হিল ভয়েস, ২২ জুন ২০২০, ঢাকা: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের জন্য বিভিন্ন মহল থেকে সম্প্রতি জোরালো দাবি উঠেছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ২৩টি ক্রিয়াশীল সংগঠন এ আইন বাতিল এবং এ আইনে আটককৃতদের মুক্তি চেয়ে গত ২১ জুন ২০২০ রবিবার একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে।
উক্ত বিবৃতিতে সংহতি জানানো অন্যান্য ২২টি সংগঠনের সাথে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ও সংহতি প্রকাশ করে। এদিকে আজ সোমবার (২২ জুন) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে একই দাবিতে আরেকটি মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
উক্ত মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রুমেন চাকমা। সংহতি বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যাদেরকে আটক করা হয়েছে তাদের অতি দ্রুত মুক্তি দিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নামে বাক স্বাধীনতা হরণ করা খুবই নিন্দনীয় এবং ঘৃণ্যতম একটি ব্যাপার। বাক স্বাধীনতা মানুষের জন্মগত অধিকার। এখান থেকে বঞ্চিত করা রাষ্ট্রের কোনো অধিকার নেই।
এ আইনে আটকৃতদের মুক্তি দিয়ে এবং অবিলম্বে এ আইন বাতিল করে জনগণের বাক স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের কাছেও আহ্বান জানান পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের এ ছাত্র নেতা।
উক্ত মানববন্ধনের অন্যতম উদ্যোক্তা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাইদুল ইসলাম উক্ত মানববন্ধনে বলেন, ‘সারা বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের নিয়ে ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক’ নামে একটা নেটওয়ার্ক আছে।
তিনি বলেন, “মূলত তাদের আয়োজনে আজ যে যেখান থেকে পারে, সেখান থেকে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। তাই আমিও দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ মিনারের সামনে অংশ নিয়েছি।“
“আমাদের কথা, ভাষা, শব্দ এগুলো সমস্তকিছু মানুষ জন্মগতভাবে পেয়ে থাকে। এগুলোর ওপর কোনভাবে সেন্সরশিপ আরোপ করা ঠিক না” উল্লেখ করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেরও বাতিল চান এই শিক্ষক।
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশেও একই দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক মানববন্ধনের আয়োজন করেছে। একই দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
এ বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নিপন ত্রিপুরা বলেন, মানুষের বাক স্বাধীনতা হরণের এ আইন অবিলম্বে বাতিল চাই। “নিজেদের মনের কথাগুলো বলতে না পারার দুঃখ আমরা পাহাড়ের মানুষ বুঝি” বলেন তিনি।
“আইনের নামে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় মতামত দেওয়ার অধিকার হরণ করাটাও এক ধরনের অন্যায়। আমরাও তাই এ আইনের দ্রুত বাতিল চাই” উল্লেখ করে এ আইনে আটককৃতদের মুক্তি দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে তিনি উদাত্ত আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রায় অর্ধশত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে, যা সংবিধানে স্বীকৃত মুক্তচিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করেছে।