হিল ভয়েস, ৭ আগস্ট ২০২০, রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার জীবতলী ইউনিয়নে সেনা-মদদপুষ্ট সংস্কারপন্থী সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্তৃক নিরীহ এক জুম্ম কাঠমিস্ত্রিীকে আটক করে গবঘোনা সেনা ক্যাম্পের নিকট সোপর্দ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে যে, জীবতলী ইউনিয়নের পানছড়ি গ্রামের বাসিন্দা সবিনল চাকমার ছেলে বীরজিৎ চাকমা (২৬) কাঠমিস্ত্রির কাজে প্রত্যেক দিন সকালে ধনপাতা গ্রামে যান এবং কাজ শেষে ট্রলার যোগে সন্ধ্যা সাতটার দিকে পানছড়ি গ্রামস্থ নিজ বাড়ীতে ফিরে আসেন।
প্রতিদিনকার মতো গতকাল ৬ আগস্ট ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০০ টার দিকে বাড়ি ফেরার পথে জীবতলীস্থ অধীর চাকমার (হেগেরা) বাড়ীর সন্নিকটে সেনা-সমর্থিত সংস্কারপন্থীদের চেকপোস্ট পৌঁছলে সন্ত্রাসীরা ট্রলারটি ঘাটে ভিড়ানোর নির্দেশ দেয়।
নির্দেশ মোতাবেক ট্রলারটি চেকপোষ্টের ঘাটে ভিড়ানোর সাথে সাথে সন্ত্রাসীরা ট্রলারে উঠে প্রথমে বীরজিৎ চাকমা থেকে মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেয়। তারপর তাকে জীবতলী চেয়ারম্যান পাড়াস্থ তাদের আস্তানায় নিয়ে যায়।
সেখানে হয়রানি ও জিজ্ঞাসাবাদের পর রাত আনুমানিক দশ টার সময় সংস্কারপন্থী সন্ত্রাসীরা বীরজিৎ চাকমাকে স্থানীয় গবঘোনা সেনা ক্যাম্পে সোপর্দ করে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়।
আজ ৭ আগস্ট বীরজিৎ চাকমার পিতা-মাতাসহ জীবতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুদত্ত চাকমা, একই ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড মেম্বার নয়নমনি চাকমা বীরজিৎ চাকমা সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে চেয়ারম্যান পাড়াস্থ সংস্কারপন্থী সন্ত্রাসীদের আস্তানায় যান। কিন্তু সংস্কারপন্থী সন্ত্রাসীরা বীরজিৎ চাকমা সম্পর্কে তাদেরকে কোন কিছুই বলেনি।
আজ সকাল ৯:০০ টার দিকে গবঘোনা হতে মোঃ জহির গবঘোনা ক্যাম্পে গিয়ে বীরজিৎ চাকমাকে ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করেছিলেন। গবঘোনা ক্যাম্প কর্তৃপক্ষ মোঃ জহিরকে বলেছিল, তারা বীরজিৎ চাকমাকে ছেড়ে দিতে পারবো না। ক্যাম্প কর্তৃপক্ষ উল্টো সংস্কারপন্থীদের কাছে যেতে বলেছিল এবং সংস্কারপন্থীরা যদি ছেড়ে দিতে বলে তাহলে ক্যাম্প কর্তৃপক্ষ ছেড়ে দেবে বলে মোঃ জহিরকে জানায়।
বর্তমানে বীরজিৎ চাকমাকে কোথায় রাখা হয়েছে বা কোন অবস্থায় আছে তা নিয়ে তার মা-বাবারা উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন।
মোড়ঘোনা থেকে গ্রেফতারকৃতদের ছেড়ে দিয়েছে রাঙ্গামাটি জোন কর্তৃপক্ষ
গত ৫ ও ৬ আগস্ট বড়াদম দেপ্পোছড়ি সেনাক্যাম্পের সেনা সদস্যরা মগবান ইউনিয়নের মোড়ঘোনা থেকে সোনাধন চাকমা ও চিক্কো চাকমা নামে যে দুইজন ব্যক্তিদেরকে আটক করে নিয়ে গেছে, তাদেরকে আজ রাঙ্গামাটি জোন হেডকোয়ার্টার থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
আজ দুপুর ১২:০০ টার দিকে সোনাধন চাকমা ও চিক্কো চাকমাকে মগবান ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য দিপুরন চাকমা, স্থানীয় মৌজার হেডম্যান দীপংকর দেওয়ান ও দেপ্পোছড়ি গ্রামের অনুপম কার্বারী (সুধীর) প্রমুখ ব্যক্তিদের জিম্মায় রাঙামাটি জোন কর্তৃপক্ষ ছেড়ে দেয় বলে স্থানীয় সূত্র জানা যায়।