হিল ভয়েস, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২০, সাজেক, বাঘাইছড়ি: রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলাধীন সাজেক ইউনিয়নের ব্রিজপাড়া সংলগ্ন শিজক ছড়ার উপর সেনাবাহিনী কর্তৃক একটি বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। বিগত ২-৩ মাসের মধ্যে সেনাবাহিনীর সদস্যরা বেশ কয়েকবার জায়গাটি পরিদর্শন করেছেন এবং প্রকৌশলী দিয়ে বাঁধের পরিমাপও নিয়েছেন বলে জানা যায়। এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর, পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, সেনাবাহিনীর চট্টগ্রাম বিভাগের জিওসি এবং রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি ব্রিগেড কম্যান্ডারসহ অনেকেই প্রস্তাবিত জায়গাটি পরিদর্শনে এসেছিলেন বলে জানা গেছে। তবে এবিষয়ে এলাকার জনগণের সম্মতি নেয়া হয়নি এবং জনগণকে অবহিত করা হয়নি। এদিকে সম্ভাব্য উক্ত বাঁধ নির্মাণ নিয়ে এলাকার জুম্ম জনগণের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে নানা দুশ্চিন্তা ও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা। সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসীর হিসাব অনুযায়ী, এই বাঁধ নির্মাণ করা হলে এতে অন্তত ১০৫ আদিবাসী জুম্ম পরিবারের ২৫৩ একর ভূমি ক্ষতির শিকার হবে। তাদের অনেক জায়গা বাঁধের পানিতে ডুবে যাবে।
সংশ্লিষ্ট একটি সুত্রে জানা গেছে, মূলত সাজেকের পর্যটনের সৌন্দর্য্য ও সুবিধা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যেই সেনাবাহিনী এই বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। তাদের ধারণা, এই বাঁধ নির্মাণ করা হলে বাঁধের পানি পর্যটন স্থাপনার কাছাকাছি যাবে এবং বাঁধের পানি থেকে পর্যটন রিসোর্টগুলোতে পানি সরবরাহ করা সহজতর হবে।
ইহা বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, তিন পার্বত্য জেলায় পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের নামে শত শত একর জায়গা-জমি অধিগ্রহণ ও জবরদখল করা হচ্ছে। সেনাবাহিনী কর্তৃক বাঘাইছড়ির সাজেকের রুইলুইয়ে স্থাপিত পর্যটন কেন্দ্রের ফলে ৫টি পরিবার উচ্ছেদ ও ৬৫ পরিবার উচ্ছেদের মুখে হয়েছে; বম অধিবাসীদেরকে তাদের চিরায়ত বাস্তুভিটা থেকে উচ্ছেদ করে রুমায় অনিন্দ্য পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে; ডলা ¤্রাে পাড়া (জীবন নগর), কাপ্রু পাড়া (নীলগিরি), চিম্বুক ষোল মাইল, ওয়াই জাংশন (বার মাইল) এবং কেওক্রডং পাহাড়ের প্রায় ৬০০ একর জায়গা দখল করে পর্যটন স্থাপন করা হয়েছে।