হিল ভয়েস, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইল জেলার মধুপুরে বাসন্তী রেমা (৪৫) ও গেটিস যেত্রার এক আদিবাসী পরিবারের তিলে তিলে গড়ে তোলা কলা বাগানের কলাগাছ কর্তন করেছে বন বিভাগ কর্তৃপক্ষ । ঘটনাটি আজ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ সোমবার সকাল পৌনে ১০:০০ টা দিকে ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাসন্তী রেমা ও গেটিস যেত্রা এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে এ কলাবাগানটি গড়ে তোলে। কিন্তু কোন ধরনের কারণ দশানো নোটিস কিংবা পূর্ব অবগতি ছাড়াই আজ সকালের দিকে বনবিভাগের সহকারি কমিশনার জামাল হোসেন তালুকদার, রেঞ্জার আব্দুল আহাদ ও স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সদস্য জাহাঙ্গীর এর নেতৃত্বে আর ১০/১২ জনের একটি দুর্বৃত্তের দল কলাবাগান কেটে ফেলে।
খবরটি জানতে মধুপুরের আদিবাসী জনতা বন বিভাগের দুর্বৃত্তায়ন, ক্ষতিপূরণ সহ দুর্বৃত্তায়নের সাথে যুক্ত বন বিভাগের কর্মীদের শাস্তির দাবিতে প্রায় ঘন্টাখানেক বনবিভাগের দোখলা বিট অফিস ঘেরাও করে। পরে আগামী বুধবার স্থানীয় আদিবাসীদের অভিভাবক সংগঠন, ছাত্র সংগঠন ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে বসে ভুক্তভোগীকে ক্ষতিপূরণসহ আর কোন আদিবাসী বাগানে নষ্ট না করার সুষ্ঠু সমাধানের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে অবরোধ তুলে নেয়া হয়।
এদিকে মধুপুরে বন বিভাগের দুর্বৃত্তায়নে নিন্দা জানিয়ে বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অলিক মৃ বলেন, অবিলম্বে বন বিভাগের এহেন নিন্দনীয় কর্মকান্ড বন্ধ ও মধুপুরের সকল আদিবাসীদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। উন্নয়নের নামে আদিবাসীদের জায়গা দখলে সকল পরিকল্পনা দ্রুতই বন্ধ করতে হবে।
বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি জন জেত্রা বলেন, মধুপুরে বন বিভাগের এমন কার্যক্রম প্রায় নিত্যদিনের। মধুপুরে বন বিভাগের এ ধরনের অপকর্মকে চলতে দেয়া যায় না। তাই মধুপুরের আদিবাসীদের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত সহ ভুক্তভোগীকে যথাযথ ক্ষতিপূরন দিতে হবে।
বাংলাদেশ গারো স্টুডেন্টস ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাংগঠিক সম্পাদক টনি ম্যাথিউস চিরান বলেন, সরকার রিজার্ভ ফরেষ্টের নামে আদিবাসী উচ্ছেদের পায়তারার অংশই হল আজকে কলাবাগান কেটে ফেলেছে। তাই এর দায়ভার মধুপুরের বন বিভাগের যতটাই তারও বেশি সরকারের। তাই সরকার রিজার্ভ ফরেষ্ট ও ইকোপার্কের নাম আদিবাসীদের উচ্ছেদ করার জন্য সকল ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে । তা না হলে মধুপুরের আদিবাসী জনতা আবারো ফুসে উঠবে।