হিল ভয়েস, ১৬ জুলাই ২০২০, ঢাকা: ঢাকা জেলার দোহার থানাধীন তপন কর্মকার (৪৫) নামে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা এবং নিহত ব্যবসায়ীর বড় ভাই কৃষ্ণ কর্মকারের স্ত্রীকেও তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত ১৪ জুলাই ২০২০ মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টার দিকে দোহার উপজেলার পূর্ব লটাখোলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে বুধবার (১৫ জুলাই) সকালে বাড়ির পাশের একটি ডোবা থেকে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে এলাকাবাসী।
সন্তোষ কুমার মাহাতোর ফেসবুক ওয়াল থেকে জানা যায় যে, নিহত তপন কর্মকার উপজেলার পূর্ব লটাখোলা গ্রামের মৃত গোপাল কর্মকারের ছেলে। লটাখোলা এলাকায় তার একটি স্বর্ণের দোকান রয়েছে।
তপনের বড় ভাই কৃষ্ণ কর্মকার বলেন, মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টার দিকে আমি বাড়িতে খাবার খাচ্ছিলাম। আমার স্ত্রীও আমার সঙ্গে ছিল। অন্যরা যার যার ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন। এমন সময় মুখোশ ও রেইনকোট পরিহিত কয়েকজন দুর্বৃত্ত বাড়ির সামনের প্রধান ফটক খুলে ভিতরে প্রবেশ করে। তাদের হাতে রাম’দা ছিল।
তিনি আরো বলেন, আমাদের চিৎকারের শব্দ পেয়ে আমার ছোট ভাই তপন কর্মকার ঘর থেকে বেরিয়ে এলে তাকে এলোপাতাড়ি কোপাতে শুরু করে দুর্বৃত্তরা। দুর্বৃত্তদের কোপে আমার ভাইয়ের পেটের বিভিন্ন অংশ বেরিয়ে আসে এবং হাতের একটি আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে দুর্বৃত্তরা আমার স্ত্রীকে মুখে চেপে জোর করে তুলে নিয়ে যায়।
দুর্বৃত্তরা চলে যাবার পর কান্না-চিৎকারের শব্দ পেয়ে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসেন। তারা গুরুতর আহত তপনকে উদ্ধার করে দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকায় প্রেরণ করেন।
১৫ জুলাই বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার রাতে ঘটনারপরপরই দোহার থানা পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এদিকে বুধবার সকালে ঘটনাস্থল পূর্ব লটাখোলা এলাকারই ঝোপের একটি ডোবায় হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় ওই গৃহবধূকে পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে দেন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ওই গৃহবধূ অনেকটা সুস্থ রয়েছেন বলে জানা গেছে।
বুধবার দুপুরে ঘটনাস্থলে আসেন দোহার সার্কেলের এএসপি জহিরুল ইসলাম, দোহার থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সাজ্জাদ হোসেন, ওসি (তদন্ত) আরাফাত হোসেন সহ পুলিশের কর্মকর্তারা।
দোহার সার্কেলের এএসপি জহিরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে- পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন বিষয় আমলে নিয়ে তদন্ত করা হয়েছে। অচিরেই এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে আমরা আসামিদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হব। একই সঙ্গে এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
১৬ জুলাই বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের পক্ষ থেকে এই বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে দুষ্কৃতিকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানানো হয়।