হিল ভয়েস, ৫ এপ্রিল ২০২০, রাঙ্গামাটি: আজ ৫ এপ্রিল ২০২০ সকাল আনুমানিক ১১.০০টার দিকে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলাধীন বরকল উপজেলার সুবলং ইউনিয়নস্থ সুবলং সেনাক্যাম্পের একদল সেনা সদস্য শান্তিজীবন চাকমা ওরফে অজিত/কালাইয়া (৪৫), পীং-চিত্তোমা চাকমা নামের এক নিরীহ গ্রামবাসীকে আটক করেছে।
আটককৃত শান্তিজীবন চাকমা সুবলং ইউনিয়নের বাঘাছোলা মৌজার শিলছড়ি গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় একজন কৃষিজীবী ও গাছ ব্যবসায়ী।
জানা গেছে, শান্তিজীবন চাকমা সাধারণত বরকল উপজেলা সদরে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। আজ (৫ মার্চ) সকালে তিনি তার গ্রামের বাড়ি শিলছড়িতে নিজের ধানের জমি দেখতে যান। আর সেখান থেকেই সুবেদার ফারুক ও সুবেদার আলমগীরের নেতৃত্বে সুবলং সেনাক্যাম্পের টহলরত একদল সেনাসদস্য শান্তিজীবন চাকমাকে তুলে নিয়ে যায়।
এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সেনাবাহিনী আটককৃত শান্তিজীবন চাকমাকে ছেড়ে দেয়নি এবং সুবলং সেনাক্যাম্পে আটক করে রেখেছে বলে জানা যায়।
শান্তিজীবন চাকমা পার্বত্য চুক্তির আলোকে স্বাভাবিক জীবন ফিরে আসা জনসংহতি সমিতির একজন প্রত্যাগত সদস্য। তিনি বর্তমানে কোন রাজনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত নয় বলে জানা গেছে। তার বিরুদ্ধে থানায়ও কোন মামলা নেই বলে ভিকটিমের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
বিজিবি কর্তৃক বরকলে যুব সমিতির সভাপতিকে খোঁজ
আজ ৫ মার্চ ২০২০ রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলাধীন বরকল উপজেলার বরকল সদর ৪৫ বিজিবি ক্যাম্পের জোন কম্যান্ডার পার্শ্ববর্তী জগন্নাথছড়া বিজিবি ক্যাম্পে গেলে সেখানে বিভিন্ন জনের নিকট পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির আইমাছড়া ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি লক্ষ্মীরাজ চাকমা (৩০)-কে খোঁজ করেন বলে জানা যায়।
ইতিপূর্বেও বিজিবি একাধিকবার বাড়ি তল্লাশি ও খোঁজ করে লক্ষ্মীরাজ চাকমা ও তার পরিবারের লোকজনকে হয়রানি করে চলেছে বলে জানা যায়।
উল্লেখ্য যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নস্যাৎ করা এবং চুক্তি পরিপন্থী ও জুম্ম স্বার্থ-বিরোধী নীলনক্সা নির্বিঘ্নে বাস্তবায়ন করার হীনলক্ষ্যে ক্ষমতাসীন বিশেষ গোষ্ঠীর যোগসাজশে সরকার, আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনী জনসংহতি সমিতি সদস্য ও অধিকার কর্মীদেরকে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও দুষ্কৃতিকারী হিসেবে পরিচিহ্নিত করার একের পর এক ষড়যন্ত্র অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছে।
তারই অংশ হিসেবে গত ১৩ মার্চ সুবলং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তরুণ জ্যোতি চাকমা (পরায়ণ) হাই কোর্টের জামিনে রাঙ্গামাটি জেল থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনী কর্তৃক জেল গেইট থেকে আবার গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর তাকে সুবলঙে কোকো চাকমার হত্যা মামলায় ষড়যন্ত্রমূলকভাবে গ্রেফতার দেখানো হয়। এর আগে ৬ নভেম্বর ২০১৯ রাঙ্গামাটি শহর থেকে তরুণ জ্যোতিকে সুবলঙে গ্রেনেড হামলায় অভিযোগে সেনাবাহিনী কর্তৃক গ্রেফতার করা হয়েছিল।