আলিকদমে স্কুলের নামে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন কর্তৃক ম্রো সম্প্রদায়ের জমি দখল

হিল ভয়েস, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, বান্দরবান: বান্দরবানের আলিকদম উপজেলাধীন ২নং চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের ২৯০নং মাংগু মৌজার পামিয়া কার্বারী পাড়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম ভাঙ্গিয়ে ম্রো সম্প্রদায়ের জমি দখলের অভিযোগ উঠছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন-এর দ্বীপতরী অনাথালয়ের কর্তৃকপক্ষ আমাদের এলাকায় দামতুয়া ঝর্না পরিদর্শনে আসে। পরে এখানে তাদের জমি পছন্দ হলে তারা মাংগু মৌজার হেডম্যান লাংনেট ম্রোকে টাকা দিয়ে প্রথমে আমাদের ভোগদখলীয় ৫.০ একর জমি দানপত্র নামে কাগজ করে নিয়েছেন মোঃ মিজানুর রহমান নামে এক ব্যাক্তি।

এলাকাবাসী আরো জানান, তারা আমাদের সাথে কোন পরামর্শ না করে তাদের মনগড়া জমি নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করে। এখানে পামিয়া কার্বারী পাড়া, লম্পু কার্বারী পাড়া, নামচাক ম্রো কার্বারী পাড়াসহ ৩টি গ্রামের বসবাস রয়েছে অনেক বছর ধরে। কিন্তু এই দ্বীপতরী অনাথালয়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আমাদের গ্রামের ছেলেমেয়েরা পড়ালেখার সুযোগ পাচ্ছে না।

চুংতাই ম্রো ও মেনওয়াং ম্রো অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের দ্বীপতরী অনাথালয়ের নাম দিয়ে আমাদের গ্রামের পাশের জমিগুলো দখল নিয়েছে। জমি দখল নেওয়ার কারণ আমাদের বিভিন্ন ধরণের সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে, যেমন আমরা জুম চাষ করতে পারি না, গবাদিপশু পালন করতে সমস্যা, গ্রামের পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। তারা প্রথমে ৫.০ একর জমি নিলেও এবছর আবার ৫.০ একর জমি দখল নিয়েছেন, সব মিলে ১০ একর পাহাড় দখল করে রেখেছেন।

প্রতিষ্ঠানের পক্ষে দলিল গ্রহীতা মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, লাংনেট ম্রো হেডম্যানের ছেলে লাংরাও ম্রো কাছ থেকে প্রতিষ্ঠানের নামে জমি ক্রয় করি নাই। তিনি প্রতিষ্ঠানকে ৫.০ একর জমি দান করেছেন। তাই আমরা সেখানে জমি নিয়ে প্রতিষ্ঠান করেছি।

পার্বত্য চট্রগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ অথবা বান্দরবান জেলা পরিষদের অনুমতিপত্র আছে কিনা তখন মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের সরকারের অনুমতি আছে। আঞ্চলিক পরিষদ ও জেলা পরিষদের অনুমতি লাগে না।

দ্বীপতরী অনাথালয়ের পরিচালক মোঃ হাসান বলেন, আমরা বান্দরবান জেলায় ৩টি বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন এর  প্রতিষ্ঠান স্হাপন করেছি, আলিকদমে ১টি, নাইক্ষ্যংছড়ি বাইশারী ইউনিয়নে ১টি  ও রুমা উপজেলার চিম্বুক পাহাড়ের পুরোন বাংলো এলাকায় ১টি। এখানে শুধুমাত্র এতিম ও অনাথ ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য প্রতিষ্ঠানটি স্থাপন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এখানে কোন বাঙালি ছাত্র-ছাত্রী রাখা হয় না, এখানে পঞ্চম শ্রেণি পড়ালেখা করে পাশ করলে রামুতে পাঠানো হয়। পরে সেখান থেকে চট্রগ্রামে পাঠানো হয়। তিনি আরো বলেন, এখানে আরো প্রচুর জায়গা প্রয়োজন। কারণ বিভিন্ন ধরণের বাড়ীঘর নির্মাণ করতে হবে বলে জানান।

পামিয়া ম্রো মেম্বার ও হেডম্যানকে মোবাইলের মাধ্যমে বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য কল দিলেও তাদেরকে সংযোগ পাওয়া যায়নি।

More From Author