১৭ই আগস্ট: জুম্ম জাতির একটি অতি বিষাদময় কালোদিন

                 প্রধীর তালুকদার                   

ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি সরদার বল্লব ভাই প্যাটেল সর্বদাই চেয়েছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলটি ভারতে অর্ন্তভুক্ত হোক। ১৫ ই আগস্ট ১৯৪৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে বৃটিশ শাসনের প্রতিনিধি ডেপুটি কমিশনার জি. এল. হাইড নিজেই ভারতীয় পতাকা উড়িয়েছিলেন রাঙ্গামটিতে। কারণ তিনি জানতেন ভারত বিভাগের শর্ত অনুসারে এই অংশটি ভারতে অর্ন্তভুক্ত হবেই।

অথচ ১৭ই আগস্ট ১৯৪৭, চুড়ান্ত ঘোষণা প্রকাশিত হয় পার্বত্য চট্টগ্রামের পাকিস্তানে অর্ন্তভুক্তির খবর। ভারত বিভক্তি যখন অনিবার্য হয়ে উঠে তখন ১৫ই অগাস্টের ঠিক ৬ মাস আগে, ৪৭ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি পার্বত্য চট্টগ্রামকে ভারতভুক্তির আবেদন জানিয়ে দিল্লীতে একটি স্মারকলিপি পাঠান হয়। ৩০শে জুন বেঙ্গল বাউন্ডারী কমিশন ঘোষণা করেন গর্ভনর জেনারেল। ১৪ই জুলাই কমিশনকে আরো একটি স্মারকলিপি দেয়া হয়।

১৬ই জুলাই থেকে কমিশনের শুনানী (হেয়ারিংস) শুরু হয়। ১৯শে জুলাই ৯১ মিনিটের মতো পার্বত্য চট্টগ্রাম ইস্যুটি নিয়ে কমিশনের চেয়ারম্যান স্যার সিরিল রেডক্লিফের অনুপস্থিতিতে হেয়ারিংস চলে। ইতিমধ্যে ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেনডেন্স এ্যাক্ট-১৯৪৭ প্রকাশিত হয়। দুঃসংবাদ ছড়িয়ে পড়ে যে, বেঙ্গল বাউন্ডারী কমিশনের চেয়ারম্যান স্যার সিরিল রেডক্লিফ কমিশনের দুই অমুসলিম সদস্য জাস্টিস বিজন মুখার্জী ও চারু বিশ্বাসের ৭ পাতার যুক্তিপূর্ণ উপস্থাপনাকে অগ্রাহ্য করে এবং ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার সরদার বল্লবভাই প্যাটেলের দৃষ্টি আকর্ষণী প্রস্তাবনাকে রুষ্টভাবে ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলে দেন।  দুর্ভাগ্য যে, হেয়ারিং-এর সময় পার্বত্য চট্টগ্রামের ভারতভুক্তির দাবি মনোযোগ সহকারে বিবেচনা করার মতো এমন কেউ না থাকায় এবং কংগ্রেস ও হিন্দু মহাসভার কোন সদস্য এ বিষয়ে একটি শব্দও উচ্চারণ না করার কারণে  অবশেষে বেঙ্গল বাউন্ডারী কমিশনের সিদ্ধান্তের বদৌলতে পার্বত্য চট্টগ্রাম পূর্ব পাকিস্তানে ঢুকে যায়। ফলে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও এতদাঞ্চলের নিরীহ অধিবাসীদের ভাগ্য মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠের পূর্ব পাকিস্থানের শাসনের ঝাঁতাকলে নিমজ্জিত হয়ে যায়।

এরপরও পার্বত্যবাসীর প্রতিবাদ থেমে থাকেনি। এরমধ্যে একদিন ভোর সকালে স্নেহ কুমার (এস.কে.) চাকমার সাথে সরদার বল্লব ভাই প্যাটেলের কথা হয়। এস. কে. চাকমা মি. প্যাটেলকে বলেন, “আমি ফিরে যাচ্ছি পার্বত্য চট্টগ্রাম ভারতের ঘোষণা করার জন্য এবং অন্যথায় কিছু হলে তা প্রতিহত করতে। আপনি কি আমার পক্ষ নেবেন স্যার?” উত্তরে সরদার বল্লব ভাই প্যাটেল বলেছিলেন, “নিশ্চয়ই, আমি আপনার সাথেই আছি, পার্বত্য চট্টগ্রামের পক্ষে। চলে যান তাড়াতাড়ি।”

৪ঠা আগস্ট এস. কে. চাকমা ফিরে আসেন রাঙ্গামাটি। ১৯৪৭ সালের ১৪ ও ১৫ আগস্টের মধ্যরাতে এ্যাকশন কমিটি হাজার খানেক সমর্থক নিয়ে ডেপুটি কমিশনার বাঙলোয় হাজির হন। ডি. সি. কর্ণেল জি. এল. হাইড বেরিয়ে এসে তাদের স্বাগত জানান। এস. কে. চাকমা ডেপুটি কমিশনারকে জিজ্ঞাসা করেন, “স্যার, ইজ নট ইন্ডিয়া ইনডেপেনডেন্স নাও?” প্রতি উত্তরে ডি. সি বলেন, হ্যাঁ তোমরা এখন থেকে স্বাধীন।” এস. কে. চাকমা আরো বলেন, “ভারত স্বাধীন আইনে কি পার্বত্য চট্টগ্রাম ভারতের অংশ নয় স্যার?” কমিশনার কর্ণেল জি. এল. হাইড উত্তর দেন, ভারত স্বাধীন আইন ১৯৪৭ অনুসারে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভারত শাসনের অধীন।” এস. কে. চাকমা, “স্যার, আমাদের কি জাতীয় পতাকা উড়ানো উচিত নয়?”

ডেপুটি কমিশনার, “হ্যাঁ, কিন্তু আমরা বৃটিশ নাগরিকরা জাতীয় পতাকা উড়াই সূর্য্য উঠার সময়। অনুগ্রহ করে ভোরে আসুন। ফুটবল খেলার মাঠে জনসমক্ষে ভারতীয় জাতীয় পতাকা উড়িয়ে দিন আর তখন আমি নিজেই স্যালুট করবো। এরপর আমি আমার অফিস ও বাঙলোয় ভারতীয় জাতীয় পতাকা উড়াবো যেখানে আপনাদের সবাইকে উপস্থিত থাকার আমন্ত্রন করি। কাজেই অনুগ্রহ করে আপনারা আমার এই পতাকা উত্তলনের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।”

স্নেহ কুমার চাকমা তার বয়ানে উল্লেখ করেছেন-স্বনামধন্য নেতা কামিনী মোহন দেওয়ানকে অনেক অনুরোধ করা সত্ত্বেও এই পতাকা উত্তলনে অপারগতা প্রকাশ করায় এ্যাকশন কমিটি তাকে ১৫ই অগাস্ট সকালে ভারতীয় জাতীয় পতাকা উড়ানোর জন্য বাধ্য করে। পরে মিছিল সহকারে ডেপুটি কমিশনারের অফিস ও বাঙলোয় ভারতীয় জাতীয় পতাকা সরকারিভাবে উড়ানো হয়। পতাকা উড়ানোর এই খবর চারিদিকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। যে সময় পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রাণকেন্দ্র রাঙ্গামাটি শহরে এই পতাকা উড়ানোর অনুষ্ঠান চলছিল সে সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে দিল্লীতে বি. এন. রাও-এর লেখা রিপোর্ট সরদার প্যাটেলকে পাঠাচ্ছিলেন জওহর লাল নেহেরু।

তৎকালীন ভারতীয় প্রধান মন্ত্রী জওহর লাল নেহেরুর চিঠিটি নিম্নরূপ-

নিউ দিল্লী, ১৫ আগস্ট ১৯৪৭

প্রিয় বল্লবভাই,

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে একটি নোট পাঠানোর জন্য আমি বি. এন. রাওকে বলেছি তিনি আমাকে যে ব্যাখ্যাটি দিয়েছেন তা সংযোজিত হলো

আপনারই,

জওহর লাল

বি. এন. রাও-এর নোটে কি ছিল পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে? আর এই নোটই যত্তোসব কাল হয়ে দাঁড়ালো। ইতিহাসের আস্তাকুড়ে ছুঁড়ে পড়ল এই পার্বত্য অঞ্চলটি পূর্ব পাকিস্থানের অভ্যন্তরে ঢুকে। বি. এন. রাও-এর বয়ানটি সংক্ষেপে নিম্নরূপ-

বাউন্ডারী কমিশনের রিপোর্ট এখনো প্রকাশিত হয়নি। কিন্তু রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলটি পূর্ব বাংলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলি নিম্নরূপ:-

১) ১৯৪১ সালের সেনসাস অনুসারে ২,৪৭,০০০ জনসংখ্যার মধ্যে কেবল ৭,৩০০ মুসলিম অধ্যুষিত ৫০০০ বর্গমাইলের এই পার্বত্য অঞ্চল। বলা যায় প্রায় ৯৭% জনগণ অমুসলিম।

২) ভারত স্বাধীনতা আইন অনুযায়ী প্রাদেশিক সীমান্ত সম্পর্কিত বর্ণনায় উল্লেখিত রয়েছে যে, এই পার্বত্য অঞ্চলটি পশ্চিম বাংলার মধ্যে পড়েছে। ফলে এই পার্বত্যাঞ্চলটি ভারতীয় শাসনাধীনের অন্তর্ভুক্ত।

৩) ১৯৩৫ সালের আইন অনুসারে এই পার্বত্য অঞ্চলটি একটি শাসন বর্হিঃভূত অঞ্চল (এক্সক্লুডেড এরিয়া)। যার কারণে এই এলাকার অধিবাসীদের বাংলার আইন পরিষদে কোন প্রতিনিধিত্ব নেই এবং বাংলার বিভক্তি নিয়ে তাদের কোন অভিপ্রায় প্রকাশ করার কোন প্রকার সুযোগ নেই।

সুতরাং প্রয়োজনীয় স্বাভাবিক বিচারে সার্বিক বিবেচনায় সর্বোতভাবে অমুসলিম অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় অঞ্চলটি পশ্চিম বাংলার মধ্যে হয়েও চূড়ান্ত পর্যায়ে পূর্ব বাংলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সিদ্ধান্তকারী কর্তৃপক্ষের দ্বারা এই অঞ্চলের অধিবাসীদের বক্তব্য সম্পূর্ণভাবে শোনা উচিত।

বি. এন. রাও-এর ব্যাখ্যায় আরো বলা আছে: তবে আপাতভাবে প্রতিয়মান হয় যে, বাউন্ডারী কমিশন নীতিবহির্ভূতভাবে উক্ত সিদ্ধান্ত দিয়েছে। এই প্রেক্ষিতে প্রশ্ন উদ্ভুত হতে পারে এর কোন সমাধান আছে কিনা। পাকিস্থান ভারতীয় স্বাধীনতা আইনের এই তিন শর্তানুসারে পার্বত্য অঞ্চলটি নিজের দাবি করবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। ইন্ডিয়াও নীতিগত বিষয় ভঙ্গ করে পার্বত্য অঞ্চলটিকে পূর্ব বাংলায় অন্তর্ভুক্ত করার বিরোধিতা করে দারি করতে পারে। ফলে অঞ্চলটির কার অধীনে চলে যাবে তার সঠিক বিচারের জন্য বিরোধ সৃষ্টি হতে পারে। এক্ষেত্রে ১৯৩০ সালের ইম্পেরিয়াল কনফারেন্স-এর প্রস্তাবিত শর্তও এই বিরোধের সমাধান করতে ব্যর্থ হয়।

এভাবেই কিন্তু বি. এন. রাও কোন পরিস্কার মতামত দিতে পারেননি তার ব্যাখ্যার সারাংশে। কাজেই কংগ্রেস হাই কমান্ডের অবস্থানও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে আর জোরালো হতে পারেনি। অন্যদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রতিনিধিদের ক্ষেত্রেও নিজেদের মধ্যে সংহতি ও সমন্নয়ের অভাব একটি বড় দুর্ভাগ্য বলা যায়। যুব নেতা কামিনী মোহন দেওয়ান, চাকমা রাজ প্রতিনিধি এবং স্নেহ কুমার চাকমার উদ্যোগের মধ্য ছিল ব্যাপক দূরত্ব। বিভক্ত ও বিচ্ছিন্ন নেতৃত্ব। বোমাঙ সার্কেলের রাজা যেমন কামনা করেছিলেন বার্মায় অন্তর্ভুক্তি, তেমনি ত্রিপুরাদের একাংশও চেয়েছিলেন ত্রিপুরা রাজ্যের সাথে মিশে যাওয়া।

সুতরাং যা হবার তাই হয়ে গেল পার্বত্য চট্টগ্রামের ভাগ্যের আকাশে। পার্বত্য চট্টগ্রামের যুক্তিহীন এই পাকিস্তানে অন্তর্ভুক্তি আজ কেবল বর্তমান বাংলাদেশের জন্য ক্রমাগতভাবে ক্ষতি করে যাচ্ছে তা নয় এই মহান গণতান্ত্রিক ভারতভূমির জন্যও কোনদিন আর্শিবাদ হয়ে উঠেনি। পার্বত্য চট্টগ্রামের নিপীড়িত বঞ্চিত জুম্ম জনগোষ্ঠীর জন্যে এই অন্তর্ভুক্তি একটি নির্মম অভিশাপ তো বটেই।

অবশ্য পন্ডিত নেহেরুও স্বাধীনতার দীর্ঘকাল পর এক জায়গায় উল্লেখ করেছিলেন, ভারতও বাউন্ডারী কমিশনের এওয়ার্ডকে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। তিনি উল্লেখ করেন, “আমরা আইনগত দিক থেকে ব্যাপারটি গ্রহণ করেছিলাম যেহেতু আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। আমি মনে করি, বাউন্ডারী কমিশনের এওয়ার্ডে বাংলার বেশকিছু অঞ্চল, খুলনা জেলা এবং বিশেষভাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে অন্যায় করা হয়েছে।”

যাই হোক ঘটে যাওয়া সেই যুগসন্ধিক্ষণে কোন জাতি বা কোন অংশের ভাগ্যে কি ঘটে গেছে তার হিসেব নিকেশ করে আজ আর হয়তো কোন লাভ নেই। অতীত বরাবরই অতীত। বর্তমান প্রেক্ষাপটে একে শুধরানো হয়তো অসম্ভব। কিন্তু ভবিষ্যতের প্রেক্ষাপটে একেবারেই কি অসম্ভব? তাই আমাদের ইতিহাসকে জানতে হয়, পড়তে হয়। জেনে বা পড়ে ভবিষ্যতের জন্য শিক্ষা নিতে হয়।

More From Author

17th August: A sad black day for the Jumma people

          Pradhir Talukdar            

Sardar Vallabhbhai Patel, the first Vice President of India, always wanted the Chittagong Hill Tracts to be included in India. On 15th August 1947, the representative of the British rule in the Chittagong Hill Tracts, Deputy Commissioner G. L. Hyde himself hoisted the Indian flag in Rangamati. Because he knew that this part would be included in India as per the conditions of the partition of India.

However, on 17 August 1947, the final announcement was made about the annexation of the Chittagong Hill Tracts to Pakistan. When the partition of India became inevitable, exactly 6 months before 15th August, a memorandum was sent to Delhi on 15th February 1947, requesting the Chittagong Hill Tracts’ accession to India. On 30 June, the Governor General announced the Bengal Boundary Commission. Another memorandum was submitted to the Commission on 14 July.

The hearings of the Commission started from 16 July. The hearings were held on 19 July for 91 minutes in the absence of Sir Cyril Radcliffe, Chairman of the Bengal Boundary Commission on the Chittagong Hill Tracts Issue. Meanwhile, the Indian Independence Act-1947 was published.

The bad news is that Sir Cyril Radcliffe, Chairman of the Bengal Boundary Commission, ignored the 6-page logical presentation of two non-Muslim members of the Commission, Justice Bijan Mukherjee and Charu Biswas, and angrily thrown Deputy Prime Minister Sardar Vallabhbhai Patel’s attention-grabbing proposal into the dustbin. Unfortunately, at the time of the hearing, there was no one to consider the demand for Indian annexation of the CHT and no member of the Congress and the Hindu Mahasabha uttered a single word on the issue, eventually, the Chittagong Hill Tracts were incorporated into East Pakistan by a decision of the Bengal Boundary Commission. As a result, the fate of the Chittagong Hill Tracts and its innocent inhabitants was plunged into the steamroller of Muslim-majority rule in East Pakistan.

Even then the protests of the hill people did not stop. One morning Sneha Kumar (SK) Chakma talked to Sardar Vallabhbhai Patel. S. K. Chakma told Mr. Patel., “I am going back to declare Chittagong Hill Tracts as India and to resist if anything else. Will you take my side, sir?” In reply, Sardar Vallabhbhai Patel said, “Of course, I am with you, for the Chittagong Hill Tracts. Please go there quickly.”

At midnight on 14th and 15th August 1947, the Action Committee appeared in the Chittagong Hill Tracts Deputy Commissioner’s Bungalow with about a thousand supporters. DC Colonel G. L. Hyde came out and greeted them. S. K. Chakma asked the Deputy Commissioner, “Sir, is India not independent?” In reply, “Yes, you are free from now on,” DC said. S. K. Chakma added, “Isn’t the Chittagong Hill Tracts a part of India under India’s independent law, sir?” Commissioner Colonel G. L. Hyde replied, “The Chittagong Hill Tracts are under Indian rule under the 1947 Indian Independence Act.” S. K. Chakma, “Sir, shouldn’t we raise the national flag?”

Deputy Commissioner, “Yes, but we British citizens hoist the national flag when the sun rises. Please come tomorrow in the morning. You will fly the Indian national flag in front of the people on the football field and then I will salute myself. I will then fly the Indian national flag to my office and bungalow where I invite you all to attend. So please join me in hoisting this flag.”

Sneha Kumar Chakma mentioned in his statement that the action committee forced him to hoist the Indian national flag on the morning of August 15 after well-known leader Kamini Mohan Dewan failed to hoist the flag despite many requests to him. Later in the procession, the Indian national flag was officially raised at the Deputy Commissioner’s office and bungalow.

The news of the flag hoisting was spread around. At the time when the flag-raising ceremony was going on in Rangamati town, the heart of the Chittagong Hill Tracts, B. N. Rao’s written report was being sent to Sardar Patel by Jawaharlal Nehru.

The letter of the then Prime Minister of India Jawaharlal Nehru is as follows-

New Delhi, 15 August 1947

Dear Vallabhbhai,

I told B. N. Rao to send a note about the Chittagong Hill Tracts. The explanation he gave me was enclosed herewith.

Yours,

Jawaharlal

What was in B. N. Rao’s note about Chittagong Hill Tracts? And this note became a danger. This hilly region was thrown into the dustbin of history by inclusion into East Pakistan. B. N. Rao’s statement is briefly as follows-

The report of the Boundary Commission has not been published yet. But the report said that the Chittagong Hill Tracts region has been included in East Bengal. The relevant issues in this regard are as follows:

1) According to the 1941 census, out of a population of 247,000, only 7,300 are Muslims in this hilly region of 5,000 square miles. It can be said that about 97% of the population is non-Muslim.

2) According to the Indian Independence Act, the description of the provincial boundary states that this hilly region falls within West Bengal. As a result, the hill region came under Indian rule.

3) According to the law of 1935, this hilly region is an excluded area. Due to which the residents of this area have no representation in the Bengal Legislative Assembly and have no opportunity to express their views on the partition of Bengal.

Thus, the area has been included in East Bengal in the final stage, even though it is in the middle of West Bengal, as it is the most non-Muslim inhabited area in the overall consideration of the necessary natural justice. Residents of the region should be fully heard by the decision-making authority.

It is further cited in the B. N. Rao’s explanation: But it appears that the Boundary Commission made the decision in an unprincipled manner. In this context, the question may arise as to whether there is any solution. There is no doubt that Pakistan will claim the hill country under these three conditions of the Indian Independence Act. India may also break the policy and oppose the inclusion of the hill region in East Bengal. This could lead to disputes over who will be in charge of the region. In this case, the conditions proposed by the Imperial Conference of 1930 also failed to resolve this dispute.

In this way but B. N. Rao could not give a clear opinion on the gist of his explanation. Therefore, the position of the Congress High Command could not be stronger on the issue of Chittagong Hill Tracts. On the other hand, the lack of solidarity and coordination among the representatives of the Chittagong Hill Tracts remains a great misfortune. There was a huge gap between the initiative of youth leader Kamini Mohan Dewan, Chakma Raj representative and Sneha Kumar Chakma. The leadership was divided and isolated from each other. Just as the Raja of the Bohmong circle wanted to be included in Burma, so did some of the Tripuras want to merge with the state of Tripura.

So, that’s what happened became the fate of the Chittagong Hill Tracts. This irrational inclusion of the Chittagong Hill Tracts in Pakistan has not only continued to harm Bangladesh present day, but has never been a blessing for this great democratic land of India. This inclusion is also a cruel curse for the oppressed and deprived Jumma people of the Chittagong Hill Tracts.

However, as Pandit Nehru also mentioned in one place long after independence, India also protested against the Boundary Commission award. He noted, “We took the matter legally as we promised. I think the award of the Boundary Commission has done injustice to several regions of Bengal, Khulna district and especially the Chittagong Hill Tracts.”

 

 

More From Author