হিল ভয়েস, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, সোমবার, বান্দরবান: আরাকান লিবারেশন পার্টি (এএলপি)- এর প্রায় ১৫ জনের একটি সশস্ত্র গ্রুপ বান্দরবান ও রাঙ্গামাটি জেলায় নিজেদেরকে মগ পার্টি হিসেবে পরিচয় দিয়ে (মারমা(মগ) সম্প্রদায়ের সহানুভুতি পেতে) বান্দরবান সদর উপজেলার কুহালং ইউনিয়নের বালাঘাটা-মিনঝিরি পাড়ার তঞ্চঙ্গ্যা গ্রামবাসীদের উপর নৃশংসতা চালায়।
জানা গেছে, এএলপি’র দুস্কৃতিকারীরা গত ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ মিনঝিরি তঞ্চঙ্গ্যা গ্রামবাসীদের উপর এক ঘন্টা যাবৎ নৃশংসতা চালায়। ঐ সময় এএলপি দুস্কৃতিকারীরা মিনঝিরি তঞ্চঙ্গ্যা পাড়ার বিত্তসেন তঞ্চঙ্গ্যা ও শুদ্ধমনি তঞ্চঙ্গ্যাকে রশি দিয়ে বেঁধে অমানবিকভাবে নির্যাতন চালায়। তবে সেনাবাহিনী ও পুলিশের উপস্থিতি টের পাওয়ার পরপরই এএলপি সদস্যরা দ্রুত মিনঝিরি মারমা পাড়ার দিকে সরে যায়।
অভিযোগ রয়েছে যে, সেনাবাহিনী ও পুলিশ এক ঘন্টা যাবৎ মিনঝিরি তঞ্চঙ্গ্যা পাড়ায় অবস্থান করে এবং ঐ সময় তারা এএলপি সদস্যদের লোক দেখানো অনুসন্ধান চালায়। সেনাবাহিনী ও পুলিশ গ্রামটি ছেড়ে যাওয়ার পরপরই এএলপি সশস্ত্র গ্রুপটি আবার মিনঝিরি তঞ্চঙ্গ্যা পাড়ায় ছুটে আসে। এরপর এএলপি দুস্কৃতিকারীরা সেনাবাহিনী ও পুলিশকে তাদের উপস্থিতির ব্যাপারে তথ্য প্রদানের জন্য গ্রামবাসীকে অভিযোগ করে এবং কারা সেনাবাহিনী ও পুলিশকে খবর দিয়েছে সেই ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হলে গ্রামবাসীদের হত্যা করার হুমকি দিতে শুরু করে। তারা শুদ্ধ মনি তঞ্চঙ্গ্যাকে খোঁজ করে যিনি এএলপি গ্রুপটি গ্রাম ছেড়ে যাওয়ার সময় কোনমতে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। এএলপি সন্ত্রাসীরা শুদ্ধ মনি তঞ্চঙ্গ্যাকে তাদের হাতে তুলে দিতে ব্যর্থ হলে তঞ্চঙ্গ্যা গ্রামবাসীদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের হুমকি প্রদান করে। অভিযোগ রয়েছে যে, এএলপি গ্রুপটি তঞ্চঙ্গ্যা গ্রামবাসীদের তাদের গ্রাম থেকে উচ্ছেদের হীন উদ্দেশ্য নিয়ে মিনঝিরি তঞ্চঙ্গ্যা পাড়ায় বারবার হামলা চালিয়ে আসছে। এছাড়া জানা গেছে যে, গত ২৯ সেপ্টেম্বর এএলপি সন্ত্রাসীরা কুহালং ইউনিয়নের বালাঘাটা এলাকার নিকটবর্তী থোয়াইংগ্য মারমা পাড়ার এক গ্রামবাসীকে নির্যাতন চালায়।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতৃত্ব ও নিরাপত্তা বাহিনীর সহযোগিতায় এএলপি সশস্ত্র গ্রুপটি মিনঝিরি পাড়ার নিকটবর্তী এলাকাসমূহে অব্যাহতভাবে অবস্থান করছে। জীবনের নিরাপত্তাহীনতা ও আরও হয়রানির আশংকার কারণে গ্রামসমূহের অধিকাংশ মানুষ তাদের নিজেদের এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে।