হিল ভয়েস, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, মৌলভীবাজার: স্থানীয় বাঙালি মুসলিম ভূমিদস্যু কর্তৃক মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নে কাটাবাড়ি পানপুঞ্জির পানজুমে হামলা, পানজুম জবরদখল ও পান লুটপাট করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২৭ সেপ্টেম্বর সকালে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়।
এঘটনায় খাসিয়া আদিবাসী ও স্থানীয় ভূমিদস্যুরা কুলাউড়া থানায় পৃথক পৃথক লিখিত অভিযোগ দিয়েছে বলে জানা গেছে। দখল-পাল্টা দখল নিয়ে যে কোন সময়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। এ ঘটনা নিয়ে এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
কুলাউড়া থানায় খাসিয়া আদিবাসীদের করা লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, কর্মধা ইউনিয়নের টাট্রিউলি গ্রামের রফিক মিয়া (৪০), বশির মিয়া (৩৫), উস্তার আলী (৪৫), হারুন মিয়া (৫০) এর নেতৃত্বে ১৫-২০ জন লোক রোববার ভোর আনুমানিক ৪:০০ টা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পানপুঞ্জিতে প্রবেশ করে। দুষ্কৃতিকারীরা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে পানজুমের পাহারাদারদের তাড়িয়ে দেয়। এরপর থেকে দিনভর পান লুট ও গাছপালা কেটে তান্ডব চালায় পানপুঞ্জিতে। পানজুমের পাহারাদাররা জুমের মালিককে বিষয়টি জানালে পুঞ্জিবাসী বাঁধা দিতে গেলে হামলাকারীরা প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এতে পুঞ্জিবাসী ভয়ে ফিরে আসে।
এদিকে উক্ত ঘটনায় স্থানীয় ভূমিদস্যু রফিক মিয়াও কুলাউড়া থানায় পৃথক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৬৭ সনে তার পিতা মৃত আব্দুস সাত্তার সরকারে নিকট থেকে লিজ গ্রহণ করেন। খাসিয়ারা কিছু অংশ জোরপূর্বক দখল করে পান চাষ করে আসছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় গত ২৭ সেপ্টেম্বর বিকেলে কুলাউড়া থানার এসআই রহিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং উভয়পক্ষ শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার নির্দেশ দেন।
পানজুমের মালিক জস্পার আমলরং জানান, স্থানীয় ভূমিদস্যুরা ৪.৯৫ একর পানজুম ভূমি জবরদখল করেছে। যেভাবে দুষ্কৃতিকারীরা লুটপাট চালাচ্ছে, এতে পানজুমে লাখ থেকে দেড় লাখ টাকার ক্ষতি সাধন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিরোধীয় এলাকার কর্মধা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার সিলভেস্টার পাঠাং জানান, পানজুমের মালিক জস্পার ও পুঞ্জিবাসী মোবাইল ফোনে আমাকে বিষয়টি জানান। স্থানীয় ভূমিদখলকারী লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পানজুম জবর দখল করেছে। বিষয়টি দেখে আমি কর্মধা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করি। সোমবার বিকেল পর্যন্ত দুষ্কৃতিকারীরা পান জুম জবর দখলে রেখেছে।
কর্মধা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এমএ রহমান আতিক জানান, ইউনিয়নের মেম্বার সিলভেস্টার পাঠাং পানজুম জবর দখলের বিষয়টি আমাকে জানান। আমি প্রতিপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেছি। তারা বলেছে, তারা জুম দখল করেনি, এটা তাদের ক্রয়কৃত জায়গা। আমি উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার এবং বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধানের আশ্বাস দিয়েছি।
কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইয়ারদৌস হাসান জানান, পানজুমে হামলার অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তের জন্য অফিসার পাঠিয়েছি। তদন্তক্রমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।