হিল ভয়েস, ৩ জুলাই ২০২০, বান্দরবান: বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ১১ বিজিবি ব্যাটালিয়ন অধীন দোছড়ি ইউনিয়নের পাইনছড়ি ভিওপি ক্যাম্পের নায়েকসুবেদার আলমগীর কর্তৃক বেআইনীভাবে জুম্মদের ৮ একর জায়গা ভূমি দখলের পাঁয়তারা করা হচ্ছে বলে অভিযো পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে তদন্তপূর্বক উক্ত জায়গার উপর বেআইনীভাবে বিকল্প পাইনছড়ি বিজিবি ক্যাম্প স্থাপনের প্রস্তাব এবং প্রক্রিয়া বাতিলের জন্য দ্রুত ও যথাযথ ব্যাবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন জানিয়ে গত ০১ জুলাই ২০২০ বুধবার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তরগু মৌজার হেডম্যান মংপু মারমা ও দোছড়ি মৌজার হেডম্যান শৈ এ নু মারমাসহ পাইনছড়ি উকাজাই হেডম্যান পাড়ার কয়েকজন গ্রামবাসী পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পার্বত্য মন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাবরে দরখাস্ত দিয়েছেন।
জানা যায় যে, দোছড়ি মৌজার হোল্ডিং নং-২৪,খতিয়ার নং-২৯, দাগ নং ১৪৬৮ ও ১৪৭৩ তফসীলে বর্ণিত ২য় ও ৩য় শ্রেণীর ৮.০ (আট) একর জায়গাটি যথাক্রমে ক্যক্রাই হেডম্যান, ক্যনু মারমা, মংনু মারমা, মেহ্লানু মারমা ও সুইয়েনু মারমা প্রমুখ বৌখ্যান মারমার ৫ ছেলের নামে বন্দোবস্তকৃত।
উক্ত দরখাস্তে বলা হয় যে, জমির মালিকরা সেগুন, আম, লেবু, তেঁতুল, কলা, পেঁপে ও অন্যান্য ফলজ-বনজ বাগান সৃজন করে ভোগদখল করে আসছে। উল্লেখিত জায়গাটি তাদের পৈতৃক ভিটা এবং উক্ত জায়গার উপর তাদের এক ভাইয়ের ঘর-বাড়িও রয়েছে। উক্ত জায়গা তাদের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন।
গত ১৪ জুন ২০২০ ও ৩০ জুন ২০২০ দুই দফা নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবি ব্যাটালিয়ন অধীনে পাইনছড়ি ভিওপি ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার মো: আলমগীর নাইক্ষংছড়ি জোন অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল আসাদুজ্জামানের বরাত দিয়ে জমির মালিকদেরকে উক্ত ক্যাম্পে ডেকে বললেন যে, উক্ত জায়গার উপর বিকল্প বিজিবি ক্যাম্প প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। বিজিবি ক্যাম্প স্থাপনের জন্য উক্ত জায়গা যখন চাওয়া হবে তখন দিতে হবে বলে সাদা কাগজে একটি অঙ্গীকার লিখে দিতে হবে।
উক্ত জমির মালিকরা স্বাক্ষর/টিপসহি দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে এটা জোন অধিনায়কের নির্দেশ বলে ক্যাম্পের নায়েক সুবেদারকে হুমকি দেন। উক্ত ক্যাম্পের সুবেদার জমি মালকিদের কাছ থেকে বেআইনীভাবে বিভিন্ন কায়দা কানুন করে জোরপূর্বক সাদা কাগজে স্বাক্ষর বা টিপসহি নিতে বারবার চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে।
জমি মালিকরা জানান, ইতিমধ্যে উক্ত জায়গা থেকে এক কিমি দূরত্বের মধ্যে পাইনছড়ি ভিওপি ক্যাম্প রয়েছে। তাদের অগোচরে তাদের জায়গায় উপর বিজিবি কর্তৃপক্ষ বিকল্প ক্যাম্প স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছে। জোর করে স্বাক্ষর নেয়াসহ উক্ত ক্যাম্পের বিজিবি কর্তৃক মিথ্যা, বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা ও বিভিন্নভাবে হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার আশঙ্কা করছেন জমির মালিকরা।
এমতাবস্থায় সরেজমিনে তদন্তপূর্বক যথাযথ ও দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে উক্ত জায়গার উপর বেআইনীভাবে বিকল্প পাইনছড়ি বিজিবি ক্যাম্প স্থাপনের প্রস্তাব এবং প্রক্রিয়া বাতিলের জন্য উপরেল্লেখিত কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করে গ্রামবাসীরা।
যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জমি মালিকরা বোমাং সার্কেল চীফ, বান্দরবান জেলার ডেপুটি কমিশনার, পুলিশ সুপার ও নাক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরেও অনুলিপি প্রদান করেন।