হিল ভয়েস, ১২ জুলাই ২০২০, নওগাঁ: নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুরে এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিরীহ সাঁওতাল আদিবাসীর জমি বসতভিটা জবর দখলের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল ১১ জুলাই ২০২০ শনিবার দুপুরে ভুক্তভোগী লক্ষীরাম সাঁওতাল নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন।
ভুক্তভোগী লক্ষীরাম সাঁওতাল উপজেলার কুমরইল গ্রামের সামু সাঁওতাল ওরফে সামুর ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে লক্ষীরাম সাঁওতাল অভিযোগ করে বলেন, উপজেলার কুমরইল কানুপাড়া মৌজায় আমার নানার ১৮ বিঘা জমি পাবো বলে তিলিহারী গ্রামের ইয়াকুব আলী সরকারের ছেলে ডিবি পুলিশ কর্মকর্তা মাসুদ রানা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছিলেন। ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আপনি আপনার নানার ১৮ বিঘা জমির ভাগ পাবেন, কিন্তু সেইসব জমি অন্যের দখলে। জমিগুলো আমার কাছে বিক্রি করেন। জমি নিতে যা কিছু করা লাগে আমি করবো।
লিখিত অভিযোগে লক্ষীরাম আরও জানান, ২০১৮ সালে টাকার লোভ দেখিয়ে মাসুদ রানা উপজেলার কুমরইল গ্রামের কানুপাড়া মৌজায় আমার নানা মাঝি সাঁওতাল নামীয় ১৮ বিঘা জমি স্থানীয় দালাল ও ভূমি দস্যুদের মাধ্যমে ১৮ লক্ষ টাকায় ক্রয় করার জাল দলিল তৈরি করেন। কিন্তু বাস্তবে মাত্র ৩ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তিনি উক্ত জমি রেজিষ্ট্রি করে নেয়।
এরপর জমির দলিল করার সময় ভুল হয়েছে বলে জমির ভুল সংশোধনের জন্য আমাকে ভুল বুঝিয়ে একাধিকবার নিয়ামতপুর সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসে নিয়ে গিয়ে ভুয়া কাগজপত্রে আমার বসতভিটার সাড়ে ৪ বিঘা জমিসহ অন্যসব জমি পুনরায় লিখে নেয়।
লক্ষীরাম সাঁওতাল আরও বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। কিন্তু বর্তমানে আমার বসতভিটার জমি ক্রয় করে পারমিশন নিয়ে নিয়েছেন দাবি করে আমাকে উচ্ছেদের জন্য প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছেন।
ওই পুলিশ কর্মকর্তা আদিবাসীর জমি নিজের দাবি করে দখলীয় জমিতে ভাড়াটিয়া লোকদের দিয়ে ধান রোপন করেন। এতে বাধাঁ দিতে গেলে পুলিশ কর্মকর্তার পক্ষে এসে নিয়ামতপুর থানা পুলিশ দখলীয় জমিতে যেতে নিষেধ করে যান বলেও জানিয়েছেন লক্ষীরাম।
একই সংবাদ সম্মেলনে পৈতৃক সম্পত্তি হারিয়ে নিঃস্ব ওই আদিবাসী বলেন, ‘আমার নানার জমির পরিবর্তে প্রতারণা করে আমার বসতভিটা লিখে নেওয়ায় আমি এখন নিরুপায়। আমি পৈতৃক সম্পত্তি ফেরৎসহ ওই প্রতারক পুলিশ কর্মকর্তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে ডিবি পুলিশ কর্মকর্তা মাসুদ রানার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
সূত্র: জনজাতিরকণ্ঠ.কম