হিল ভয়েস, ১৩ অক্টোবর ২০২০, রাজশাহী: রাজশাহী জেলার তানোর উপজেলায় স্থানীয় এক বাঙালি প্রভাবশালীর কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় স্বামী পরিত্যাক্তা এক আদিবাসী নারীকে (২১) নির্যাতন করা হয়েছে। গতকাল ১২ অক্টেবার ২০২০ সোমবার সকালে ওই প্রভাবশালীর বাড়ির সামনে থেকে গ্রামবাসীরা ভূক্তভোগী নারীকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করে।
গ্রামবাসী ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, তানোর উপজেলার কলমা ইউনিয়ন এলাকার একটি আদিবাসী গ্রামের স্বামী পরিত্যাক্তা ওই নারীকে দীর্ঘদিন ধরে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন চকনাকা শিমুলতলা নিচ পাড়া গ্রামের সাইফুদ্দীনের ছেলে শহিদুল ইসলাম (৩০)।
গত রোববার (১১ অক্টোবর) রাতে স্বামী পরিত্যাক্তা ওই আদিবাসী নারী নাচোল উপজেলার রাজবাড়ি আদিবাসী পাড়ার রতন মুুর্মুর (৩৪) সঙ্গে যাবার পথে শিমুলতলা নামক স্থানে শহিদুল ইসলাম তাদের দুজনকে দেখতে পেয়ে আদিবাসী নারীকে আটকে রেখে রতন মুর্মুকে মারধর করে তাড়িয়ে দেন। এ সময় শহিদুল আদিবাসী ওই নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এরপর তার কুপ্রস্তাব দেন। কুপ্রস্তাবে রাজি না হয়ে ধর্ষণে বাঁধা দিলে শহিদুল ওই আদিবাসী নারীকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন।
এ সময় ওই নারীর চিৎকার শুনে গ্রামের লোকজন এগিয়ে আসলে শহিদুল সবাইকে বলেন, এই মহিলা চুরি করতে এসেছিল তাই তাকে আটকে রেখে মারপিট করেছি।’ তারপর সারা রাত আহত অবস্থায় শহিদুল তার বাড়ির সামনে ওই নারীকে আটকে রাখেন তিনি।
পরদিন (১২ অক্টোবর) সকাল ৭টার দিকে গ্রামবাসীসহ আদিবাসীরা গিয়ে শহিদুলের বাড়ির সামনে থেকে ভূক্তভোগীকে উদ্ধার করে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করেন। বর্তমানে ওই আদিবাসী নারী তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসারত অবস্থায় কাতরাচ্ছেন।
এ বিষয়ে শিমুলতলা আদিবাসী গ্রামের মার্থা টুডু নামে এক নারী বলেন, শহিদুল এলাকায় খুব প্রভাবশালী। দীর্ঘদিন থেকেই সে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল।
এ বিষয়ে কথা বলতে যোগায়োগ করা হলে শহিদুল ইসলাম বলেন, রাতে তাকে চোর সন্দেহে ধরা হয়েছিল এবং তাকে কিছু উত্তম-মধ্যম দিয়ে সকালে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি সাংবাদিকদের এড়িয়ে যান।
তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুল হাসান বলেন, এ ধরনের কোনো খবর বা অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।