হিল ভয়েস, ২ জুলাই ২০২০, রাঙ্গামাটি: লংগদু উজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) / এসি (ল্যান্ড)-এর আদেশ তোয়াক্কা না করে লংগদু উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল বারেক সরকার কর্তৃক নবীনচান চাকমার নামীয় হোল্ডিং নং আর-৫০ বন্দোবস্তীকৃত ৩.০ একর জায়গা মুসলিম সেটেলারদের মধ্যেভাগ বন্টন করে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য যে, নবীনচান চাকমার নামীয় হোল্ডিং নং আর-৫০ বন্দোবস্তীকৃত ৩.০ একর জায়গা জবরদখল করে মুসলিম সেটেলাররা রাতের আঁধারে বাড়ি নির্মাণের জেরে লংগদু উপজেলা ভূমি অফিস থেকে জুম্ম ও সেটেলার উভয় পক্ষকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেয়া হয়।
আরো উল্লেখ্য যে, গত ৪ জুন ২০২০ দিবাগত রাতে লংগদুর বগাচতর ইউনিয়নের নবীনচান চাকমার বন্দোবস্তকৃত ৩.০ একর জমির উপর একই ইউনিয়নের রাঙ্গীপাড়ার মো: আলী আহমেদ চৌধুরী ও আব্দুল আলিম সরকার নামের দুই সেটেলার রাতের আঁধারে একটি ঘর নির্মাণ করে। অবৈধভাবে নির্মিত উক্ত ঘরটি নবীনচান চাকমা ১৬ জুন ভেঙে দিয়ে ইউএনও বরাবর একটি আবেদন পেশ করেন।
আবেদনের প্রেক্ষিতে ২২ জুন ২০২০ এসি (ল্যান্ড) সঙ্গে পুলিশ ফোর্স, সার্ভেয়ার, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং বাদী-বিবাদী সকলকে নিয়ে জায়গাটি পরিদর্শন করেন এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উক্ত জায়াগাটিতে কোন প্রকার কার্যক্রম না করার নির্দেশ প্রদান করা হয়।
কিন্তু ভূমির মালিক নবীনচান চাকমা বিষয়টি মেনে নিলেও মুসলিম সেটেলাররা তা তোয়াক্কা না করে উক্ত জায়গায় জঙ্গল পরিস্কার ও ফলজ গাছ রোপন করতে থাকে। এপ্রেক্ষিতে নবীনচান চাকমা আবারো এসি (ল্যান্ড)-কে বিষয়টি অবগত করেন।
পরে এসি (ল্যান্ড) বাদী-বিবাদী সকলকে কাগজপত্র নিয়ে ২৫ জুন ২০২০ তার কার্যালয়ে দেখা করতে বলেন। উক্ত সভায় নবীনচান চাকমা রেকর্ডীয় সমস্ত কাগজপত্র দেখাতে সক্ষম হলেও সেটেলাররা জমি ক্রয়ের সাদা কাগজে একটি দলিল ছাড়া আর কিছুই দেখাতে পারেননি।
সে সময় লংগদু উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল বারেক সরকার সেটেলারদের পক্ষ হয়ে সমঝোতার জন্য আরো ২/৩ দিন সময় পিছিয়ে নেয়ার প্রস্তাব করেন। তত্প্রেক্ষিতে এসি (ল্যান্ড)-ও তার সাথে সম্মতি প্রদান করে ২৯ জুন সমঝোতার দিনক্ষণ নির্ধারণ করে দেন।
গত ২৯ জুন ২০২০ জায়গাটি আাবারো সরেজমিনে পরিদর্শনের কথা থাকলেও আব্দুল বারেক সরকার সেখানে না গিয়ে বগাচতরস্থ চৌরাস্তার একটি চায়ের দোকানে বসে জায়গাটি বগাচতর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মোঃ আলী সরদার, ১নং ওয়ার্ডের মোঃ আব্দুল আলীম সরকার এবং ৫নং ওয়ার্ডের আলী আহম্মদ চৌধুরীর নামে তিনজন সেটেলারদের মাঝে ভাগ করে দেন।
এ নিয়ে এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে উপজেলা চেয়ারম্যানের এই অবৈধ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে এখনো লংগদু উপজেলা ভূমি প্রশাসনের পক্ষ গ্রহণ করা হয়নি।