হিল ভয়েস, ১৩ এপ্রিল ২০২০, রাঙ্গামাটি: বাঘাইছড়িতে চাঁদাবাজির সময় বিজিবি ও পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতারকৃত ছাত্রলীগ ক্যাডারকেই নির্লজ্জভাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (পিসিজেএসএস) সাথে জড়িত করে অপপ্রচার চালাচ্ছে প্রশাসন, সরকারী দল আওয়ামীলীগ ও অনলাইন মিডিয়ার একটি কায়েমী স্বার্থবাদী মহল।
গত ১১ এপ্রিল ২০২০ রাত আনুমানিক ১০:০০ টার দিকে স্থানীয় বিজিবি ও পুলিশের একটি দল বাঘাইছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ২য় তলা থেকে চাঁদাবাজি করার সময় গ্রেফতার করে বাঘাইছড়ি ছাত্রলীগের ক্যাডার মো: ফারুক হোসেন (৩০), পীং-মো: ফিরোজ মিয়া নামের এক বাঙালি যুবককে। এর পরপরই প্রশাসন, বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়া ও আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে নানাভাবে উক্ত গ্রেফতারকৃত যুবক পিসিজেএসএস (সন্তু) দলের হয়ে চাঁদাবাজি করছে বলে অপ্রপ্রচার শুরু করে।
অথচ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মো: ফারুক হোসেন সরকারী দল আওয়ামীলীগেরই সক্রিয় ক্যাডার এবং তার রয়েছে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সাথে যোগাযোগ ও ঘনিষ্টতা। এমনকি বর্তমান এমপি ও রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি দীপঙ্কর তালুকদারের সাথেও রয়েছে তার ঘনিষ্ট যোগাযোগ।
গত ১২ এপ্রিল ২০২০, সিএইচটিটাইমস২৪.কম নামে এক অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে এ বিষয়ে ‘বাঘাইছড়িতে জেএসএস’র হয়ে চাঁদা চাইতে গিয়ে বাঙালি যুবক আটক!’ শিরোনামে এক সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। অপরদিকে, একই দিনে ‘আলোকিত রাঙামাটি’ নামে আরেক অনলাইন সংবাদ মাধ্যমেও ‘বাঘাইছড়িতে জেএসএস(সন্তুর) হয়ে চাঁদা চাইতে গিয়ে বাঙ্গালী যুবক আটক’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। উল্লেখ্য যে, উভয় অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে হুবহু একই ভাষা ও বাক্য ব্যবহার করে সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে। যাতে প্রমাণিত হয় যে, একটি বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়েই একটি বিশেষ মহল কর্তৃক এই সংবাদ প্রস্তুত ও প্রচার করা হয়েছে।
সিএইচটিটাইমস২৪.কম ও আলোকিত রাঙামাটি-এ প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে যে, “বাঘাইছড়িতে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ফারুক হোসেন (৩০) নামে এক যুবক আটক হয়েছে। সে বাঘাইছড়ি পৌরসভার মধ্যম পাড়া এলাকার ফিরোজ মিয়ার ছেলে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্রেফতারকৃত ফারুক হোসেন বাঘাইছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের প্রাক্তন সহ-সভাপতি। বেশ কয়েক মাস আগে ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ কর্তৃক তাকে সেই পদ থেকে বহিস্কার করা হয়। কিন্তু এরপরও সে দীর্ঘদিন ধরে বাঘাইছড়ি এলাকায় চাঁদাবাজি করে আসছে এবং আওয়ামীলীগের বিভিন্ন নেতার সাথে তার যোগাযোগ রক্ষা করে আসছে। সম্প্রতি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান শাহ আমানত ট্রেডিং এর মালিক মহিউদ্দিন শাহ ও তার ম্যানেজার মো: আলতাফ আলী ছাত্রলীগের ক্যাডার ফারুক হোসেনের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে বিজিবি ও পুলিশের নিকট খবর দিলে, বিজিবি ও পুলিশের একটি দল তাকে গ্রেফতার করে।
জনসংহতি সমিতির তথ্য ও প্রচার বিভাগের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা উক্ত অনলাইন গণমাধ্যম, প্রশাসন ও আওয়ামীলীগ-ছাত্রলীগ কর্তৃক ঐ ফারুক হোসেনের সাথে পিসিজেএসএসকে জড়িত করে অপপ্রচার করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।
কায়েমী স্বার্থবাদী মহলটি নিজেদের অপকর্ম আড়াল করার উদ্দেশ্যে, অপরদিকে পিসিজেএসএস’র নেতৃত্বকে ধ্বংস করা এবং পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই এই ধরনের মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও সম্পূর্ণ বানোয়াট সংবাদ প্রচার করছে বলে উল্লেখ করেছে জনসংহতি সমিতি।