হিল ভয়েস, ৫ এপ্রিল ২০২০, পার্বত্য চট্টগ্রাম: রাঙ্গামাটির সাজেক, বান্দরবানের লামা ও রুমা এবং খাগড়াছড়ির মেরুং ইউনিয়নের পর এবার বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার সদর ইউনিয়নে চার মারমা শিশু এবং খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার লোগাং ইউনিয়ন, উল্টাছড়ি ইউনিয়ন ও লতিবান ইউনিয়নে ১১ জন শিশুর হামে আক্রান্ত হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে যে, ১ এপ্রিল দুপুরে বান্দরবানের থানচি ইউনিয়নের তংক্ষ্যং পাড়া ও হেডম্যান পাড়ার তিনজন শিশু হামে আক্রান্ত হলে তাদের অভিভাবকরা থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসে ভর্তি করান।
হামে আক্রান্ত তিন শিশু হলো- থানচি সদর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের তংক্ষ্যং পাড়া নিবাসী ছোমং মারমার ২ বছরের ছেলে উমং প্রু মারমা, ৫নং ওয়ার্ডের উসামং হেডম্যান পাড়া বাসিন্দা থোয়াইসিংমং মারমার ছেলে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ৯ বছরের উম্যাসাইন মারমা এবং সুনাইমং মারমার দেড় বছরের ছেলে।
জানা যায়, তংক্ষ্যং পাড়ার ছোমং মারমার ছেলের জ্বর, সর্দি ও শরীরে ফোটা ফোটা দেখা দেয়। দেখতে দেখতে জ্বালাপোড়া বেশি হলে বুধবার নিজ গ্রাম থেকে ৪ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে এসে থানচি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
উসামং হেডম্যান পাড়ার হামে আক্রান্ত শিশুর মা মেয়ংসিং মারমা জানান, তার মেয়ের শরীরে ফোটা ফোটা উঠলে হাসপাতালের হটলাইন নাম্বারে ফোন করেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে এ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়ে দেয় এবং শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসে।
বর্তমানে হাসপাতালে তিন শিশুর চিকিৎসা চলছে। তিনজন শিশু সকলেই সুস্থ আছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
হাসপাতাল সূত্রে আরো জানা যায় যে, কিছু দিন আগে উসামং হেডম্যান পাড়া হতে এক শিশু হামে আক্রান্ত হয় এবং শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। হামের চিকিৎসা শেষে আবার পাতলা পায়খানা ও জ্বরে আক্রান্ত হয় ঐ শিশু। তবে সুস্থ হলে পরে অবিভাবকরা শিশুটিকে বাড়ি নিয়ে যায়।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে চলমান লকডাউনের ফলে যান চলাচল বন্ধ থাকায় হামে আক্রান্ত হওয়ার খবরে থানচি এলাকায় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে বলে জানা গেছে।
অপরদিকে খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার ১নং লোগাং ইউনিয়নের রামতনু পাড়া, খেদারাছড়া এবং দীনবন্ধু পাড়া, ৫নং উল্টাছড়ি ইউনিয়নের রহিন্দ্র পাড়া ও মরাটিলা এবং ৪নং লতিবান ইউনিয়নের গঙ্গারাম পাড়া ইত্যাদি ৬ গ্রামে ১১ জন শিশু হামে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
গত ৪ এপ্রিল ২০২০ পানছড়ির এসব এলাকায় করোনাভাইরাস বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি ও খাদ্যদ্রব্য সহায়তা দিতে গিয়ে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা হামে আক্রান্ত শিশুদের প্রত্যক্ষ করেছেন বলে জানা গেছে।
সূত্র: প্রথম আলো