কাপ্তাইয়ের ওয়াগ্গাতে আদিবাসী দিবস পালনে সেনা, পুলিশ ও বিজিবির বাধা

হিল ভয়েস, ১০ আগস্ট ২০২০, রাঙ্গামাটি: ৯ আগস্ট আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস ২০২০ উপলক্ষে কাপ্তাইয়ের ওয়াগ্গাতে আয়োজিত মানববন্ধনে সেনা, পুলিশ ও বিজিবি কর্তৃক বাধা দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৯ আগস্ট সকাল ১০ঃ৩০ টার ওয়াগ্গার কুকিমারা এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।

কুকিমারা গ্রামের ছাত্র-যুবদের উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধন সকাল ৯ আগস্ট সকাল ৯ঃ৩০ ঘটিকার দিকে কুকিমারা গ্রামের রাস্তার যাত্রী ছাউনি সামনে শুরু হয়। মানববন্ধনে শিক্ষক- শিক্ষার্থী সহ প্রায় জনা শতেক মানুষ উপস্থিত ছিল। মানববন্ধন চলাকালীন সময়ে এসে বাগড়া দেয় সেনা, পুলিশ ও বিজিবির একটি দল। তাদের সাথে গোয়েন্দা সংস্থার লোক ছিল বলে আরও জানা যায়।

তারা প্রথমে মানববন্ধন করতে নিষেধ করে। এরপর আয়োজকদের সাথে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। বলতে শুরু করে দেশে কোন আদিবাসী বলতে কোন শব্দ নাই, যা আছে তারা সবাই উপজাতি, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সুতরাং তোমরা আদিবাসী দাবি করে অসাংবিধানিক কাজ করতে পারনা। আদিবাসী বলা যাবেনা, আদিবাসী হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিতে পারবেনা। দেশদ্রোহী কাজ করতে পারবেনা।

তারপর যে বা যারা আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি পেতে চাইবে তারা যেন গ্রেফতার, জেল-মামলার প্রস্তুত থাকে বলে ভয় দেখায়। এ সময় আয়োজক কমিটির সাথে সেনা, পুলিশ ও বিজিবির বেশ কিছুক্ষণ বাকবিতন্ডা চলে। আয়োজকদের পক্ষ থেকে মতামত প্রকাশ ও সভা সমাবেশের সাংবিধানিক অধিকারের কথা তুললে কোন সেনা কর্মকর্তা উত্তর দিতে পারেননি।

আয়োজকরা সংবিধানে তো লেখা নেয় আদিবাসী বলা যবেনা তাহলে আমাদের দাবি কেন অসাংবিধানিক হবে বললে তাতেও মানববন্ধন ভুন্ডুলকারীরা কোন উত্তর দিতে পারেনি

তারপর কোন কথা না বলে সেনা, পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা এরপর যাদের যাদের কাছে মোবাইল ছিল সব মোবাইল ধরে ধরে চেক করে কর্মসূচীর ছবি ও তাদের বাগড়া দেয়ার মুছে ফেলে আর কে কে বক্তব্য দিয়েছে তা দেখার জন্য ছবিগুলো তাদের মোবাইলে নিয়ে যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন হিল ভয়েসকে জানান, পার্বত্য চট্টগ্রাম যে অঘোষিত সেনা শাসনের অবরুদ্ধ তা গত ৯ আগস্টের ঘটোনার পর আমার কাছে প্রতীয়মান হয়েছে। যেখানে আদিবাসীদের কোন অধিকার নেই কিন্তু সেটেলাররা দিনে রাতে যখন তখন মিছিল-সমাবেশ করতে পারে।

প্রতিমন্ত্রী মর্যাদা সম্পন্ন শ্রী সন্তু লারমার গাড়ি অবরোধ করতে পারে। আইনের পোশাক পড়ে সবাইকে সমান চোখে দেখার শপথ নিয়ে এমন সাম্প্রদায়িক সেনা-পুলিশ ও বিজিবির ভূমিকা সত্যি লজ্জাকর এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামিল।

More From Author