হিল ভয়েস, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, বান্দরবান: গত ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ বান্দরবানে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের সভা কোরাম সংকটের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৯ সদস্যের মধ্যে কেবল ভূমি কমিশনের চেয়ারম্যান আনোয়ার-উল হক, বোমাং সার্কেল চীফ রাজা উচা প্রু চৌধুরী, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কমিশনার মোহাম্মদ সাহাব উদ্দীন সভায় যোগদান করেন। সেই কারণে কমিশনের আনুষ্ঠানিক সভা অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখ অনুষ্ঠিত বিগত সভার কার্যবিবরণী, অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু ব্যক্তিদের তালিকা ইত্যাদি’র উপর অনানুষ্ঠানিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এ টি এম কাউসার, চাকমা সার্কেল চীফের প্রতিনিধি জুয়াম লিয়ান বম এবং মুভমেন্ট ফর প্রটেকশন অব ফরেস্ট এন্ড ল্যান্ড ইন সিএইচটি’র জেলা সভাপতিও সভায় উপস্থিত ছিলেন।
অনানুষ্ঠানিক সভা অনুষ্ঠানের পূর্বে, কমিশনের চেয়ারম্যান কর্তৃক বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে ভূমি কমিশনের দুই কক্ষ বিশিষ্ট নতুন শাখা অফিস উদ্বোধন করা হয়।
একই দিন ঘোষণা অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ এর ব্যানারে বাঙালি মুসলিম সেটেলাররা বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ ফটকের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। উল্লেখ্য যে, গত ২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ বান্দরবানে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে সেটেলাররা ৩ ফেব্রুয়ারি ধর্মঘটের আহ্বান করে এবং ভূমি কমিশন চেয়ারম্যান-সদস্যদের অবরোধ করার ঘোষণা করে। সেই অনুযায়ী, গত ৩ ফেব্রুয়ারি সেটেলাররা প্রায় আধা ঘন্টা যাবৎ ভূমি কমিশন চেয়ারম্যান ও সদস্যদের অবরোধ করে রাখে। অবরোধের সময় তারা ভূমি কমিশন চেয়ারম্যান-সদস্য, ভূমি কমিশন আইন ও বিধিমালার বিরুদ্ধে শ্লোগান তুলে, অপরদিকে উস্কানিমূলক ও হুমকিমূলক বক্তব্য প্রদান করে।
এরপর, আহ্বায়ক আলকাছ আল মামুন ভুঁইয়া, সদস্য কাজী মুজিবুর রাহমান ও খাগড়াছড়ি নাগরিক পরিষদের সদস্য সালমা আহমেদের নেতৃত্বে পার্বত্য নাগরিক পরিষদের নেতৃবৃন্দ ভূমি কমিশনের চেয়ারম্যানের নিকট একটি স্মারকলিপি পেশ করে। সেটেলারদের দাবির মধ্যে রয়েছে, বর্তমান ভূমি কমিশন বাতিল করা, ভূমি কমিশন আইনের সংশোধন, ভূমি কমিশনে বাঙালি সম্প্রদায়ের সমান সদস্য নিয়োগ ইত্যাদি।
উল্লেখ্য যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা বান্দরবানে নিরাপত্তাহীনতার কারণে বান্দরবানের পরিবর্তে রাঙ্গামাটিতে সভা অনুষ্ঠিত করার জন্য কমিশনের চেয়ারম্যানকে অনুরোধ জানান। কিন্তু কমিশন চেয়ারম্যান এই অনুরোধে মনোযোগ দেননি। ফলে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ও চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় সভায় অনুপস্থিত থাকেন।