হিল ভয়েস, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০,বান্দরবান : পাহাড়ে এখন চলছে ফসল তোলার মৌসুম। জুম থেকে নতুন ধান কেটে ঘরে ফসল তোলার হিড়িক। এটি পাহাড়ের জুমিয়া সমাজের একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ। ধান কাটার পাশাপাশি তারা জুম থেকে নানা ধরনের ফসল তোলে। জুম করার আগে যেমনি সৃষ্টিকর্তার আশির্বাদ কামনা করে পূজা-পার্বণ করা হয় তেমনি ফসল তোলার পর সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে পূজা–পার্বণের রীতিও জুমিয়া সমাজে প্রচলিত। এবারে করোনায় অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত পাহাড়ে জুমিয়াদের ঘরে ঘরে যেন একটু শান্তির বাতাস বইছে। জুমের ধান পেকেছে ও ফসল ঘরে তুলতে পারছে।
“থ্লাই থার কুট” আদিবাসী বমদের একটি নবান্ন উৎসব । নবান্ন উৎসব হলেও এটি সাধারণত অন্যান্য উৎসব থেকে কিছুটা ভিন্ন। তারা এ উৎসব পালন করে থাকে জুমের উৎপাদিত ফসল ঘরে তোলার পর। মূলত সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাতে নিজ নিজ গ্রামের প্রতিটা গির্জায় এই বিশেষ উৎসব পালন করে। যা “থ্লাই থার কোট” বা “Harvest Festival” নামে পরিচিত। এ উৎসব বম আদিবাসীদের বাইরে ভিন্ন নামে লুসাই ও পাংখোয়ারা পালন করে থাকে ।
“থ্লাই” মানে ফসল “থার” হল নতুন অর্থাৎ “থলাই থার” অর্থ হল নতুন ফসল। উৎসব এর তারিখ নিজেদের মন্ডলির সুবিধা অনুযায়ী ঠিক হয়ে থাকে। তবে তা অবশ্যই রবিবার হতে হবে। এই দিনে গ্রামের প্রত্যেক পরিবার থেকে বিভিন্ন ফলমূল যেমন কলা,ভুট্টা, পেঁপে, পেয়ারা, আখ থেকে শুরু করে যার যা আছে সেগুলো তারা ঈশ্বর কে উৎসর্গের করার জন্য গীর্জায় নিয়ে আসে । সারা সেপ্টেম্বর মাস জুড়ে তাদের এ নবান্ন উৎসব চলে।
গীর্জা শেষে তারা সবাই মিলেমিশে কুশল বিনিময় করে তাদের ফলমূল এবং ভোজের আয়োজন করা হয়ে থাকে যা একে অপরের সাথে ভাগাভাগি করে নেয়।। এটি ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান হলেও সকলের মধ্য একত্রে থেকে নিজেদের কষ্টে উৎপাদিত ফসল একে-অপরের সাথে সহভাগিতার মধ্যে নিজেদের ঐক্যতা খুঁজে পায়।