হিল ভয়েস, ১৫ মে ২০২০, বান্দরবান: বান্দরবান জেলার লামা বন বিভাগের আওতাধীন বমু রিজার্ভ হতে রাতের আঁধারে মাতৃবৃক্ষ গর্জন ও তেলশুর গাছ পাচার কালে জব্দ করা হয়েছে।
৭০ বছরের উর্দ্ধে এইসব দুর্লভ মাতৃবৃক্ষ প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে সড়কপথে ও মাতামুহুরী নদী পথে নিয়ে যাচ্ছে বমু বিলছড়ি ইউনিয়নের কয়েকটি সিন্ডিকেট ও বমু বিলছড়ি ইউনিয়নের সরকারি দলের কিছু লোকজন।
আজ ১৫ মে ২০২০ শুক্রবার রাত ২টা ৩০ মিনিটে বমু রিজার্ভ এর কুলাইক্ষাঝিরি হতে চুরি করে গাছ কেটে পাচারকালে গর্জন ও তেলশুর কাঠ ভর্তি ২টি জীপসহ ১ জন গাড়ির শ্রমিককে আটক করেছে বন বিভাগ ও সেনাবাহিনী।
বন বিভাগের অনুরোধে গাছ জব্দের অভিযানে অংশ নেয় লামা সাব জোনের একটি সেনা টিম। জব্দকৃত জীপের লাইসেন্স নাম্বার লট নং- ৩৮ ও লট নং- ২২০।
লামা বন বিভাগের সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. নুরে আলম হাফিজ বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ একটি কাঠ চোর সিন্ডিকেট বমু রিজার্ভ হতে মূল্যবান কাঠ পাচার করে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেনাবাহিনী সাথে নিয়ে ও বন বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ মো. নুরে আলম হাফিজের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়।
রাতের অভিযানে ২টি জীপ ভর্তি কাঠ জব্দ করা হয়। তারমধ্যে ৩টি মাতৃবৃক্ষ গর্জন ও ২টি তেলশুর গাছ রয়েছে। আনুমানিক দুইশত ঘনফুট কাঠ জব্দ করা হয়েছে।
এসময় মো. সুমন নামে একজন গাড়ির শ্রমিক আটক করা হয়েছে। কর্তনকৃত মাদার ট্রি গর্জন ও তেলশুর গাছ গুলোর বয়স ৪৫ বছরের উপরে এবং গাছগুলো ৫/৬ ফুট বেড়ের গাছ।
বন বিভাগের উদ্ভিদ গবেষণা কেন্দ্র এই মাদার ট্রি হতে বীজ সংগ্রহ করত। এই বিষয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে পিওআর মামলার প্রস্তুতি চলছে।
মো. নুরে আলম হাফিজ আরো বলেন, গত ১৪ এপ্রিল ও ২০ এপ্রিল পৃথক দুইটি অভিযানে ৭০ বছরের বেশী বয়সী আরো ২টি মাতৃবৃক্ষ গর্জন পাচারকালে আটক করে পিওআর মামলা করা হয়। পিওআর মামলা নং- ২১, তারিখ- ১৪ এপ্রিল ২০২০ইং এবং পিওআর মামলা নং- ২২, তারিখ- ২০ এপ্রিল ২০২০ইং।
এই দুই মামলায় ১১ জনকে আসামী করা হয়েছে। এই দুইটি অভিযানে ১২৩ ঘনফুট মূল্যবান গর্জন কাঠ জব্দ করা হয়েছে। বমু রিজার্ভের এই মাতৃবৃক্ষগুলো বন বিভাগের বৃক্ষ গবেষণায় কাজে লাগে ও এই জাতীয় দ্রুত বর্ধনশীল গর্জন ও তেলশুর কাঠ এখন দুর্লভ।
লামা বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস এম কায়ছার জানান, রাতেই সংবাদ পেয়ে সেনাবাহিনীর সহায়তা নিয়ে কাঠগুলো গাড়িসহ জব্দ করি। নিয়মিত মামলার প্রস্তুতি চলছে।