হিল ভয়েস, ২০ অক্টোবর ২০২০, ফেনী: ফেনীতে আসা পার্বত্য চট্টগ্রামের এক আদিবাসী চাকমা তরুণী (১৮) এক রাতেই দুই দফা ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে জানা গেছে। তরুণী নিজেই পুলিশের নিকট অভিযোগ করার পর ফেনীর পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হল- রিকশাচালক মো: রিয়াজ (২৬) ও সেলুন দোকানের কর্মচারী ছোটন চন্দ্র শীল (২২)।
জানা গেছে, গত ১৯ অক্টোবর ২০২০ দিবাগত রাতে ফেনীর পৌরসভা এলাকায় পরপর এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। পরে ভুক্তভোগী তরুণী নিজে পুলিশের নিকট ধর্ষণের বিষয়ে অভিযোগ করে, যা মামলা হিসেবে গৃহীত হয়। ফেনী মডেল থানার মামলা নং-৩৮/৬০০, তারিখ-১৯/১০/২০২০, ধারা ৯(৩), নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী ২০০৩)।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার বাসিন্দা ওই তরুণী বাড়ির লোকজনের সাথে রাগ করে বাড়ি থেকে বের হয়ে প্রথমে খাগড়াছড়ি যায়। এরপর গত ১৮ অক্টোবর ২০২০ খাগড়াছড়ি থেকে বান্ধবীর বাসায় যাওয়ার জন্য গাড়িতে করে ফেনীর উদ্দেশে রওনা দেয়। রাত ১১:০০ টার দিকে ফেনীর মহিপাল এলাকার বাস স্টেশনে বাস থেকে নেমে একটি রিকশা নিয়ে বিসিক শিল্প নগরী এলাকায় বান্ধবীর বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। তরণীর এক বান্ধবী ফেনীর চাড়িপুরে বিসিক এলাকায় আবুল খায়ের ম্যাচ ফ্যাক্টরিতে কাজ করে।
রিকশাচালক রিয়াজ তরুণীকে বিসিক যাবার কথা বলে বিভিন্ন স্থান ঘুরিয়ে ফেনী পৌর এলাকার ১২নং ওর্য়াডের মোক্তার বাড়ি এলাকার একটি ঘরে নিয়ে গিয়ে রাত আড়াইটার দিকে ধর্ষণ করে। এসময় তরুণীটি কান্নাকাটি শুরু করলে গভীর রাতে রিয়াজ তাকে নিয়ে আবার বিসিকের দিকে রওনা দেয়। এক পর্যায়ে সালাউদ্দিন মোড় সংলগ্ন কাঠবেল্লা এলাকায় পৌঁছলে রিকশাচালক রিয়াজ তরুণীটিকে সেখানে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
এরপর দিবাগত রাত ৩:৩০ টার দিকে সেলুন দোকানের কর্মচারী ছোটন শীল রাস্তায় তরুণীটিকে একা পেয়ে বান্ধবীর কাছে পৌঁছে দেয়ার কথা বলে ফতেহপুর সড়কের একটি দোকান ঘরে নিয়ে গিয়ে আবার ধর্ষণ করে।
এক পর্যায়ে ৪:৩০ টার দিকে ছোটন শীল তরুণীটিকে নিয়ে রাস্তায় বের হলে তারা টহলরত পুলিশের মুখে পড়ে। পুলিশ তাদের গতিবিধির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তরুণী পুলিশের নিকট ধর্ষণের বিষয়টি জানায়। পুলিশ তখন ছোটনশীলকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
পরে মেয়েটির বিবরণ অনুযায়ী, পুলিশ অভিযান চালিয়ে অপর ধর্ষক রিকশা চালক রিয়াজকেও গ্রেফতার করে।
জানা গেছে, রিকশাচালক রিয়াজ লক্ষীপুর জেলার কমলনগর থানার জগবন্ধু গ্রামের মো: সাদেক এর ছেলে। বর্তমানে সে ফেনীর দেয়ানগঞ্জে বাবুল মিয়ার কলোনীতে থাকে। অপরদিকে, সেলুন কর্মচারী ছোটন ফেনী পৌর এলাকার ১২নং ওর্য়াডের হাজারী রোডের একটি সেলুনে কাজ করে। সে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থানার ধর্মপুর গ্রামের সমীর চন্দ্র শীলের ছেলে।
ফেনী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) ওমর হায়দার জানান, ওই তরুণীর মেডিক্যাল পরীক্ষা সোমবার রাতে সম্পন্ন হয়েছে। তাকে নিরাপদ হেফাজতে রাখা হয়েছে।