বাচ্চু চাকমা
সুমন চাকমা গত ২৬ মার্চ তার ফেইসবুক স্ট্যটাসে আশংকা প্রকাশ করে লিখেছিলেন, “আমার করোণা হয়নি অথচ পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে করোণার জন্যই আমাকে মারা যেতে হবে”। তার আশংকাই যেন সত্যি হয়ে গেল! যাইহোক, কেউই দ্বিতীয় শ্রেণীর মানুষ হতে চায় না। ছোট ছোট ভাবনা, ছোট ছোট স্বপ্ন আর ছোট ছোট কাজের সমষ্টিই জীবন। প্রতিটি চিন্তা, প্রতিটি স্বপ্ন প্রভাবিত করে জীবনকে। অনেক আশা ও স্বপ্নকে বুকে নিয়ে সুমন চাকমা একদিন ভর্তি হয়েছিলেন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট বিভাগে। তার মা-বাবার স্বপ্ন হোক কিংবা নিজেরই স্বপ্ন হোক, সেই স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে একদিন পৌঁছে গেলেন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি উচ্চতর শিক্ষার জন্য বিদেশে গিয়ে অধ্যয়ন করারও স্বপ্ন ছিল। ছাত্র হিসেবে সুমন খুব ভাল ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নতুন জায়গায় নতুন মানুষ, অচেনা জগৎ নিশ্চয়ই কিছুটা হলেও ভয়, দ্বিধা, সংকোচ কাজ করছিল তার মনে। যখনই সহপাঠী, বড় ভাই আর শিক্ষকদের সাথে মিশে গিয়েছিলেন তখন হয়তো আসতে আসতে সব সংকোচ কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর জীবন এক বছর যেতে না যেতেই মরণব্যাধি ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হলেন। বাবা মায়ের হয়তোবা স্বপ্ন ছিলো ছেলে একদিন উচ্চ শিক্ষা শেষ করে নিজের জীবন গড়ে তুলবেন। বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির নাগরিক হবেন। বিসিএস কেডার হয়ে দেশের জন্য সেবা করবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ভাল শিক্ষক হবেন অথবা এর চেয়ে আরও মহান কাজে যুক্ত হবেন। সেই স্বপ্নের মাঝে হারিয়ে গিয়ে বাস্তবে পূরণ করার জন্যই তো পারি জমিয়েছিলেন রাজধানী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। তিনি ২০১৬ সালে ভর্তি যুদ্ধে স্থান করে নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ অর্জন করা মানেই লাইফ গ্যারান্টি পাওয়া মনে করা হয়। সেই লাইফ গ্যারান্টি তার জীবনে শুইলো না। হয়তো স্বপ্ন ছিলো পশ্চাৎপদ পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্যই কিছু করবে। রাষ্ট্রের চিকিৎসা অব্যবস্থাপনার কারণে তার স্বপ্নগুলো মাঝ পথে হারিয়ে গেল। তার স্বপ্নেরা কোনদিনই আর উঁকি দেবে না, জীবিত হবে না তার স্বপ্নগুলো, বন্ধুদের সাথে জমবে না আর কোন আদ্দার আসর, আসবে না আর কোনদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে, জগন্নাথ হলে কিংবা প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুমে। হায়রে রাষ্ট্র এভাবেই আর কত শিক্ষার্থীর জীবন ধ্বংস করবে? বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার মধ্যে অনিয়ম-দুর্নীতি ঢুকেছে শতভাগ, যার কারণে ডাক্তারেরা মানবসেবাকে জলাঞ্জলি দিয়ে চলেছে। যার শিকার হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আদিবাসী জুম্ম শিক্ষার্থী সুমন চাকমা।
আজ কেবল একটি সংবাদ বিশ্ব জুড়ে করোণা মহামারীর কারণে তৈরি এক ভয়ংকর সংকট। ইউরোপ, আমেরিকা ও এশিয়া প্রায় ২০০ অধিক দেশে এখন করোণা মহামারীর আগ্রাসী থাবায় পৃথিবী জুড়ে এক তালমাতাল অবস্থা বিরাজ করছে। সেই করোণা প্রকোপের দরুনই আজ বিশ্বের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার মতোই একটা বাস্তবতা তৈরি হতে চলেছে। কিন্তু আমরা সবাই জানি করোণা ভাইরাসের ভ্যাকচিন বা ঔষধ এখনো কোথাও আবিষ্কার হয়নি। এমতাবস্থায় সকলকে নিয়ম মেনে সর্তকতা অবলম্বন করতে বলা হচ্ছে। তাই বলে এই নয় আমরা ভয়ে কোন কিছুই করবো না। খবর পেয়েছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন জুম্ম শিক্ষার্থী সুমন চাকমা চিকিৎসার অভাবে মারা গেলেন। শুনে মনটা খুবই খারাপ হয়ে গেল! দুঃখজনক হলেও সত্য যে, তিনি ছিলেন ফুসফুসের ক্যান্সার রোগী। তিনি দীর্ঘ তিন বছর ধরে এই রোগের চিকিৎসা করেছিলেন। আমি যতটুকু খবর নিয়ে জানতে পেরেছি তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট বিভাগের একজন ছাত্র(২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষ)। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্মান তৃতীয় বর্ষ অধ্যয়ন করার সময় হতে তার রোগের চিকিৎসা চলছিল। তার উন্নত চিকিৎসার জন্যে বিভিন্ন জায়গা হতে মানবিক সাহায্য চেয়ে অর্থ উত্তোলন করেছিলেন তার শুভাকাঙ্ক্ষী ও বন্ধুমোহল সবাই। মানবিক সাহায্য ও মিলেছিল ব্যাপকহারে। দীর্ঘ ১৮ মাসব্যাপী ভারতে চিকিৎসা করানোর পর সুস্থ হয়ে দেশে ফিরেছিলেন। তার পড়ালেখা চালিয়ে নিয়ে যেতে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করেন। কিন্তু গত ১৫ মার্চ আবার অসুস্থ হলে চিকিৎসার জন্য তার বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে এবং জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। ফুসফুসের ক্যান্সার রোগী হওয়াতে কোন প্রকার পরীক্ষা নীরিক্ষা ছাড়াই কোভিড-১৯ রোগী সন্দেহ করে তাকে কোন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়নি। সর্বশেষ কোন উপায় না দেখে গত ১৮ মার্চ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা করার জন্যে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে ৬ এপ্রিল সকাল আনুমানিক সাড়ে ৮ ঘটিকার সময় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
সুমন চাকমা খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার দাত কুপ্যা এলাকার আগলাশিং পাড়ার সুপেন চাকমার একমাত্র ছেলে। উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মেধাবী জুম্ম শিক্ষার্থী এভাবে মারা যাওয়া দেশের জন্য চরম লজ্জাজনক। আজ বাংলাদেশ নাকি উন্নয়নের মহা বন্যায় ভেসে যাচ্ছে। ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশে পরিনত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। অথচ স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসা ব্যবস্থা দিকে তাকালে এই ধরনের বেহাল অবস্থায় চোখে পড়ে। যেই দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী সুমন চাকমা চিকিৎসার অভাবে মারা যায়, এই পরিস্থিতি ও বাস্তবতাকে মূল্যায়ন করে অনুমান করবেন দেশ এক ভয়ংকর সংকটের সম্মুখীন। দেশের সর্বোচ্চ চিকিৎসার পীঠস্থান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যখন উপযুক্ত চিকিৎসা মেলে না, যখন পরীক্ষা ছাড়াই একজন ফুসফুসের রোগী প্রেসক্রিপশন দিয়ে বলে করোণা ভাইরাস তাহলে বুঝবেন এদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার মেরুদণ্ড ভেঙে গেছে। মানুষের পাঁচটি মৌলিক অধিকার প্রত্যেক নাগরিককে নিশ্চয়তা দিতে হয়। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা এই পাঁচটি মৌলিক অধিকার যেকোন নাগরিকের পাওয়ার অধিকার আছে। রাষ্ট্র কি সেই মৌলিক অধিকারগুলো পূরণে সক্ষম হয়েছে? আমি নির্দ্বিধায় বলবো সক্ষম না, হয়নি, হতে পারেনি। বাংলাদেশের রাজধানীতে একজন মেধাবী ছাত্রের যখন চিকিৎসা মেলেনা তাহলে গ্রামাঞ্চলে চিকিৎসা ব্যবস্থা কি ধরণের হবে? ভাবতেও গা চির চিরিয়ে ওঠে। সেকারণেই আজ বান্দরবান থানচি, খাগড়াছড়ি পানছড়ি ও বাঘাইছড়ি সাজেকে হাম প্রাদুর্ভাবে শিশুদের মৃত্যুর সম্মুখীন হতে হচ্ছে। চিকিৎসার অভাবে দেশের দূর্গম এলাকার শিশু মারা যাচ্ছে অথচ সরকার ঘোষণা করছে মধ্যম আয়ের দেশ, উন্নত দেশ, উন্নয়নের মহা সমারোহ আরও কত কি ফেরেস্তা। তাইতো প্রশ্ন করি হায়রে রাষ্ট্র তুমি কার?
যেই রাষ্ট্র ব্যবস্থা একজন ছাত্রকে প্রাপ্য নাগরিক সুবিধা দিতে পারেনা, সেই রাষ্ট্র বিশ্বের কাছে কিভাবে আমাদের মুখ উজ্জ্বল করবে। আজ শুধুই সুমন নয়, তার মতো আরও হাজারো মেধাবী সুমন এভাবে চিকিৎসা না পেয়ে মারা যাবে। ভাবতে খুবই কষ্ট হয়! আজ গোটা বিশ্ব ব্যবস্থা অস্থিতিশীল ও ভয়ংকর সংকটের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে চলেছে। ইউরোপ আর আমেরিকায় মৃত্যুর মিছিল দিন দিন বেড়েই চলেছে। জীবন বিনাশী করোণা ভাইরাসের কারণে আজ গোটা দুনিয়া তালমাতাল। অনেক বড় বড় রাষ্ট্রগুলো আজ করোণা মহামারীর ফলে সঠিক দিশা হারিয়ে ফেলছে। তারপরও জীবন বিনাশী করোণাকে পরাজিত করার জন্যে যোগ্যতম নেতৃত্বেরই প্রয়োজন। এই সময়ে ডাক্তার, নার্স ও প্যারামেডিকেল কর্মীরাই দেশের সবচেয়ে অগ্রগামী বাহিনী। তাদের নিরন্তর সংগ্রামের ফলে দেশের কোটি কোটি মানুষ এই মহামারী করোণা থেকে রেহাই পাবে। সেই ডাক্তার, নার্সরা যদি একজন ফুসফুসের ক্যান্সার রোগীকে করোণা রোগী হিসেবে সনাক্ত করে ফুসফুস রোগের চিকিৎসা না দেয় তাহলে শুধুমাত্র একজন মেধাবী জুম্ম শিক্ষার্থী সুমন চাকমা মারা যাবেনা, মনে রাখবেন আরও শত-হাজারো একঝাঁক ফুটন্ত ফুল অকালে ঝরে যাবে। তাই আসুন কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হই।
উল্লেখ্য যে, একজন ফুসফুসের রোগী কোন হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে মারা গেলেন। সর্বশেষ করোণা রোগী নয় প্রমান করতে সুমন চাকমাকে ল্যাবএইড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। করোণা রোগী মনে করে কোন পরীক্ষা নীরিক্ষা ছাড়াই কিছু ঔষধ দিয়ে বিদায় করে দিলেন। এভাবে চলতে চলতে গত ১৪ মার্চ এক ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। ডাক্তার পরামর্শ দিলেন সিটিস্ক্যান করে রির্পোটসহ উন্নত বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে। রিপোর্ট দেখানোর পর ডাক্তার পরামর্শ দিলেন জরুরী ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল অথবা জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে। তারপর দৌড়াদৌড়ি শুরু করলেন, এক হাসপাতাল হতে আরেক হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছেন, চিকিৎসা পাওয়ার জন্য বেচারা অনেক ঘুরাঘুরি ও হা-হুতাশ করেছেন, রাজধানীর বড় বড় হাসপাতালগুলোতে দর টু দর গিয়ে হাজির হয়েছেন, মনে হয় যেন ছায়াছবির কাহিনী। ছায়াছবির কাহিনীতে গরীব মানুষকে চিকিৎসা না দিয়ে এক হাসপাতাল হতে আরেক হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়, তারপরও কোনখানেই উপযুক্ত চিকিৎসা মেলেনা। সর্বশেষ ছায়াছবির কাহিনীতে দেখানো হয় যে, চিকিৎসা না পেয়ে রোগীটি মারা গেছেন। আজ পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ অসহায়। অভাব অনটনে কোন রকমেই তাদের সংসার চলে। ছোটকাল থেকে টেনেটুনে, মা-বাবার রক্ত ও শ্রমের বিনিময়ে অর্জিত অর্থেই ছেলে মেয়েদের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করাইতে সক্ষম হন। সেই ছাত্রটি এক পর্যায়ে দেশের সম্পদ হিসেবে রুপান্তরিত হয়। একইসাথে আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্মদের জন্য বয়ে আনেন অনাগত দিনের সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ। সেই উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়া একজন মেধাবী শিক্ষার্থী জীবন এভাবে অকালে ঝরে পড়বে এটা আমরা কল্পনাও করিনা। রাষ্ট্রের অব্যবস্থাপনা ও সর্বোপরি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ব্যর্থতার কারণে আজ এভাবে কত মেধাবী শিক্ষার্থীর জীবন বলিদান দিতে হচ্ছে তার কোন হিসাব নেই! কত কাঠখড় পুড়িয়ে একটি পরিবার তার সন্তানকে বড় করে তোলেন, সেই মহামূল্যবান জীবন আজ বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র কেড়ে নিয়েছে ভাবতে খুবই কষ্ট লাগে!
আর কত মানুষের জীবন এভাবে কেড়ে নিলে রাষ্ট্র জনগণের রাষ্ট্র হবে! আজ শুধুই সুমন চাকমা নয়, জ্বর ও অন্যান্য রোগীকে করোণা রোগী সন্দেহ করে হাসপাতালে ভর্তি না করিয়ে মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছেন। রাষ্ট্রের এই অনিয়মের মাশুল একদিন হারে হারে গুনতে হবে। তাহলে বাংলাদেশের অসুস্থ হলে এখন মৃত্যু ছাড়া কোন উপায় নেই। কোন নাগরিকের নিরাপদ জীবন এই সরকার দিতে পারেনি এর চেয়ে ব্যর্থতা আর কি হতে পারে। বাংলাদেশের ডাক্তাররা কেন এমন আচরণ করেন? রোগীদের পরীক্ষা করা হয় না, পরীক্ষা ছাড়াই রোগ নির্ণয় করে ফেলেন, রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি করান না, এমনই ভরি ভরি অভিযোগ আছে ডাক্তার ও হাসপাতালের বিরুদ্ধে। চিকিৎসার অভাবে রোগীকে মেরে ফেলেছেন তাহলে কি ডাক্তারের কোন সেবামূলক মনোভাব নেই? করোণা মহামারীর ফলে নিশ্চিত অন্ধকারের মাঝেও ডাক্তারদের নিরন্তর আলোর পথে যেতে হবে এটা তাদের জানা দরকার। যারা এই করোণা সংকটে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত দেশের গরীব মানুষ তাদেরকে নিরাশা থেকে আশার পথে নিয়ে যেতে ডাক্তাররাই একমাত্র প্রমাণ করে দেখাতে পারেন। এই অন্ধকারময় করোণার সংকটকে পরাজিত করার জন্য বাংলাদেশের ডাক্তাররা তাদের আলোর তেজকে চারিদিকে ছড়িয়ে দিতে পারেন। করোণার অসুখে মানুষ মারা গেলেও অন্যান্য রোগেই চিকিৎসার অভাবে যাতে কোন মানুষই মারা না যান সেটা ডাক্তারদের খেয়াল রাখতে হবে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী মানবসেবার মানসিকতা নিয়ে ডাক্তারদের কাজ করা উচিত। এই লড়াইয়ে ডাক্তারেরাই শুধুই ঘরে নয়, ঘরের বাইরে থেকে করোণা ভাইরাসের মোকাবেলা করে চলেছেন। ডাক্তাররাই তো বর্তমান সময়ে দেশের ফ্রন্ট লাইনের যোদ্ধা। বাংলাদেশের ডাক্তাররাই করোণাকে পরাজিত করবেন, বাংলাদেশের জনগণ তাদের থেকে প্রেরণা গ্রহণ করবেন। কিন্তু চিকিৎসা দিতে ডাক্তারেরা কেন কার্পণ্য দেখাবেন? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন জুম্ম শিক্ষার্থীকে চিকিৎসার অভাবে কেন মারা যেতে হবে? এই দায় কার? এই প্রশ্ন রেখে গেলাম রাষ্ট্রের কাছে। পরিশেষে সুমন চাকমার পরিবারের প্রতি সমবেদনা ও সহমর্মিতা প্রকাশ করছি।