিদল জানান, প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী জমিটির আসল মালিক ইসাছড়া পুঞ্জির একটি খাসিয়া পরিবার। জমির মালিকের নাম জসপার আমলরং। তিনি একজন ক্যান্সার রোগী।
প্রতিনিধিবৃন্দ খাসিয়া পরিবারের জমিটি তাদেরকেই বুঝিয়ে দেওয়ার দাবি জানান এবং খাসিয়া পুঞ্জিতে সম্প্রতি হামলা ও গির্জা ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিও জানিয়েছেন তারা।
প্রতিনিধিবৃন্দ জানান, তারা এ বিষয়ে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ টি এম ফরহাদ চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করলে ইউএনও জানান, শিগগির সব পক্ষের উপস্থিতিতে বিষয়টি সুরাহা করা হবে।
প্রতিনিধি দল আরো জানায়, পুঞ্জিবাসীদের সঙ্গে কিছু মানুষের ভূমি নিয়ে বিরোধ চলছে। প্রশাসন জমিটি উদ্ধার করে এর মালিককে বুঝিয়ে দিলেও, গত ৯ নভেম্বর সেখানে হামলার ফলে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। এরপর সেখানে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ১৫ দিনের জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত ৯ নভেম্বর ২০২০ সন্ধ্যায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ইছাছড়া খাসিয়াপুঞ্জিতে হামলা-ভাঙচুর চালায় স্থানীয় রফিক মিয়া নামের নেতৃত্বে একটি ভূমিবেদখলকারী চক্র। এর আগে সকালের দিকে প্রশাসনের লোকজন অবৈধভাবে দখল করা পুঞ্জির একটি পরিবারের পান চাষের পাঁচ একর জমি রফিকের কাছ থেকে উদ্ধার করে দেন। ইছাছড়াপুঞ্জিতে ৫২টি খাসিয়া পরিবার থাকে। সেখানকার বাসিন্দা জেসপার আমলেংরংয়ের প্রায় পাঁচ একর জায়গায় একটি পানের জুম রয়েছে।