হিল ভয়েস, ২০ জুলাই ২০২০, রাঙ্গামাটি: আজ ২০ জুন ২০২০ সেনা-সমর্থিত সংস্কারপন্থী সন্ত্রাসী কর্তৃক রাঙ্গামাটি জেলার লংগদু সদর উপজেলা এলাকা থেকে এক নারীসহ ৩ জুম্ম অপহরণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে জনগণের চাপে ও মুক্তিপণের বিনিময়ে পরে অপহৃত তিন জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
অপহরণের শিকার তিন ব্যক্তি হলেন- ১. রিপন চাকমা(৩০), পীং-চন্দ্র মোহন হেডম্যান, গ্রাম-রাঙ্গীপাড়া, লংগদু সদর ইউনিয়ন, ২. মিন্টু চাকমা, পীং-জিতেন্দ্র কাবার্রী, গ্রাম-রনজিৎ পাড়া, বগাচতর ইউনিয়ন, ৩. মিসেস নতুনা চাকমা (মহিলা কার্বারী), স্বামী-নিরোধ চাকমা, গ্রাম-চিবেরেগা, বগাচতর ইউনিয়ন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল আনুমানিক ১১:০০ টার দিকে সংস্কারপন্থী সন্ত্রাসীরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লংগদু সদরের বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, লংগদু শাখা কার্যালয়ের প্রাঙ্গণ থেকে রিপন চাকমা ও মিন্টু চাকমাকে এবং লংগদু বাজারের রাজু দোকান থেকে নতুনা চাকমাকে অপহরণ করে।
অপহরণের পর সন্ত্রাসীরা তাদের আস্তানা উপজেলার পরিত্যক্ত সার গোডাউন কোয়ার্টারের একটি কক্ষে রিপন চাকমা ও মিন্টু চাকমাকে এবং অপর একটি কক্ষে নতুনা চাকমাকে আটকে রেখে বাইরে থেকে তালাবদ্ধ করে রাখে। এরপর অপহৃতদের অভিভাবককে ফোন করে প্রত্যেকের জন্য ১ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ নিয়ে এক ঘন্টার মধ্যে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে বলে এবং বিষয়টি অন্য কাউকে না জানানোর নির্দেশ দেয়।
প্রায় তিন ঘন্টা ধরে আটক রাখার পর বিকাল প্রায় ২:০০ টার দিকে অভিভাবকদের চাপে ‘বিষয়টি কাউকে জানানো যাবে না মর্মে’ শর্ত দিয়ে নতুনা চাকমাকে ছেড়ে দেওয়া হলেও অপর দুইজনকে তখন পর্যন্ত ছেড়ে দেয়া হয়নি।
সংস্কারপন্থীরা প্রথমে অপর দুই জনের অপহরণ ও আটকের বিষয়টি অস্বীকার করলেও, পরে এলাকার জনগণের চাপের মুখে সংস্কারপন্থীদের লংগদু থানা শাখার সভাপতি অনঙ্গ লাল চাকমা ঘটনাটি স্বীকার করেন। এরপর সন্ধ্যা ৬:০০ টার দিকে স্থানীয় মুরুব্বি ও অভিভাবকগণের নিকট অপহৃত রিপন চাকমা ও মিন্টু চাকমাকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানা যায়।
উল্লেখ্য যে, প্রত্যেকের নিকট থেকে মুক্তিপণ আদায় ও শর্তারোপ করে অপহৃতদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। তবে, মুক্তিপণ বাবদ কে কত টাকা দিয়েছে সে বিষয়ে তাদেও উপর আরোপিত শর্ত ভঙ্গের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে রাজি নয় বলে জানা যায়।