হিল ভয়েস, ১৫ মে ২০১৯, বুধবার, ঢাকা: ঢাকায় বাংলাদেশ সচিবালয়ের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মধ্যে গত ১৫ মে ২০১৯ এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা এবং অন্যান্য সদস্যরা হলেন পরিষদের সদস্য গৌতম কুমার চাকমা, কে এস মং মারমা ও নুরুল আলম। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈ সিং এমপি’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মোঃ মেসবাহুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব রমা রাণী রায় ও সুদত্ত চাকমা।
সভা শুরু হয় সকাল ১১:০০ টায়। সভায় নিম্নোক্ত বিষয়সমূহ আলোচনা করা হয়:
১. পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের বিধিমালা প্রণয়ন।
২. পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে দায়েরকৃত বা বিচারাধীন মামলার নিষ্পত্তি।
৩. মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ থেকে একটি সার্কুলেশন প্রদানের উদ্যোগ নেয়া, এই মর্মে যে, কার্যবিধিমালা ১৯৯৬, সচিবালয় আদেশ ২০১৪ এবং অন্যান্য আইন, বিধিমালা, আদেশ, সার্কুলেশন, নীতিমালা ইত্যাদি পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রযোজ্য হবে সেগুলি যে পরিমাণে পার্বত্য চট্টগ্রামে তিন পার্বত্য জেলার বিদ্যমান আইন ও প্রবিধানের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।
৪. পার্বত্য জেলা পরিষদ আইনসমূহ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আইনের আওতায় বিধিমালা প্রণয়ন ও প্রকাশের জন্য বিধান এর যথাযথ কার্যকরকরণ।
৫. আইন অনুযায়ী সকল সংশ্লিষ্ট দপ্তর, জনবল, পুলিশ (স্থানীয়) এর আর্থিক বিষয়াবলী এবং পার্বত্য জেলার আইন ও শৃঙ্খলা পার্বত্য জেলা পরিষদসমূহ, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নিকট হস্তান্তর।
৬. নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে পার্বত্য জেলা পরিষদসমূহ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের নিকট দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানসমূহসহ সকল সংশ্লিষ্ট কর্ম ও বিষয় হস্তান্তর।
৭. বিদ্যমান আইন অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রামের পার্বত্য জেলাসমূহের সকল উন্নয়ন কর্মকান্ডে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদসমূহের যথাযথ সম্পৃক্ততা।
৮. মন্ত্রী পরিষদ কর্তৃক সার্কুলেশন প্রদান, এই মর্মে যে, কার্যের বন্টন অনুসারে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ভূমি ও ভূমি ব্যবস্থাপনা এবং স্থানীয় কমিটি ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সহ পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন পার্বত্য জেলার সকল বিষয়সমূহ সমন্বয় সাধন করবে।
জানা গেছে, সভায় উপরোক্ত বিষয়ে ইতিবাচক ও আন্তরিকভাবে আলোচনা করা হয় এবং এ বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। তবে, আশঙ্কার বিষয় হল, প্রত্যেক সভায় ভালো আলোচনা ও সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, কিন্তু প্রত্যেক সভার সিদ্ধান্তসমূহ প্রায় ক্ষেত্রে অবাস্তবায়িত থেকে যায়। পার্বত্য জেলা পরিষদসমূহ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের নিকট সকল বিষয়/কর্মসমূহের হস্তান্তর, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি কমিশনের বিধিমালা প্রণয়ন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন মামলার নিষ্পত্তি, পার্বত্য জেলা পরিষদসমূহ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সম্পৃক্ততা বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটি, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন, টাস্ক ফোর্স ইত্যাদির বিভিন্ন সভায় আলোচনা করা হয় এবং বাস্তবায়নের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, এরপর সবসময়ই সকল সিদ্ধান্ত অবাস্তবায়িত থেকে যায়।