হিল ভয়েস, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, টাঙ্গাইল: গত ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ শুক্রবার বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের উদ্যোগে ঢাকা থেকে এক নাগরিক প্রতিনিধিদল মধুপুরে বনবিভাগ কর্তৃক বাসন্তী রেমার কলা বাগান ধ্বংস করার ঘটনা সরেজমিন পরিদর্শনে যান।
উক্ত নাগরিক প্রতিনিধিদলে ছিলেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. রোবায়েত ফেরদৌস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ড. জোবাইদা নাসরীন, বিশিষ্ট লেখক ও অনুবাদক অদিতি ফাল্গুনী, নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন, আদিবাসী ফোরামের তথ্য ও প্রচার সম্পাদক দীপায়ন খীসা, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জহুরুল ইসলাম, জন উদ্যোগ জাতীয় কমিটির তারিক মিঠুল, কাপেং ফাউন্ডেশনের উজ্জ্বল আজিম, এএলআরডি’র বুলবুল আহমেদ এবং বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের সমন্বয়ক ফাল্গুনী ত্রিপুরা।
সরেজমিন পরিদর্শনের সময় পেগামারী গ্রামে বাসন্তী রেমার গৃহের উঠানে এক জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত জনসভায় বক্তারা বলেন, মধুপুর বনে যুগ যুগ ধরে আদিবাসীদের বসবাস ছিল। আদিকাল থেকে তাঁরা এখানেই বনের সাথে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত থেকে জীবন যাপন করে আসছে। আদিবাসীরাই বনের প্রকৃত সংরক্ষক। বাসন্তী রেমাই হয়ে উঠুক আগামী দিনের আদিবাসীদের প্রতিরোধের প্রতীক বলে বক্তারা অভিমত ব্যক্ত করেন।
বক্তারা আরো বলেন, ১৯৭২ সালে মধুপুরে এই দোখালায় সংবিধান রচিত হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু যদি বেঁচে থাকতেন এতক্ষণ বাসন্তী রেমার কষ্টে নিশ্চয় কষ্ট পেতেন। এরকম উন্মত্ততা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান করতে পারে তা অভাবনীয়। সরকার কৃষি উৎপাদনে উৎসাহিত করছে। অথচ বনবিভাগ মাথার ঘাম পায়ে ফেলা কলাবাগানকে ধ্বংস করেছে। আজকে কলাবাগান ধ্বংস মানেই আদিবাসীদেরকে হত্যা করার সামিল।
বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অলীক মৃ’র সঞ্চালনায় উক্ত সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন, বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠনের সভাপতি জন জেত্রা, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জহুরুল ইসলাম, জন উদ্যোগ জাতীয় কমিটির তারিক মিঠুল এবং বিশিষ্ট লেখিকা ও অনুবাদক অদিতি ফাল্গুনী। এছাড়া উক্ত সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় গারো ও কোচ আদিবাসী নেতৃবৃন্দ ও সাধারন জনতা।
বিগত ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ মধুপুরের গারো আদিবাসী বাসন্তী রেমার ৪০ শতাংশ জায়গার কলা বাগান কেটে ফেলে স্থানীয় বন বিভাগ। কোনো রকম পূর্ব নোটিশ ছাড়া স্থানীয় বনবিভাগ টাঙ্গাইলের মধুপুরের পেগামারি গ্রামে বাসন্তী রেমার ৪০ শতাংশ জমির উপর গড়ে তোলা এ কলা বাগান কেটে ফেলার ঘটনায় স্থানীয় আদিবাসী তথা নাগরিকগণ বিক্ষুদ্ধ হয়ে দফায় দফায় বন বিভাগের কার্যালয় ঘেরাও এবং প্রশাসনের সাথে আলোচনা জারি রেখেছে।