হিল ভয়েস, ২০ এপ্রিল ২০২০, রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটি জেলার সদর উপজেলার জীবতলী ও মগবান ইউনিয়নে চলছে সেনাবাহিনীর নিয়মিত তল্লাসী ও টহলদারি। এলাকার জুম্ম গ্রামবাসীরা এদিকে করোনা ভাইরাসের ভয়ে এলাকাবাসী আতঙ্কিত, অন্যদিকে সেনাবাহিনীর অপারেশনে সেনা নির্যাতনের ভয়ে দিনাতিপাত বাধ্য হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত ১৮ এপ্রিল ২০২০ তারিখে রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই জেটিঘাটস্থ ২৩ ইবি-এর আইস ল্যান্ড আর্মি ক্যাম্পেহাজির হতে খবর দেয়া হলে জীবতলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুদত্ত চাকমা (৬১), পীং মৃত জিতেন্দ্র লালকার্বারী এবং মগবান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চাকমা (৫৮), পীং মৃত দয়া মোহন চাকমা ক্যাম্পে যান।
তদনুসারে তারা ক্যাম্পে গেলে সেনাবাহিনী প্রথমে এলাকার অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এরপর নিম্নলিখিত ব্যক্তিদেরকে ক্যাম্পে হাজির করার জন্য নির্দেশ দেয়-
১. জনসংহতি সমিতির জীবতলী ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি সুনীল চাকমা (৫৫), পীং মৃত নলিনী মোহন চাকমা, ধুল্যাছড়ি;
২. উমেশ চন্দ্র চাকমা (৪৮), ধুল্যাছড়ি, জীবতলী ইউনিয়ন;
৩. জনসংহতি সমিতির মগবান ইউনিয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুনীল চাকমা (৪৪), পীং দয়ালাল চাকমা, গদা পাড়া;
৪. জনসংহতি সমিতির মগবান ইউনিয়ন কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সম্ভু চাকমা (৫৭), পীং বান্দারাম চাকমা নভাঙা;
৫. জনসংহতি সমিতির মগবান ইউনিয়ন কমিটির সহ সভাপতি স্বপন দত্ত চাকমা (৬২), পীং সুরেশ্বর চাকমা, যৌথখামার।
উল্লেখিত ব্যক্তিদরকে ক্যাম্পে হাজির হওয়ার বারবার তাগিদ দিয়ে আসছে সেনাবাহিনীরা। সেনা নির্যাতন ও মিথ্যা মামলায় জড়িত করার ভয়ে বর্তমানে তারা হাজিরা না দিয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য যে, সম্ভু চাকমার বাড়ি আজ সকাল ১১টায় ঘেরাও করেছে সেনাবাহিনী। তিনি বাড়িতে ছিলেন না।তাকে না পেয়ে বাড়ির লোকদের নানা জিজ্ঞাসাবাদ করার পর আবার ক্যাম্পে ফিরে যায়। বর্তমানে জীবতলী ইউনিয়ন ও মগবান ইউনিয়নের অবস্থা খুবই নাজুক। এদিকে করোনা ভাইরাসের ভয়ে এলাকাবাসী আতঙ্কিত, অন্যদিকে সেনাবাহিনীর অপারেশনে সেনা নির্যাতনের ভয়। এমনিতর অবস্থায় সাধারণ জনগণ কষ্টের মধ্যে জীবন কাটাচ্ছেন।
অপরদিকে ১৯ এপ্রিল ২০২০ রাত ৩টায়, রাঙ্গামাটি জেলার নান্যাচর উপজেলার নান্যাচর সেনা জোনের একদল সেনা উপজেলার খুল্যাং পাড়ার শান্দিয়া চাকমার ছেলে অনল চাকমার বাড়ি ঘেরাও করে। এসময় বাড়ির সবাইকে সেনা সদস্যরা বেঁধে ফেলে বলে জানা যায়। একপর্যায়ে অনল চাকমা পালিয়ে যেতে চাইলে সেনা সদস্যরা ধাওয়া করে আটক করে।
২০ এপ্রিল ২০২০ করোনাভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যেও সেনাবাহিনী ও সেনা-সমর্থিত সংস্কারপন্থী সশস্ত্র সদস্যরা যৌথভাবে বাঘাইছড়ি উপজেলার বালুখালী, মগবান, ঝগড়াবিল, এ ব্লক ও বি ব্লক গ্রামে টহল দেয়। সেসময় সেনাবাহিনীর ছত্রছায়ায় ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় সংস্কারপন্থীরা এলাকার জুম্ম গ্রামবাসীদের কাছ থেকে সকল মোবাইল ফোন জব্দ করে নিয়ে গেছে বলে জানা গেছে। এতে বর্তমানে এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।