হিল ভয়েস, ২ সেপ্টেম্বর ২০২০, খাগড়াছড়ি: গত পরশু খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়িতে চার বাঙালি সেটেলার যুবক কর্তৃক রাতভর অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী এক মারমা কিশোরী (১৪) গণধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এরপর স্থানীয় আওয়ামীলীগের এক ইউনিয়ন সভাপতির নেতৃত্বে ও মধ্যস্থতায় আয়োজিত এক সালিশে ভিকটিমের পরিবারকে মাত্র ১০ হাজার টাকা দিয়ে জঘন্য ঘটনাটি মিটমাট করা হয় বলে জানা যায়। এছাড়া ঘটনার বিষয়ে কোথাও কাউকে না জানাতে এবং মামলা না করতে সালিশে নেতৃত্বদানকারীদের পক্ষ থেকে কড়া নির্দেশ দেয়া হয়। ফলে ঘটনাটি প্রায় ধামাচাপা পড়ে যায়।
জানা গেছে, ধর্ষণের শিকার মেয়েটি মহালছড়ি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী। তার নিজের বাড়ি পার্শ্ববর্তী মাইসছড়ি গ্রামে। বর্তমানে পড়ালেখার কারণে মারমা অধ্যুষিত থলিপাড়া গ্রামে অবস্থান করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৩১ আগস্ট ২০২০ বিকাল আনুমানিক ৫:০০ টার দিকে মহালছড়ি উপজেলার মহালছড়ি সদর ইউনিয়নের টিলাপাড়া নিবাসী আল আমিন (২৪) এর নেতৃত্বে ৪ সেটেলার যুবক মেয়েটিকে একা পেয়ে পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে অনেকটা জোর করে মোটর সাইকেলে তুলে নিয়ে যায়। এরপর তারা টিলাপাড়া সংলগ্ন মহেন্দ্র যানবাহন স্টেশনের নিকটবর্তী গোপন স্থানে নিয়ে গিয়ে প্রায় রাতভর পর্যায়ক্রমে গণধর্ষণ করে মেয়েটিকে ছেড়ে চলে যায়। পরে ১ সেপ্টেম্বর ২০২০ দিবাগত রাত প্রায় ৩:০০ টার দিকে মেয়েটি কোনমতে টিলাপাড়ায় তার এক শিক্ষকের বাড়িতে আশ্রয় গ্রহণ করে।
এরপর ঘটনাটি জানাজানি হলে, ১ সেপ্টেম্বর ২০২০ স্থানীয় সেটেলারদের নেতা ও আওয়ামীলীগের মহালছড়ি ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি রতন কুমার শীল এর নেতৃত্বে থলিপাড়া গ্রামস্থ হেডম্যান কালাচান চৌধুরীর বাড়িতে এক সালিশ বসানো হয়। সালিশে রতন কুমার শীল ধর্ষকদের পক্ষ থেকে ধর্ষিতাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা প্রদান করার রায় দিয়ে বিচার সম্পন্ন করেন এবং এ বিষয়ে কোন মামলা না দেয়া ও কাউকে না জানানোর নির্দেশ প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, রতন কুমার শীল ২০০৩ সালে সংঘটিত মহালছড়ি সাম্প্রদায়িক হামলার অন্যতম হোতা এবং সেটেলারদের মধ্যে প্রভাবশালী ব্যক্তি বলে জানা যায়।
জানা গেছে, ধর্ষণের সময় মেয়েটির শরীরে জখমের চিহ্ন সৃষ্টি হয়। বিচারের সময় সে সবার সামনে আঘাতের চিহ্ন প্রদর্শন করে।